উমরান মালিক। —ফাইল চিত্র।
এ বারের আইপিএলে গতির ঝড় তুলেছেন জম্মু ও কাশ্মীর থেকে উঠে আসা সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদের বোলার উমরান মালিক। রবিবার পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে চার উইকেট নিয়ে ম্যাচের নায়ক তিনি। আইপিএলে তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে শেষ ওভারে কোনও রান না দিয়ে উইকেট নেওয়ার নজির গড়েছেন। স্পর্শ করেছেন প্রাক্তন শ্রীলঙ্কা পেসার লাসিথ মালিঙ্গার কীর্তিও।
ম্যাচেরও পরে উমরানের গতি নিয়ে চর্চা অব্যাহত হায়দরাবাদ শিবিরে। ব্যাটার গ্লেন ফিলিপস যেমন বলেছেন, ‘‘উমরানকে সামলানো দুঃস্বপ্ন দেখার মতোই ব্যাপার।’’ ভুবনেশ্বর কুমারের অভিমত, ‘‘উমরানের এই গতিতে বল করে উইকেট পাওয়া দেখে আনন্দ লাগছে।’’
ক্রিকেটবিশ্বও স্তম্ভিত উমরানের গতিতে। প্রাক্তন ক্যারিবিয়ান পেসার ইয়ান বিশপ যেমন ভারতীয় পেসারের মধ্যে দেখতে পাচ্ছেন ইংল্যান্ড পেসার জফ্রা আর্চারের ছায়া। সম্প্রচারকারী চ্যানেলে তিনি বলেছেন, “গত বছর উমরানের গতি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। এ বার ও আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। ডেল স্টেনের সাহচর্যে আরও পরিণত হয়ে উঠলে বিশ্বের যে কোনও ব্যাটার উমরানের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে আতঙ্কে ভুগবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “এ ভাবেই কিন্তু বিশ্বক্রিকেটে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল জফ্রা আর্চার। আমি উমরানের মধ্যে জফ্রার সেই ভয়ঙ্কর রূপটা দেখতে পাচ্ছি।”
যদিও ক্রিকেট বিশ্বে গরিষ্ঠ অংশ উমরানের মধ্যে সব চেয়ে বেশি করে দেখতে পাচ্ছেন ওয়াকার ইউনিসের ছায়া। তাঁর রান-আপ, বোলিং অ্যাকশন, গতি এবং ইনসুইংয়ে উইকেট ভেঙে দেওয়া যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে তরুণ বয়সের পাক পেসারকে। তেমনই দাবি উঠেছে, অবিলম্বে উমরানকে ভারতীয় দলে নেওয়ার। মাইকেল ভন বলেছেন, “সময় নষ্ট না করে এখনই উমরানকে ভারতীয় দলে নেওয়া উচিত। যে কোনও উইকেটে ও গতিতেই শেষ করে দেবে ব্যাটারদের।”উল্লেখ্য, রবিবার পঞ্জাব কিংসের ১৫১ রানে ইনিংস শেষের নেপথ্যে ছিল ভুবনেশ্বর (৩-২২) ও উমরানের (৪-২৮) বোলিং। ফলে জিততে বেগ পেতে হয়নি হায়দরাবাদকে। শেষ ওভারে চার উইকেট নেন উমরান। যা দেখে মুগ্ধ ক্রিকেট বিশ্বের অনেক নামী বিশেষজ্ঞরাও। সতীর্থ ভুবনেশ্বর কুমার বলেছেন, ‘‘ও পরোক্ষে আমাকে সাহায্য করছে। কারণ, বিপক্ষ ব্যাটারেরা আমার বলের গতি ওর চেয়ে কম বলে আক্রমণ করতে গিয়ে উইকেট খুইয়েছে। উমরানকে এই গতিতে বল করে উইকেট পেতে দেখে আনন্দ হচ্ছে। ওকে দেখে এখন সকলে আতঙ্কে ভুগবে।’’
ঘণ্টায় ১৫০ কিমিরও বেশি গতিতে বল করা উমরানকে দেখে আবার ভয় মিশ্রিত সম্ভ্রম প্রকাশ করেছেন ভুবনেশ্বর। জানিয়েছেন, তাঁর বল নেটে খেলার সময়ে রীতিমতো ভয়ে থাকেন। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা-সরঞ্জাম নিয়ে ব্যাট করেন তিনি। চেস্ট গার্ড ছাড়া উমরানকে নেটে খেলার সাহস দেখান না। ভুবনেশ্বরের কথায়, ‘‘ভয়ঙ্কর গতিতে বল করে উমরান। নেটে চেস্ট গার্ড ছাড়া ওর বল খেলার ঝুঁকি নিই না।’’