রাজস্থানের বিরুদ্ধে আউট হয়ে ফিরছেন রবীন্দ্র জাডেজা। ছবি: আইপিএল।
আম্পায়ারেরা মনে করেছেন, ইচ্ছাকৃত ভাবে বল আটকেছেন রবীন্দ্র জাডেজা। সঞ্জু স্যামসনের থ্রো যাতে উইকেটে না লাগে তার জন্য উইকেট আড়াল করেছেন তিনি। তাই আউট দেওয়া হয়েছে তাঁকে। যদিও অন্য কথা ভাবছেন চেন্নাইয়ের ব্যাটিং কোচ মাইকেল হাসি। এই ঘটনায় জাডেজার পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। ক্রিকেটের নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাসি।
ম্যাচ শেষে সাংবাদিক বৈঠকে হাসিকে জাডেজার আউট হওয়ার ধরন নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, “ও পিছনে ঘুরছিল। তাই হয়তো ওর দৌড়নোর পথ বদলে গিয়েছিল। ও সোজা দৌড়তে দৌড়়তে কিন্তু পথ বদলায়নি।” তার পরেই ক্রিকেটের নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন করেছেন হাসি। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার বলেন, “এই ঘটনার দুটো দিক আছে। আমি বুঝতে পারছি কেন আম্পায়ারেরা আউট দিয়েছেন। ক্রিকেটের নিয়ম বলছে, দৌড়নোর সময় পথ বদলে ফেললে যদি উইকেট আড়াল হয়, তা হলে আউট দেওয়া যায়। আম্পায়ারেরা সেটাই করেছেন। কিন্তু ওঁরা বিষয়টা অন্য ভাবে দেখলেও পারতেন। জাডেজা কিন্তু সোজা দৌড়তে গিয়ে উইকেট আড়াল করেনি। ঘুরতে গিয়ে হয়েছিল।”
ঠিক কী হয়েছিল ম্যাচে?
রবিবার রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ের ইনিংসে ১৫তম ওভারে বল করছিলেন আবেশ খান। জাডেজা সেই ওভারের পঞ্চম বলটি থার্ড ম্যানের দিকে ঠেলে দেন। সেই বলে দু’টি রান নেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন জাডেজা। কিন্তু দ্বিতীয় রান নেওয়ার সময় জাডেজা দেখেন বল উইকেটরক্ষক সঞ্জু স্যামসনের হাতে। দ্রুত ক্রিজ়ে ফেরার চেষ্টা করেন জাডেজা। কিন্তু ফেরার সময় ইচ্ছাকৃত ভাবে বোলারের দিকের উইকেট আড়াল করেন তিনি। সেই দিকের উইকেটই লক্ষ্য ছিল সঞ্জুর। জাডেজা শুধু উইকেট ঢেকেই দেননি, দু’হাত দু’পাশে তুলে দেন। এর ফলেই অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ডের কারণে আউট হন জাডেজা।
মাঠের আম্পায়ারের কাছে আবেদন করেছিলেন সঞ্জু। জাডেজা ইচ্ছাকৃত ভাবে উইকেট আড়াল করে দৌড়চ্ছিলেন বলে অভিযোগ ছিল রাজস্থান অধিনায়কের। তৃতীয় আম্পায়ার দেখেন, জাডেজা জানতেন বল কোন দিকে ছোড়া হবে। সেটা দেখেই জাডেজা উইকেটের মাঝের দিকে দৌড় শুরু করেন। পরে হাতও ছড়িয়ে দেন। তৃতীয় আম্পায়ারের মতে জাডেজা ইচ্ছাকৃত ভাবে উইকেট আড়াল করেছিলেন, যাতে সঞ্জু উইকেটে বল ছুড়তে না পারেন। সেই কারণেই ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’-এর মাধ্যমে জাডেজাকে আউটের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন আম্পায়ার। সেই বিষয়েই মুখ খুলেছেন হাসি।
আইসিসির নিয়ম কী বলছে?
যখন কোনও ব্যাটার ইচ্ছাকৃত ভাবে ফিল্ডারের ছোড়া বল উইকেটের দিকে যাওয়া থেকে আটকান, তখন তাকে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ বলা হয়। বিভিন্ন ভাবে বল উইকেটের দিকে যাওয়া থেকে আটকানো যায়। ফিল্ডারকে শারীরিক ভাবে আটকানো যেতে পারে। আবার বলের দিক পরিবর্তন করা যেতে পারে। জাডেজার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে।
আইপিএলের পয়েন্ট তালিকা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
এমসিসি-র ৩৭.১ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনও ব্যাটার ইচ্ছাকৃত ভাবে ফিল্ডারকে আটকায় বা বল উইকেটের দিকে যাওয়া থেকে আটকায় তা হলে তাঁকে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ নিয়মে আউট দেওয়া হবে। যদি বলটি নো বা ওয়াইড হয় তা হলেও এই নিয়মে আউট দেওয়া যেতে পারে। ব্যাটার ইচ্ছাকৃত ভাবে কাজটি করেছে কি না তা ঠিক করার দায়িত্ব আম্পায়ারদের।
আবার এমসিসির ৩৭.৪ ধারায় রয়েছে, যদি বোলারের বা ফিল্ডারের অনুমতি না নিয়ে কোনও ব্যাটার বল ধরে (যত ক্ষণ না আম্পায়ার ডেড বল ঘোষণা করছে) তা হলেও ফিল্ডিং দল চাইলে সেই ব্যাটারকে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ নিয়মে আউট দেওয়া যেতে পারে।