বেকারের ঠিকানা এখন জেল ফাইল ছবি
সেইি ১৯৮৫ সালে উইম্বলডনে ঘাসের কোর্টে ইতিহাস গড়েছিলেন তিনি। ১৭ বছর বয়সে জিতেছিলেন উইম্বলডন। বড় মঞ্চে সেই তাঁর আবির্ভাব। দীর্ঘ ৩৭ বছর পর সেই উইম্বলডনেরই কাছাকাছি রয়েছেন তিনি। তবে ভাগ্যের ফেরে এ বার তাঁর ঠিকানা জেল। ইংল্যান্ডের কুখ্যাত ওয়ান্ডসওয়ার্থ জেলেই এখন বন্দি রয়েছেন বরিস বেকার।
এক সময় অস্কার ওয়াইল্ড বন্দি ছিলেন এই জেলে। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এই জেল ঘুরে দেখে যা জানিয়েছে তা শিউরে ওঠার মতো। বলা হয়েছে, এই জেলের অবস্থা ভগ্নপ্রায়, ইঁদুরে ভর্তি এবং জায়গার তুলনায় অনেক বেশি বন্দিতে ভর্তি। বেকার যে রকম বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন, সেই তুলনায় এই পরিবেশ তাঁর কাছে কার্যত নরকের মতোই।
বেকারের ঠিকানা আপাতত ছ’ফুট বাই ১২ ফুটের একটি ঘর। সেখানে কংক্রিটের মেঝে রয়েছে। শৌচাগার ঘরের সঙ্গে। আলাদা করে কোনও আসন বা চাদর পাচ্ছেন না তিনি। ওয়ান্ডসওয়ার্থে বেশি দিন কোনও বন্দি থাকেন না। তাঁকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়। যে হেতু বেকার হিংসাত্মক কোনও অপরাধ করেননি, তাই তাঁকে অন্য কারাগারে পাঠানো হতে পারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এই জেলে মূলত ড্রাগজনিত এবং মানসিক সমস্যা থাকা অপরাধীরাই থাকেন। হিংসার পরিমাণ মারাত্মক। ২০২০-২১ বছরে প্রায় রোজই বন্দিদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
জেলে যাওয়ার পর প্রথমে কিছু ক্ষণ রিসেপশনে অপেক্ষা করেন বেকার। এর পর তাঁকে নগ্ন করিয়ে তল্লাশি নেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, তাঁকে ই-উইংয়ে রাখা হয়েছে। আপাতত একাই রয়েছেন। পরে অন্য কোনও বন্দির সঙ্গে থাকতে হতে পারে।
কর ফাঁকি দেওয়ার অপরাধে বাফটা-জয়ী পরিচালক ক্রিস অ্যাটকিন্স এক সময় এই জেলে বন্দি ছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা পরে লিখেছিলেন তিনি। অ্যাটকিন্স লেখেন, “প্রথম যে জিনিসটা মনে পড়ে সেটা হল প্রচণ্ড আওয়াজ। কেউ চিৎকার করছে, কেউ দেওয়ালে মারছে, কেউ ফুঁসছে। রিসেপশন দেখে মনে হয় ১৮৯৫ সালে অস্কার ওয়াইল্ড থাকার সময় শেষ বার রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছিল।”
জেলে পড়াশোনার সুবিধা থাকলেও তা এখন বন্ধ। জিমের অবস্থাও তাই। তবে বেকার জেলে আসায় মনে হচ্ছে জিম খোলা হতে পারে। জেলের দায়িত্বে থাকা প্রাক্তন এক কর্তার আশা, বেকারের ইচ্ছে থাকলে তিনি জেলের জিমের প্রশিক্ষক হতে পারেন।