শাহবাজ় আহমেদ। ছবি: বিসিসিআই।
প্রথম একাদশে ছিলেন শাহবাজ় আহমেদ। বাংলার অলরাউন্ডারকে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলানোর পরিকল্পনাও হয়তো ছিল না সানরাইজার্স হায়দরাবাদের। এক প্রকার বাধ্য হয়েই নামাতে হয়েছিল শাহবাজ়কে। সেই অলরাউন্ডারই হায়দরাবাদকে ফাইনালে তুলে দিলেন। ব্যাটে, বলে দাপট দেখিয়ে শাহবাজ়ই ম্যাচের সেরা।
হায়দরাবাদ যদি ব্যাট হাতে বড় রান তুলত, তা হলে হয়তো মায়াঙ্ক মরকণ্ডেকে খেলাত। চিপকের পিচে চার জন পেসার নিয়ে নেমেছিল হায়দরাবাদ। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম কাজে লাগিয়ে স্পিনার মায়াঙ্ককে দলে নিত তারা। কিন্তু ১৪ ওভারের মধ্যে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ায় শাহবাজ়কে নামিয়ে দেওয়া হয়। শাহবাজ় অলরাউন্ডার। বাঁ হাতে স্পিন বোলিংটা যেমন করতে পারেন, তেমনই ব্যাট হাতে দলকে ভরসা দিতে পারেন।
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স জানালেন যে শাহবাজ়কে নামানোর পরিকল্পনা ছিল ড্যানিয়েল ভেত্তোরির। হায়দরাবাদের সেই পরিকল্পনা কাজে লাগল। ১৮ বলে ১৮ রান করেন শাহবাজ়। তিনি একটি দিক আটকে রাখেন। উল্টো দিক থেকে বড় শট খেলেন হেনরিখ ক্লাসেন। পর পর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া হায়দরাবাদের কাছে তাঁদের ৪৩ রানের ইনিংস খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। ক্লাসেনকে মারার সুযোগ করে দিতে থাকেন শাহবাজ়। সিঙ্গলস নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারকে খেলার সুযোগ করে দিচ্ছিলেন তিনি। শাহবাজ়ের এই পরিকল্পনাই হায়দরাবাদকে লড়াই করার মতো রান তুলতে সাহায্য করে।
তবে শাহবাজ় আসল কাজটা করেন বল হাতে। ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে তুলে নেন ৩ উইকেট। যশস্বী জয়সওয়াল, রিয়ান পরাগ এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনের উইকেট নেন শাহবাজ়। অন্য ব্যাটারেরাও তাঁর বলে খুব বেশি রান করতে পারেননি। শাহবাজ় তাঁর প্রথম ওভারেই তুলে নেন যশস্বীকে। সেটাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ১২তম ওভারে পরাগ এবং অশ্বিনের উইকেট তোলেন। এক ওভারে দু’টি উইকেট নিয়ে হায়দরাবাদকে জয়ের সরণিতে নিয়ে আসেন শাহবাজ়। তবে এই ম্যাচ জিতিয়ে উৎসবে মেতে উঠতে রাজি নন তিনি। শাহবাজ় বলেন, “এখনই কোনও উৎসব করব না আমরা। ফাইনাল জিতে উঠে তবেই আনন্দ করব।”
চেন্নাইয়ের পিচ স্পিন সহায়ক। শিশির না পড়ায় বল করতেও অসুবিধা হচ্ছিল না। ফলে শাহবাজ় নিজের খেলাটা খেলতে পারেন। বলের লাইনের হেরফের করে বিপদে ফেলতে শুরু করেন ব্যাটারদের। তাতেই একের পর এক ব্যাটারের উইকেট তাঁর ঝুলিতে।
গত বছর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে ছিলেন শাহবাজ়। এ বারের আইপিএল শুরুর আগে হায়দরাবাদে আসেন তিনি। কিন্তু প্রথম একাদশে সব ম্যাচ সুযোগ পাননি। তাঁকে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবেই ব্যবহার করেছে হায়দরাবাদ। সব ম্যাচে সেই ভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। কিন্তু শুক্রবার দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই জ্বলে উঠলেন শাহবাজ়। বুঝিয়ে দিলেন, সুযোগ পেলে তিনিও ম্যাচ জেতাতে পারেন।