এ বারের আইপিএলে অন্যতম নায়ক রিঙ্কু সিংহ। —ফাইল চিত্র।
আইপিএল মানেই কোনও এক অচেনা ক্রিকেটারের নায়ক হয়ে যাওয়া। তাঁদের মধ্যে যশপ্রীত বুমরা, হার্দিক পাণ্ড্যর মতো ক্রিকেটাররা রয়েছেন, যাঁদের এখন গোটা বিশ্ব চেনে। এ বারের আইপিএলেও এমন বেশ কিছু ক্রিকেটার রয়েছেন, যাঁরা নায়ক। প্রতিযোগিতায় ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলেছেন। আগামী দিনে এঁদের মধ্যে কাউকে ভারতীয় দলেও দেখা যেতে পারে। এমন পাঁচ ক্রিকেটারকে বেছে নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
যশস্বী জয়সওয়াল
এ বারের আইপিএলে তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে সব চেয়ে সফল যশস্বী। উত্তরপ্রদেশের ভাদোহি জেলার সুরিয়া এলাকায় জন্ম তাঁর। বাবা ভূপেন্দ্র রং বিক্রি করতেন। সেখান থেকে দশ বছর বয়সে মুম্বই চলে আসেন যশস্বী। চোখে স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। পেট চালাতে প্রথমে দোকানে কাজ নেন। কিন্তু মাথায় তখন শুধুই ক্রিকেট। প্রতি দিন অনর্গল অনুশীলন। প্র্যাকটিসের পিছনে এতটাই সময় দিতেন যে, দোকানের জন্য আর সময় ছিল না। কাজ চলে যায় কিছু দিনের মধ্যেই। সেই যশস্বী এ বারের আইপিএলে ৬২৫ রান করেছেন। পাঁচটি অর্ধশতরান এবং একটি শতরান করেছেন। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের রিজার্ভ দলে ডাক পেয়েছেন। আগামী দিনে প্রথম একাদশেও দেখা যেতে পারে তাঁকে।
রিঙ্কু সিংহ
বেশ কিছু বছর ধরেই কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে রয়েছেন রিঙ্কু। কিন্তু নিয়মিত সুযোগ পেতেন না। ঘরোয়া ক্রিকেটে উত্তরপ্রদেশের হয়ে নিয়মিত রান করেন রিঙ্কু। কলকাতা দলেও নিজের জায়গা অর্জন করে নেন। টিনের ছাদ থেকে শাহরুখ খানের সঙ্গে নাচ— রিঙ্কুর উত্থান রূপকথার মতো। খুব দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসেন রিঙ্কু। এ বারের আইপিএলে তাঁর পাঁচ ছক্কা মেরে ম্যাচ জেতানো সেরা বিজ্ঞাপন হয়ে রইল। আগামী বেশ কয়েকটি আইপিএলে দেখানো হবে তা। শুধু সেই ম্যাচই নয়, রিঙ্কু ধারাবাহিক ভাবে রান করেছেন। ১৪ ম্যাচে করেছেন ৪৭৪ রান। চারটি অর্ধশতরানও করেছেন।
আকাশ মাধোয়াল
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের এই বোলারকে এ বারের আইপিএলের আগে কেউই চিনতেন না। টেনিস বলে খেলতেন তিনি। সেই আকাশকে এখন সকলেই চিনে গিয়েছেন। চার বছর আগেও খেপ খেলা আকাশ এ বারের আইপিএলে মুম্বই দলে বুমরার অভাব ঢেকে দিয়েছেন। একটি ম্যাচে পাঁচ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নেন আকাশ। আট ম্যাচে ১৪টি উইকেট নেন তিনি। দলকে ফাইনালে তুলতে না পারলেও আগামী দিনে মুম্বই দলের পেস আক্রমণ তৈরি হতে পারে তাঁকে ঘিরেই। এক পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন আকাশ। এখন তাঁর নেশা ক্রিকেটকেই পেশা করে নিয়েছেন।
তুষার দেশপাণ্ডে
চেন্নাই সুপার কিংস দলের পেসার দলকে ফাইনালে তুলেছেন। ২১টি উইকেট নিয়েছেন এ বারের আইপিএলে। সব থেকে বেশি ডট বল করার তালিকায় রয়েছেন তিন নম্বরে। এ বারের আইপিএলের আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে তুষার কিছুটা পরিচিত হলেও সে ভাবে তাঁকে চিনতেন না অনেকেই। মুম্বইয়ের ছেলে তুষার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৯টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি। ৮০টি উইকেটও নিয়েছেন। সেই পেসারের আইপিএলে অভিষেক হয় ২০২০ সালে। কিন্তু এ বারের আগে ধারাবাহিক ভাবে সুযোগ পাননি কখনও। চেন্নাইয়ের হয়ে এ বারের আইপিএলে ১৬টি ম্যাচ খেলা তুষার সফল। আগামী দিনে যদি তিনি রান দেওয়ার ব্যাপারে একটু কৃপণতা দেখাতে পারেন, তাহলে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবেন।
তিলক বর্মা
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মিডল অর্ডারের বড় ভরসা তিলক। রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদবরা কোনও ম্যাচে ব্যর্থ হলেও তিলক বাঁচিয়ে দেন। এ বারের আইপিএলে ধারাবাহিক ভাবে রান পেয়েছেন। ১১টি ম্যাচে ৩৪৩ রান করেছেন। কঠিন ম্যাচ জিতিয়েছেন। হায়দরাবাদের এই ব্যাটারের এটা দ্বিতীয় আইপিএল। প্রথম বার ১৪ ম্যাচে ৩৯৭ রান করেছিলেন, এ বার রান কিছুটা কম করলেও তাঁর প্রভাব আরও বেড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রান করে দলকে জিতিয়েছেন।