(বাঁ দিকে) আইপিএল বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগে বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুর। বৈঠক সেরে বেরিয়ে আসছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। (ডান দিকে) তামিলনাড়ু ক্রিকেট সংস্থার সচিব কাশী বিশ্বনাথন এসে পৌঁছলেন শহরে। বৃহস্পতিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
দুপুরে মাদ্রাজ হাইকোর্টে ধাক্কা।
স্থগিতাদেশ চেয়ে যে আবেদন করেছিল সিএসকে, তা তারা আপাতত পেল না।
রাতে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে ফের ধাক্কা।
কাউন্সিলের ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রস্তাব দিল লোঢা কমিশনের সুপারিশ মেনে সিএসকে এবং রাজস্থান রয়্যালসকে দু’বছরের জন্য নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়ে আপাতত নতুন দু’টো দল নেওয়া হোক। দু’বছর পর দশটা দল নিয়েই আইপিএল করা যাবে। আগামী দু’বছর আইপিএলে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ও তাঁর সিএসকে সতীর্থদের কী হবে, এই প্রশ্নগুলোর উত্তর অবশ্য এ দিনের বৈঠকে পাওয়া গেল না।
এখানেই শেষ নয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর শহরে আসার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আইনি নথির রক্ষাকবচই নাকি জোগাড় করে উঠতে পারলেন না নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। যার জেরে কলকাতা আগমন এক দিন পিছিয়ে দিতে বাধ্য হলেন। ফলে তিনি আদৌ আসবেন কি না, তা নিয়ে বাড়ল জল্পনা।
দিনটা মোটেই ভাল কাটল না শ্রীনির।
বৃহস্পতিবার চেন্নাই থেকে রওনা হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে তিনি নাকি আবিষ্কার করেন, শুক্রবার তাঁর বোর্ড বৈঠকে ঢোকার বৈধতা প্রমাণ করার জন্য যা যা আইনি নথি দরকার, তা সব জোগাড় হয়নি। সে সব জোগাড় করে শুক্রবার সকালের আগে আর আসতে পারছেন না। তা ছাড়া বৈঠকে সিএসকে নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়লে ঠিকঠাক জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে আদালতের কাগজপত্র খুঁটিয়ে পড়ার জন্যও সময় নেন।
এ দিন সন্ধ্যায় অবশ্য পাঠিয়ে দিলেন তাঁর দূত টিএনসিএ সচিব কাশী বিশ্বনাথনকে। সঙ্গে তাঁর আইনজীবী পিএস রামনও। বোর্ডে তাঁকে নিয়ে হাওয়া কেমন, তা বুঝতেই এই দু’জনের আগমন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। শহরে পৌঁছে হোটেলে ঢোকার সময় কাশী বলে গেলেন, ‘‘আশা করি কাল শ্রীনিবাসন আসবেন।’’ আশা কেন? নিশ্চিত নন? জবাবে বললেন, ‘‘না, না, নিশ্চিত নই।’’ আর এক শ্রীনি-ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি অবশ্য গভীর রাতে বললেন, ‘‘এখন পর্যন্ত জানি উনি কাল সকালে এসে পড়বেন।’’
শুক্রবার সকালে শ্রীনির ব্যক্তিগত বিমান তাঁকে নিয়ে দমদম বিমানবন্দরে নেমে পড়ে কি না, এখন সেটাই দেখার। তবে আরও এক ‘বিগ শট’-এর ক্রিকেট প্রশাসনের এই রঙ্গমঞ্চে নামার খবর উড়ে এল এ দিন সন্ধ্যায়। মুম্বই ক্রিকেট সংস্থা সূত্রে জানা গেল শরদ পাওয়ার আসছেন বোর্ডের এই বৈঠকে যোগ দিতে। সঙ্গে নাকি নিয়ে আসছেন মহারাষ্ট্র ক্রিকেট সংস্থার প্রধান অজয় শিরকেকেও। দেশের বাইরে থাকায় তাঁর এই বৈঠকে আসার কথা প্রথমে না থাকলেও শোনা গেল শরদ পাওয়ারের ডাকেই না কি তিনি বিদেশ সফর কাটছাঁট করে শুক্রবার দেশে ফিরে সোজা কলকাতায় চলে আসছেন। এই দু’জনে মিলে শুক্রবার শ্রীনির বোর্ড বৈঠকে যোগ দেওয়া নিয়ে আপত্তি তুলতে পারেন, রাতে এমন সম্ভাবনার কথাও শোনা গেল বৃহস্পতিবার রাতে।
এ দিকে মাদ্রাজ হাইকোর্টে সিএসকে-র আবেদনের শুনানি শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের যে বৈঠক বসে, তাতে তাদের ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রস্তাব দিল, দুই নির্বাসিত ফ্র্যাঞ্চাইজি ও তাদের দলকে বাদ দিয়ে নতুন ভাবে টেন্ডার ডেকে দু’টি নতুন দল এনে আগামী দু’বছর আইপিএল চালানো হোক। দু’বছর পর যখন নির্বাসন কাটিয়ে এই দুই দল ফিরে আসবে, তখন দশ দল নিয়েই আইপিএল করা যাবে। শুক্রবার ওয়ার্কিং কমিটির কাছে এই প্রস্তাবই রাখা হবে। তারা অনুমোদন দিলে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়বে।
তবে দুই দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে কী করা হবে, তা নিয়ে না কি এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়নি। সেই সিদ্ধান্ত নাকি পরে। অর্থাৎ, ধোনি-র আইপিএল ভবিষ্যৎ আপাতত অনিশ্চিত। আগামী বছর কোন দলের জার্সি গায়ে খেলবেন, সেই নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়লেন ভারতীয় ওয়ান ডে অধিনায়ক।