KKR

প্লে-অফ দৌড়ে থাকতে জয়ের রাস্তায় ফিরতেই হবে নাইটদের

সচিন তেন্ডুলকরের মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সামনে শন পোলকের সুইং সামলাতে না পেরে ৬৭ অলআউট দিয়ে দুঃস্বপ্ন শুরু হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৩৮
Share:

মহড়া: নাইটদের অনুশীলনে মগ্ন কার্তিক। শুক্রবার মুম্বইয়ে। টুইটার

আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স যদি কলকাতা নাইট রাইডার্সের এক নম্বর গাঁট হয়, তা হলে গাঁট নম্বর দুই হচ্ছে রোহিত শর্মাদের ঘরের মাঠ। যে শহরে নাইট মালিককে সকলে ‘কিং’ বলে, সেখানেই আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিসংখ্যান তাড়া করছে তাদের। ওয়াংখেড়েতে ৯টি আইপিএল ম্যাচ খেলে এখনও পর্যন্ত মাত্র একটিতে জিতেছে শাহরুখ খানের দল। তা-ও সেই একমাত্র জেতা ম্যাচে মুম্বইকে হারিয়ে উঠে কেকেআর জানতে পারে, শাহরুখ খানকে পাঁচ বছরের জন্য ওয়াংখেড়ে থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে!

Advertisement

সচিন তেন্ডুলকরের মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সামনে শন পোলকের সুইং সামলাতে না পেরে ৬৭ অলআউট দিয়ে দুঃস্বপ্ন শুরু হয়েছিল। তার পর থেকে নাইটদের ওয়াংখেড়ে অ্যালবামে একের পর এক শুধু হতাশার ফ্রেম যোগ হয়েছে। গত বুধবার এর সঙ্গে নতুন সংযোজন হয়েছে ওয়াংখেড়ের প্যাভিলিয়নের সিঁড়িতে মুখ নিচু করে বসে থাকা আন্দ্রে রাসেলের ছবি। হতাশায় প্যাডটাও খোলার কথা মনে আসেনি।

হেরে গেলেও নাইটরা তাঁদের তিন মূর্তির লড়াই থেকে নতুন করে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করবে। প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচে যে ভাবে জমিয়ে দিয়েছিলেন রাসেল, দীনেশ কার্তিক এবং প্যাট কামিন্স, তা কিছুটা হলেও বিশ্বাস ফেরাবে দলের মধ্যে। আজ, শনিবার, ভাগ্য বিরূপ থাকা ওয়াংখেড়েতে প্রতিপক্ষ রাজস্থান রয়্যালস। এ বারের আইপিএলে যাদের উপর কেউ খুব একটা বাজি ধরার সাহস দেখাচ্ছে না। দু’টি দলই চারটি ম্যাচ করে খেলে মাত্র একটি জিতেছে। কেকেআর টেবলের ছয় নম্বরে, রাজস্থান রয়্যালস একেবারে শেষে, আট নম্বরে। কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং রাজস্থান রয়্যালসের মধ্যে আরও মিল হচ্ছে, দু’টি দলই তাদের প্রথম ম্যাচ জেতে। তার পর শেষ তিনটিতে হেরে পরাজয়ের হ্যাটট্রিক করে বসে আছে। তবু কেকেআরের মনোবল কিছুটা ভাল জায়গায় থাকবে রাসেল, কামিন্সদের ওই মরিয়া লড়াইয়ের জন্য। রাজস্থান রয়্যালসেও মাঝের এবং নীচের দিকের ব্যাটসম্যানেরা লড়ছেন। রাহুল তেওয়াটিয়া, শিবম দুবেরা আশা জাগিয়েছিলেন গত ম্যাচে। কিন্তু সঞ্জু স্যামসন ফের সেই ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগছেন। জস বাটলার ইংল্যান্ডের হয়ে প্রচুর ম্যাচ জিতিয়ে এসেছেন। কিন্তু গোলাপি জার্সিতে নিষ্প্রভ। সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হওয়া ক্রিস মরিসও একটি ম্যাচ জেতানো বাদ দিলে তেমন কোনও সাড়া ফেলতে পারেননি। তবে মনে রাখা দরকার, বোলার মরিস কিন্তু অতীতে সমস্যায় ফেলেছেন রাসেলকে। তাঁর অতিরিক্ত বাউন্স ও শরীর লক্ষ্য করে ধেয়ে আসা বল খুব একটা পছন্দ করেন না ক্যারিবিয়ান তারকা। রাজস্থান রয়্যালসের বোলিংয়ের জন্য বিরাট ধাক্কা জফ্রা আর্চারের ছিটকে যাওয়া। কাগজে-কলমে তাই যতই তাদের হাতে একটা বাটলার থাকুক, ডেভিড মিলার থাকুক, ক্রিস মরিস থাকুক, সঞ্জু স্যামসন থাকুক, ধারাবাহিকতার অভাবে ফ্যাকাশে দেখাতে শুরু করেছে তাদের।

Advertisement

ঠিক যেমন রক্তাল্পতায় ভুগছে কেকেআরের উপরের দিকের ব্যাটিং। শুভমন গিল প্রতিশ্রুতিমান হিসেবে নাইট শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন। ভারতীয় দলের দরজা খুলে গিয়েছে তাঁর সামনে। কোথায় প্রতিদ্বন্দ্বীদের নক-আউট করে দেবেন একের পর এক ভাল ইনিংস খেলে, না প্রত্যেক দিনই হুড়মুড়িয়ে শুরু করে মুখ থুবড়ে পড়ছেন। এ রকম চলতে থাকলে কেকেআরের ভরসা তো হয়ে উঠতে পারবেনই না, চলতি বছরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও অনিশ্চিত হয়ে পড়বেন। তখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হবে, শিখর ধওয়নের মতো ‘বুড়ো ঘোড়া’ তাঁর জায়গা নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। তেমনই ধারাবাহিকতার অভাব দেখা যাচ্ছে নীতীশ রানা, রাহুল ত্রিপাঠীর মধ্যে। অধিনায়ক অইন মর্গ্যানের রান না পাওয়া চিন্তায় রাখছে দলকে। আরও বড় চিন্তা মর্গ্যানের নেতৃত্বের ধরন। সুনীল নারাইনকে প্রথম একাদশে ফিরিয়েও পাঠালেন পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে। ওয়াংখেড়ের বাইশ গজ চেন্নাইয়ের মতো নয়। এখানে শট খেলা যায়। তা হলে নারাইনকে দিয়ে ওপেন করিয়ে পাওয়ার প্লে-র ফিল্ডিং বিধিনিষেধের ফায়দা তুলব না কেন? স্পিন দিয়ে শুরু করার রণনীতিও চেন্নাইয়ের মন্থর, ঘূর্ণি পিচে ঠিক ছিল। ওয়াংখেড়েতে বল ভাল যায়, বাউন্সও পেস বোলারদের উদ্বুদ্ধ করার মতো। তা হলে প্যাট কামিন্সের সঙ্গে নতুন বল কেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের হাতে তুলে দেব না?

সময় ফুরিয়ে আসছে মর্গ্যানের। প্লে-অফের দৌড়ে থাকতে গেলে জয়ের রাস্তায় ফিরতেই হবে। ওয়াংখেড়েতে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে আজ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement