দিল্লি যাওয়ার পথে সাইরাইজ়ার্সের উইলিয়ামসন ও ওয়ার্নার(বাঁ দিকে)। সিএসকে-র অনুশীলনে মগ্ন দীপক চাহার। মঙ্গলবার। ছবি টুইটার।
চেন্নাই, মুম্বই, আমদাবাদের পরে এ বার রাজধানীতে শুরু হতে চলেছে আইপিএলের আর এক পর্ব। দিল্লিতে প্রথম ম্যাচেই যেখানে মুখোমুখি হতে চলেছে চেন্নাই সুপার কিংস এবং সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদ।
মঙ্গলবার একটা ছবি নেট দুনিয়ায় খুব ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, মহাকাশ যাত্রীদের মতো পোশাক পরে বিমানে বসে আছেন হায়দরাবাদের দুই তারকা ক্রিকেটার— অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার এবং কেন উইলিয়ামসন। যা দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন উঠতে থাকে, এই দু’জন কি ক্রিকেট খেলতে চলেছেন না মহাকাশ যাত্রায় যাচ্ছেন? হায়দরাবাদের টুইটারে দেওয়া এক ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, শুধু ওয়ার্নার বা উইলিয়ামসনই নন, চেন্নাই থেকে দিল্লি আসার পথে বিমানে ওঠা আর নামার সময় দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ওই রকম ‘পিপিই’ পোশাক পরে আছেন।
গত বার যেখানে হায়দরাবাদ ভাল জায়গায় এবং চেন্নাই সমস্যায় ছিল, সেখানে এ বার ছবিটা উল্টো। পাঁচটা ম্যাচে চারটে জিতে খুব ভাল জায়গায় রয়েছে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সিএসকে। অন্য দিকে, চেন্নাইয়ে পাঁচটি ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতে জিতে মাঠে নামছে ওয়ার্নারের হায়দরাবাদ। শেষ ম্যাচে ওয়ার্নাররা আবার সুপার ওভারে হেরে গিয়েছেন দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে।
প্রথম এগারো নিয়ে সিএসকে-র একটাই সমস্যা। কাকে বাইরে রেখে কাকে খেলাবে! আর ব্যাটিং অর্ডারে কে কোথায় নামবে। এর আগের দিন পাঁচ নম্বরে নেমে ঝড় তুলেছিলেন রবীন্দ্র জাডেজা। মইন আলি ফিরলে তা হলে কি তাঁকে ব্যাটিং অর্ডারে নেমে যেতে হবে? এমনকি ধোনি নিজেই ব্যাট করার বেশি সুযোগ পাচ্ছেন না। আগের দিনই সিএসকে অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘‘কাউকে খুশি করার জন্য তো দল সাজানো যাবে না। যে রকম পরিস্থিতি হবে, সেই মতো আমরা ব্যাটিং অর্ডার ঠিক করব।’’
হায়দরাবাদের সমস্যা আবার অন্য। তিন বিদেশি— ওয়ার্নার, জনি বেয়ারস্টো এবং কেন উইলিয়ামসন ছাড়া আর কেউ রানের মধ্যে নেই। শেষ দুটো ম্যাচে বাদ দেওয়া হয়েছে মণীশ পাণ্ডেকে। যা নিয়ে দিল্লি ম্যাচের পরে ওয়ার্নার বলেছিলেন, ‘‘মণীশকে বাইরে রাখাটা খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত। কিন্তু নির্বাচকেরা যা ভাল বুঝেছেন, তাই করেছেন।’’ সিএসকে-র বিরুদ্ধে অবশ্য দলে ফিরতে পারেন মণীশ। তাঁর জায়গায় সুযোগ পাওয়া তরুণ বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান, বিরাট সিংহ দুটো ম্যাচে কিছু করতে পারেননি।
এর মধ্যে হায়দরাবাদের সমস্যা আবার চোট-আঘাত। ইতিমধ্যেই বাঁ-হাতি পেসার টি নটরাজন হাঁটুতে চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছেন। মঙ্গলবারই তাঁর অস্ত্রপচার হয়েছে। ভুবনেশ্বর কুমারও পুরো সুস্থ নন। পায়ে চোট থাকার কারণে আগের ম্যাচে খেলতে পারেননি ভারতীয় পেসার। ভুবনেশ্বর সুস্থ হতে না পারলে ওয়ার্নারের সমস্যা আরও বাড়বে।
দিল্লির পিচ সাধারণত একটু মন্থর হয়। সেই পিচের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মতো বোলারও কিন্তু ধোনির হাতে আছে। দীপক চাহার, স্যাম কারেন বা ডোয়েন ব্র্যাভো এই সব পিচের জন্য আদর্শ বোলার। সঙ্গে থাকছে জাডেজা বা ইমরান তাহিরের স্পিন। প্রথম ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়েই সফল হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ষীয়ান লেগ স্পিনার তাহির। দিল্লির পিচে তিনি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন।
হায়দরাবাদের বোলিং এখন অনেকটাই নির্ভর করে আছে আফগানিস্তানের লেগ স্পিনার রশিদ খানের উপরে। ভুবনেশ্বরের চোট, নটরাজনের না থাকাটা হায়দরাবাদের পেস আক্রমণকে কমজোরি করে দিয়েছে। কোনও সন্দেহ নেই, বুধবার ওয়ার্নারের হায়দরাবাদের থেকে এগিয়েই শুরু করবে ধোনির চেন্নাই।