নাইট শিবিরে হরভজন সিংহের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত অশোক মলহোত্র
অইন মর্গ্যান কি হরভজন সিংহের প্রতি আস্থা দেখাতে পারছেন না? নাকি মাঠে নেমে বিপক্ষের ব্যাটিং তাণ্ডব দেখে সবকিছু ঘেঁটে ফেলছেন? দুটো ম্যাচে তাঁর প্রিয় ভাজ্জিকে অসহায় ভাবে মাঠে দেখে একেবারেই খুশি নন অশোক মলহোত্র। বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটারকে এ ভাবে ব্রাত্য করার জন্য তিনি অইন মর্গ্যান ও কলকাতা নাইট রাইডার্স শিবিরের উপর বেজায় চটে রয়েছেন। সেটা আনন্দবাজার ডিজিটালকে খোলাখুলি বলেও দিলেন।
তবে এই বিষয়ে শুধু মর্গ্যান নন, কলকাতা নাইট রাইডার্সের কর্তা ও একাধিক প্রশিক্ষকের দিকেও আঙুল তুললেন বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক। দেশের হয়ে ১০৩টি টেস্ট ও ২৩৬টি একদিনের ম্যাচ খেলে ফেলা ভাজ্জির কপালে এখনও পর্যন্ত দুই ম্যাচে মাত্র ৩ ওভার বোলিং জুটেছে! এর মধ্যে সাররাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ১ ওভার বল করে দিয়েছিলেন ৮ রান। প্যাট কামিন্স পয়েন্টে দাঁড়িয়ে ডেভিড ওয়ার্নারের লোপ্পা ক্যাচ না ফস্কালে হয়তো আরও কয়েক ওভার তিনি হাত ঘোরাতে পারতেন। গত ম্যাচেও মাত্র ২ ওভার বল করেন ভাজ্জি। তাই তিনি বলছেন, “ভাজ্জি দলে যোগ দেওয়ার পর থেকে ওর বয়স নিয়ে অনেক কথা শুনছি। কিন্তু এখন এই প্রশ্ন তুলে কী লাভ! ওর মতো অভিজ্ঞ বোলারকে ২ কোটি টাকা দিয়ে কেনার পরেও গত দুটো ম্যাচে ঠিকমতো ব্যবহার করেনি। আমার ধারণা ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে ভাজ্জি কতটা সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে, সেটা নিয়ে অধিনায়কের মনে সন্দেহ আছে। তাই হয়তো কুইন্টন ডি’ কক ও ওয়ার্নার ক্রিজে আসতেই ভাজ্জির হাতে বল তুলে দেওয়া হয়েছিল। তবে অধিনায়কের এমন মানসিকতা থাকা উচিত নয়। বোলারের নাম যেহেতু হরভজন, তাই ওকে আরও বেশি ব্যবহার করা উচিত। এতে দলেরই লাভ হবে। যদিও দুটো ম্যাচ দেখার পর মনে হচ্ছে ভাজ্জিকে ওরা সব ম্যাচ খেলাবে না। নাইট শিবির এমন হাবভাব দেখাচ্ছে যে ও নাইটদের প্রধান স্পিনার নয়। যেন ‘ব্যাক আপ’ স্পিনার!”
প্রথম ম্যাচের শেষে ভাজ্জি একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে তাঁকে প্রশ্ন করা হয় ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে অফ স্পিনারের কার্যকারিতা কিংবা বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে বাঁহাতি স্পিনারের বল করা কি কমে যাচ্ছে? অভিজ্ঞ ভাজ্জি খুব অল্প কথায় বলেছিলেন, “ক্রিকেট খুবই সোজা খেলা। আগেও দুই ধরনের স্পিনাররা দুই প্রকার ব্যাটসম্যানদের আউট করেছে। ভবিষ্যতেও সেটা হবে। আমাদের মধ্যে থাকা কিছু মানুষ ব্যাপারটা অহেতুক জটিল করে ফেলছে।” অশোক মলহোত্রও এই অফ স্পিনারের মন্তব্যের সঙ্গে একেবারে একমত। তিনিও বলেন, “টেস্টে ৪১৭ ও একদিনের ক্রিকেটে ২৬৯ উইকেট রয়েছে। এরপরেও যদি কেকেআর শিবির ওর দক্ষতা নিয়ে সন্দেহ করে, তাহলে তো কিছু বলার নেই। আসলে আইপিএলের দলগুলোতে শুধু অধিনায়কের কথায় সবকিছু হয় না। দলে একাধিক প্রশিক্ষক আছে। আর এতেই তৈরি হচ্ছে যাবতীয় সমস্যা।”
তবে শুধু হরভজনের বিষয়ে নয়, নাইটদের মিডল অর্ডারের অবস্থা বেশ খারাপ, মেনে নিচ্ছেন মলহোত্র। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা আন্দ্রে রাসেলের। সেটা মেনে নিচ্ছেন বাংলার প্রাক্তন প্রশিক্ষক। তিনি চাঁচাছোলা ভাষায় বললেন, “রাসেল এখনও ২০১৯ সালের ছায়া নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ ওর শর্ট বলের প্রতি দুর্বলতা প্রতিটা দল জানে। তাই গত আইপিএল থেকে ওকে পায়ের কাছে বল দেওয়া হয় না। শরীর লক্ষ্য করে বল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু রাসেল তো নাইটদের ব্যাটিংয়ের শেষ কথা নয়। মর্গ্যান ও দীনেশ কার্তিকের ভূমিকা কী? সেটা নিয়েও কথা বলার সময় এসে গিয়েছে। গত কয়েক বছর ওদের ব্যাটে বড় রান কোথায়? নীতীশ রানার পক্ষে একা ম্যাচ বের করা সম্ভব নয়। শুভমন গিল দারুণ ব্যাট করে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি পুরো ওভার ব্যাট করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, সেই দক্ষতা ওর এখনও হয়নি। সবে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। তবে এমন দুর্বল ব্যাটিং করলে এ বারও কলকাতার কোনও আশা দেখছি না।”