IPL

মুম্বইয়ের কাছে হারের পর সমর্থকদের কাছে মর্গ্যান, রাসেলদের ক্ষমা চাইতে বললেন শাহরুখ

২০১৯ সালের আন্দ্রে রাসেল নিয়ে আইপিএল জগত যতই রোমাঞ্চিত থাকুক, বিপক্ষ দল কিন্তু মোটেও ব্যাটসম্যান রাসেলকে নিয়ে আর ভিত নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২১ ০০:৪৫
Share:

২৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে মুম্বইকে জয় এনে দিয়ে ম্যাচের নায়ক রাহুল চাহার। ছবি - টুইটার

শুধু ভাল বল করলেই ম্যাচ জেতা যায় না। বাইশ গজের যুদ্ধটা জিততে হলে মনের জোর বজায় রেখে ব্যাটিংও করতে হবে। ২০১৯ সালের আন্দ্রে রাসেল নিয়ে আইপিএল জগত যতই রোমাঞ্চিত থাকুক, বিপক্ষ দল কিন্তু মোটেও ব্যাটসম্যান রাসেলকে নিয়ে আর ভিত নয়। সেটা ২০২০ সালের আইপিএলে বোঝা গিয়েছিল। আর এ বার দুটো ম্যাচ গড়াতেই রাসেলের দুর্বলতা আরও প্রকট হয়ে উঠল। তবে শুধু রাসেলকে একা কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত নয়। সমান দোষে দোষী কলকাতা নাইট রাইডার্সের তারকা খচিত মিডল অর্ডার। প্রথম ম্যাচে একাধিক ভুল করেও পার পেয়েছিল অইন মর্গ্যানের দল। তবে এ বার আর উপায় নেই। তাই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে ১০ রানে লজ্জাজনক হারের পর দলের খেলায় রেগে গিয়ে মালিক শাহরুখ খান পর্যন্ত টুইটারে ধমক দিয়ে লিখলেন, ‘জঘন্য খেলা! কেকআর তোমরা সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিও।’

Advertisement

শাকিব আল হাসান আউট হওয়ার পর রাসেল যখন ক্রিজে এলেন তখন নাইটদের জেতার জন্য প্রয়োজন ২৪ বলে ৩০ রান। হাতে আরও ৫ উইকেট। ক্রুণাল পাণ্ড্যর বলে দুবার জীবন ফিরে পেলেন। কিন্তু সেই সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন কোথায়! ১৫ বলে ৯ রান করে শেষ ওভারে যখন ফিরছেন, তখন নাইট ব্যাটিং আইসিইউ-তে চলে গিয়েছে।

তবে তিনি শুধু তিনি নয়। নীতীশ রানার ৫৩ ও শুভমন গিলের ৩৩ ছাড়া নাইটদের বাকি ব্যাটিং যেন মোবাইল নম্বরের মতো দেখাল। রাহুল ত্রিপাঠি (৫), অইন মর্গ্যান (৭), শাকিব (৯), প্যাট কামিন্স (০) যেন শুধু যাওয়ার আসার প্রতিযোগিতায় মাতলেন। রোহিত টি-টোয়েন্টিতে, বিশেষ করে আইপিএলে খুবই বিচক্ষণতার সঙ্গে অধিনায়কত্ব করেন। কিন্তু তিনিও যেন চিপকের পিচ বুঝতে ভুল করলেন। ঘূর্ণি পিচে যেখানে নাইটরা তিন স্পিনার খেলিয়েছিল, সেখানে তাঁর কাছে ছিল রাহুল চাহার ও ক্রুণাল। কিন্তু কে জানত হরিয়ানার এই লেগ স্পিনার ২৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে কেকেআরকে কাঁপিয়ে দেবেন। অবশ্য তাঁকে দারুণ সঙ্গত দিলেন ট্রেন্ট বোল্ট ও ক্রুণাল। ফলে ৭ উইকেটে ১৪২ রানে আটকে গেল কলকাতা।

Advertisement

অর্ধ শতরানের পরেও জলে গেল নীতীশ রানার লড়াই। ছবি - টুইটার।

মুম্বই তাদের সবচেয়ে পছন্দের ও পয়া প্রতিপক্ষ কলকাতার বিরুদ্ধে কবে এত খারাপ ব্যাটিং করেছে মনে পড়ে না। বল হাতে স্লোয়ার বাউন্সার, স্লোয়ার ইয়র্কার, ওয়াইড ইয়র্কারের উপর ভর করে রোহিতের দলের মিডল অর্ডারকে একেবারে শেষ করে দিলেন রাসেল। স্বদেশীয় কায়রন পোলার্ডকে ফিরিয়ে প্রথম ঝটকা দিয়েছিলেন। এরপর একে একে তাঁর শিকার ক্রুণাল পাণ্ড্য ও পাঁচ বারের আইপিএল জয়ী দলের শেষের দিকে বাকি ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ২ ওভারে হাত ঘুরিয়ে আইপিএলে প্রথম বার ৫ উইকেট পেলেন রাসেল। তাও আবার মাত্র ১৫ রান দিয়ে।

চিপকের ঘূর্ণি পিচে রোহিত ও কুইন্টন ডি' ককের ব্যাটকে রুখে দেওয়ার জন্য শুরু থেকেই স্পিনারদের হাতে নতুন বল তুলে দেন মর্গ্যান। দ্বিতীয় ওভারে এল প্রথম সাফল্য। বরুণ চক্রবর্তীর বলে ফিরে গেলেন ডি' কক। যদিও সূর্য কুমার যাদব থেমে থাকার পাত্র নন। ‘প্রাক্তন নাইট’ আবার বেগুনী রঙ দেখলে বাড়তি উদ্দীপ্ত হয়ে যান। এর প্রমাণ তিনি ক্রিজে এসেই দেওয়া শুরু করছিলেন। ফলে চোখের নিমেশে দ্বিতীয় উইকেটে ৭৬ রান তুলে ফেলে মুম্বই। তবে সূর্যকে তাঁর পুরনো সতীর্থ শাকিবের কাছে হার মানতে হল। তিনি যখন ৩৬ বলে ৫৬ করে ফিরছেন, তখন মুম্বইয়ের স্কোর বোর্ডে ২ উইকেটে ৮৬ রান। ঈশান কিশনকে আউট করার পর ১৬তম ওভারে রোহিতকে আউট করে বিপক্ষকে জোড়া ধাক্কা দিলেন প্যাট কামিন্স। ফলে মুম্বই ১৫২ রানে শেষ হয়ে যায়।

শুধু বল নয়, ব্যাটেও রান করতে হবে। রাসেল দ্রুত বুঝলে নাইটদের মঙ্গল। ছবি - টুইটার।

কিন্তু ম্যাচ তো শেষ হয়ে যায় নি। মুম্বইকে অনেক বার খাদের কিনারা থেকে বের করেছেন যশপ্রীত বুমরা। এ বারও সেটা করলেন রোহিতের ‘তুরুপের তাস’। এমনিতেই চাহারের স্পিনে নাইটরা নাজেহাল ছিল। সঙ্গে তিনি ১৯ ওভারে বল হাতে নিয়ে দিলেন মাত্র ৪ রান। ব্যস সেখানেই ম্যাচ শেষ। বাকি কাজটা শেষ ওভারে ট্রেন্ট বোল্ট মাথা ঠাণ্ডা রেখে জয়ের পরিসংখ্যান আরও বাড়িয়ে নিলেন।

আর রাসেল যে ছকে মুম্বইকে বধ করেছিলেন, সেই একই ছকে তিনি ও তাঁর দল বিদ্ধ হলেন। ফলে জুটল মালিকের ধমক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement