পঞ্জাবের জয়ের জুটি। ক্রিস গেল ও মনদীপ সিংহ। ছবি-সোশ্যাল মিডিয়া।
বদলে গিয়েছে এই কিংস ইলেভেন পঞ্জাব। আইপিএল থেকে প্রায় ছিটকে যেতে বসেছিল প্রীতি জিন্টার দল। সেই দলই টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে এখন প্লে অফের আশা জিইয়ে রেখেছে।
সোমবার কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ৮ উইকেটে হারিয়ে চার নম্বরে উঠে এল পঞ্জাব। কলকাতা নেমে গেল পাঁচে। লোকেশ রাহুলের দলের এই ঘুরে দাঁড়ানোর পিছনে বড় অবদান ক্রিস গেলের। তিনি নামার পর থেকেই পঞ্জাবকে অন্যরকম দেখাচ্ছে। ওপেন করতে নামছেন না ক্যারিবিয়ান তারকা। তার বদলে গেল নামছেন তিন নম্বরে। দায়িত্ববোধের পরিচয় দিচ্ছেন। সব বলে চালাচ্ছেন না। বরং ইনিংস গড়ছেন ধীরে ধীরে। সোমবারও তাই করলেন। লোকেশ রাহুল (২৮) আউট হওয়ার পরে মনদীপ সিংহকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্জাবকে নিয়ে গেলেন জয়ের দোরগোড়ায়।মনদীপের সঙ্গে ১০০ রানের পার্টনারশিপ গড়লেন গেল। ২৯ বলে ৫১ রান করে তিনি যখন আউট হলেন, তত ক্ষণে জয়ের গন্ধ পেয়ে গিয়েছে পঞ্জাব। এই টুর্নামেন্টে গেলের এটা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। মনদীপ সিংহও দারুণ ইনিংস খেললেন। ৫৬ বলে ৬৬ রানে অপরাজিত থেকে যান তিনি। গত শুক্রবার পিতৃবিয়োগ হয়েছিল মনদীপের। সেই যন্ত্রণা বুকে নিয়েই খেলে চলেছেন তিনি। এ দিন পঞ্চাশ করার পরে আকাশের দিকে তাকিয়ে বাবাকে খুঁজলেন মনদীপ।
এ দিন টস জিতে কলকাতাকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান পঞ্জাব অধিনায়ক। ব্যাট করতে নেমে ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই কলকাতা নাইট রাইডার্সের ওপেনার নীতিশ রানা আউট হন। ম্যাক্সওয়েলকে দিয়ে বোলিং ওপেন করিয়েছিলেন লোকেশ রাহুল। ম্যাক্সওয়েল অধিনায়ককে শুরুতেই এনে দেন উইকেট। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে রানা দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন। সোমবার খাতা না খুলে আউট হলেন বাঁ হাতি রানা।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট দলে মহম্মদ সিরাজ, ফিরলেন রাহুলও
দ্বিতীয় ওভারে ম্যাজিক দেখান মহম্মদ শামি। পঞ্জাব পেসারের সুইংয়ে ঠকে যান রাহুল ত্রিপাঠী (৭)। সহজ ক্যাচ দেন উইকেট কিপার লোকেশ রাহুলের হাতে। সেই ওভারেই দীনেশ কার্তিককে (০) বোকা বানিয়ে ফেরান শামি। কার্তিকের ব্যাটে খোঁচা লেগে বল যায় রাহুলের গ্লাভসে। শামির সুইং বোলিংয়ের জবাব ছিল না ত্রিপাঠী-কার্তিকের কাছে। পঞ্জাব বোলাররা শুরুতেই বড় ধাক্কা দেয় কলকাতা শিবিরে। চাপের মুখে পাল্টা মারের খেলা শুরু করেন অইন মর্গ্যান ও শুভমন গিল। ওই সময়ে ওরকম পাল্টা মারেরই দরকার ছিল। গিল ও মর্গ্যান ৮১ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। রবি বিষ্ণোইকে মারতে গিয়ে মর্গ্যান (৪০) আউট হন।
দিল্লির বিরুদ্ধে সুনীল নারাইন আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেছিলেন। এ দিন গিলের সঙ্গে তাঁকেও দরকার ছিল। নারাইন এ দিন করলেন মাত্র ৬ রান। পঞ্জাবের দুই স্পিনার মুরুগান অশ্বিন ও রবি বিষ্ণোইকে খেলতে না পেরে কলকাতাকে আরও বিপন্ন করলেন কমলেশ নাগারকোটি (৬) ও প্যাট কামিন্স (১)। মর্গ্যান ছাড়া কলকাতার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একা লড়লেন শুভমান গিল। ৪৫ বলে ৫৭ রান করেন তিনি। শেষের দিকে লকি ফার্গুসন ১৩ বলে ২৪ রান করায় কলকাতা ২০ ওভারে করল ৯ উইকেটে ১৪৯।
আরও পড়ুন: দলে নাইট স্পিনার, অস্ট্রেলিয়া সিরিজের টি টোয়েন্টি দলে চমক ভারতীয় দলে
রান তাড়া করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জিতে নেয় পঞ্জাব। রাহুলের দল এখন প্রথম চারে। অন্য দিকে দিল্লির বিরুদ্ধে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করার পরেই হতশ্রী ভাবে হারতে হল কলকাতাকে। টুর্নামেন্ট এখন প্রায় শেষের দিকে পৌঁছে গিয়েছে। এই সময়ে ধারাবাহিকতা দেখাতে হবে কলকাতাকে।