রশিদ খানকে ঘিরে সতীর্থদের উচ্ছ্বাস। ছবি-সোশ্যাল মিডিয়া।
উইকেটের পিছনে শরীর ছুড়ে বহু ক্যাচ তিনি নিয়েছেন। তার জন্য ভারতীয় ক্রিকেটে ঋদ্ধিমান সাহার নামই হয়ে গিয়েছে ‘সুপারম্যান’। দুবাইয়ে ব্যাট হাতে ‘সুপারম্যান’ হয়ে উঠলেন ঋদ্ধি। ভাগ্য সহায় না হওয়ায় মঙ্গলবার নিশ্চিত সেঞ্চুরি মাঠে ফেলে এলেন। ডেভিড ওয়ার্নার এবং ঋদ্ধির জন্য হায়দরাবাদ ২০ ওভারে করল ২১৯ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই উইকেট পড়ল দিল্লির। শেষ পর্যন্ত শ্রেয়াস আইয়ারের দল থামল ১৩১ রানে।
এ বারের টুর্নামেন্টে আজকের আগে মাত্র একবারই নেমেছিলেন ঋদ্ধি। তাও আবার মিডল অর্ডারে। এ দিন সরাসরি ওপেন করতে নেমে পড়েন ওয়ার্নারের সঙ্গে। তাঁর সহজ, সাবলীল ইনিংস দেখে কে বলবে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলছেন বাংলার উইকেট কিপার। দিল্লি বোলারদের ছন্দ নষ্ট করার কাজটা প্রথমে শুরু করেন ঋদ্ধিই। ওয়ার্নার ঝড় তুলে ফেরার পরে তাণ্ডব শুরু করলেন বঙ্গতনয়। হায়দরাবাদের রানের গতি কোনও সময়তেই কমতে দিলেন না। নিখুঁত টাইমিং করলেন। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বল প্লেস করলেন মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে। রাবাদা-নরতিয়ের মতো দ্রুতগামী বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করলেন তিনি। ৪৫ বলে ৮৭ রানের ইনিংসে অক্রিকেটীয় শট একটাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। ম্যাচের সেরাও তিনি।
আজকের ম্যাচ দিল্লির কাছে ছিল শীর্ষে পৌঁছনোর। এ দিন জিতলেই প্লে অফেরও টিকিট পেয়ে যেত শ্রেয়াসের দল। কিন্তু অন্য কিছু ভেবেছিলেন ওয়ার্নাররা। মনে প্রাণে চেয়েছিলেন প্রথমে ব্যাট করতে। প্রথমে ব্যাট করে স্কোর বোর্ডে বড় রান করাই ছিল লক্ষ্য। শ্রেয়াস আইয়ার টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান হায়দরাবাদকে।
আগের ম্যাচগুলোয় ওয়ার্নার ও বেয়ারস্টো রানের গতি বাড়াতে পারছিলেন না পাওয়ার প্লেতে। এ দিন শুরু থেকেই টপ গিয়ারে রান তুলল হায়দরাবাদ। ৬ ওভারে ওয়ার্নার ও ঋদ্ধির দাপটে ৭৭ রান করে ফেলে হায়দরাবাদ। শুরুর দিকে ঋদ্ধির সামনে ওয়ার্নারকে ম্লান দেখালেও, পরে অজি ওপেনার নিজের ছন্দে ফেরেন। ২৫ বলে ৫০ পূর্ণ করেন। দুই ওপেনার ১০৭ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। অশ্বিনের বলে ব্যক্তিগত ৬৬ রানে (৩৪ বলে) আউট হন ওয়ার্নার। আজ জন্মদিন হায়দরাবাদ অধিনায়কের। তাঁর ভক্তরা আজকের এই ইনিংস অনেক দিন মনে রাখবেন।
ওয়ার্নার ফেরার পরে দিল্লি বোলারদের শাসন করতে শুরু করে ঋদ্ধির ব্যাট। নরতিয়ের পেসে ঠকে না গেলে এ দিন সেঞ্চুরিও করতে পারতেন তিনি। আউট হওয়ার আগে মণীশ পাণ্ডের সঙ্গে জুটিতে ৬৩ রান জোড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত মণীশ পাণ্ডে (৪৪) ও কেন উইলিয়ামসন (১১) হায়দরাবাদকে পৌঁছে দেন ২০ ওভারে ২১৯ রানে।
হায়দরাবাদের পাহাড়প্রমাণ এই রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভার থেকেই উইকেট পড়ে দিল্লির। ফর্মে থাকা শিখর ধওয়ন খাতা না খুলেই আউট হন সন্দীপ শর্মার বলে। দ্রুত রান তোলার জন্য আগে পাঠানো হয়েছিল স্টোইনিসকে। তিনিও বেশি ক্ষণ টেকেননি। শাহবাজ নাদিমের বলে ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্টোইনিস(৫)। নিজের প্রথম ওভারেই হেটমায়ার (১৬) ও অজিঙ্ক রাহানেকে (২৬) ফিরিয়ে দিয়ে দিল্লিকে আরও সমস্যায় ফেলে দেন রশিদ খান। অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার (৭) ব্যর্থ। ঋষভ পন্থ দলের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন। বাকিরা কেউই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলেন না। পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা দিল্লিকে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হল হায়দরাবাদের কাছে। রশিদ খান ৩টি, সন্দীপ শর্মা ২টি এবং নটরাজন ২টি উইকেট নেন। এ দিন জেতায় টুর্নামেন্টে এখনও টিকে রইল হায়দরাবাদ।
#DelhiCapitals have won the toss and they will bowl first against #SRH#Dream11IPL pic.twitter.com/v524LkarGV