বিধ্বংসী বুমরা। ছবি-সোশ্যাল মিডিয়া।
আইপিএলের ফাইনালে রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। দিল্লি ক্যাপিটালস ৫৭ রানে হেরে গেলেও ফাইনালে যাওয়ার জন্য আরও একটা সুযোগ পাচ্ছে। এলিমিনেটরের বিজয়ীর সঙ্গে খেলতে হবে শ্রেয়স আয়ারদের। সেই ম্যাচ যারা জিতবে তারাই যাবে ফাইনালে। শুক্রবার এলিমিনেটরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের সামনে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
বৃহস্পতিবার প্রথমে ব্যাট করে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স করে ৫ উইকেটে ২০০ রান। কুইন্টন ডি' কক (৪০), সূর্যকুমার যাদব (৫১), ঈশান কিষাণ (৩০ বলে অপরাজিত ৫৫) ও হার্দিক পাণ্ড্যর (১৪ বলে ৩৭ অপরাজিত) দাপটে মুম্বই লড়াই করার মতো রান করে। অথচ এক সময়ে মনে হয়েছিল দিল্লি ক্যাপিটালসের বোলাররা দেড়শোর কম রানে আটকে রাখতে পারবেন মুম্বইকে। কিন্তু হার্দিক পাণ্ড্য ও ঈশান কিষাণ শেষের দিকে ঝড় তোলায় বেশ ভাল রান করে চার বারের চ্যাম্পিয়নরা।
শেষ ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে হেরে গিয়েছিল মুম্বই। সেই ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল যশপ্রীত বুমরা, ট্রেন্ট বোল্টদের। তারকা পেসাররা না থাকায় হায়দরাবাদের ইনিংসে কামড় বসাতে পারেনি মুম্বই। এ দিন মুম্বইয়ের প্রথম একাদশে ফেরেন বোল্ট, বুমরা ও হার্দিক পাণ্ড্য। এই ত্রিমূর্তি ফেরায় দল যে বদলে গিয়েছে, তা দেখা গেল। মুম্বইয়ের রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভার থেকেই বিপর্যয় দিল্লি শিবিরে। বোল্টের প্রথম ওভারেই ২ উইকেট হারায় দিল্লি। ট্রেন্ট বোল্টের দ্বিতীয় বলে আউট হন পৃথ্বী শ(০), পঞ্চম বলে ফেরেন অজিঙ্ক রাহানে (০)।
পরের ওভারে যশপ্রীত বুমরার ইয়র্কার ছিটকে দেয় শিখর ধওয়নের (০) উইকেট। অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ারও (১২) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১২ রান করার পরে বুমরার বলে আউট হন দিল্লি অধিনায়ক। ঋষভ পন্থ (৩) নিজের উইকেট ছুড়ে দেন। এর পরে মার্কাস স্টোইনিস ও অক্ষর পটেল ৮১ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। মুম্বই বোলারদের পাল্টা আক্রমণের রাস্তা নেন স্টোইনিস। ৪৬ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এই দুই ব্যাটসম্যানের জন্যই দিল্লির রান ভদ্রস্থ দেখায়। জুটি ভাঙার জন্য রোহিত আক্রমণে আনেন বুমরাকে। আক্রমণে ফিরেই বুমরা বোল্ড করেন স্টোইনিসকে। সেই ওভারেই ড্যানিয়েল স্যামসকে (০) আউট করেন তিনি। অন্য দিকে অক্ষর পটেল ৪২ রান করেন। ০ রানে তিন উইকেট যাওয়ার পরে ম্যাচ জিতে নেবেন পন্থরা, তা অতি বড় দিল্লি সমর্থকও ভাবেননি। ২০ ওভারে দিল্লি থামল ৮ উইকেটে ১৪৩ রানে। আরও একটা সুযোগ পাচ্ছে দিল্লি। ফাইনালে পৌঁছতে হলে ঘুরে দাঁড়াতে হবে শ্রেয়স আয়ারের দলকে।
এ দিন টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রেয়স। ব্যাট করতে নেমে ভক্তদের হতাশ করেন রোহিত। কোনও রান না করেই আউট হন তিনি। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট সারিয়ে আগের ম্যাচেই ফিরেছিলেন। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে মুম্বই অধিনায়ক করেছিলেন মাত্র ৪ রান। এ দিন রোহিত কোনও রান না করেই অশ্বিনের বলে এলবিডব্লিউ হন।
১৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় মুম্বই। দলের ইনিংস গোছানোর দায়িত্ব নেন কুইন্টন ডি' কক ও সূর্যকুমার যাদব। দুই ব্যাটসম্যান ৬২ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে আউট হন কুইন্টন ডি' কক (৪০)। নিজের তৃতীয় ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকান তারকার উইকেট নেন অশ্বিন। সেই ওভারেই সূর্যকুমার যাদব ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন অশ্বিনকে। চাপ অনেকটা কম গিয়েছিল। অশ্বিনকে আক্রমণ না করলেই পারতেন কুইন্টন ডি' কক।
আইপিএলে দারুণ ব্যাটিং করছেন সূর্যকুমার। এ দিন ৫১ রান করলেন। উইকেটে জমে যাওয়ার পরে অ্যানরিচ নরতিয়েকে মারতে গিয়ে ড্যানিয়েল স্যামসের হাতে ধরা পড়েন তিনি। বিপজ্জনক পোলার্ড খাতা না খুলেই আউট হন অশ্বিনের বলে। ক্রুনাল পাণ্ড্যও ১৩ রানে আউট হন। সেই সময়ে মনে হয়েছিল মুম্বইকে কম রানে আটকে রাখতে পারবে দিল্লি। কিন্তু ঈশান কিষাণ ও হার্দিক পাণ্ড্যর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে মুম্বই ২০০ রান করে দিল্লির উপরে চাপ তৈরি করে। সেই চাপ আর কাটিয়ে উঠতে পারলেন না ধওয়নরা। বুমরা (৪-১৪) ও বোল্টের (২-৯) আগুনে বোলিং দিল্লিকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিল।
#DelhiCapitals have won the toss and they will bowl first against #MumbaiIndians in Dubai. #Dream11IPL pic.twitter.com/o479ngbEfh