৫ বার আইপিএলের ফাইনাল খেলে ৪ বার জেতা মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মুখোমুখি প্রথম বার ফাইনালে ওঠা দিল্লি ক্যাপিটালস। ছবি: আইপিএল
৫ বার আইপিএলের ফাইনাল খেলে ৪ বার জেতা মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মুখোমুখি প্রথম বার ফাইনালে ওঠা দিল্লি ক্যাপিটালস। লিগের লড়াইয়ে এক এবং দুই নম্বর দলের মধ্যে ফাইনাল হলেও তাদের ফাইনালে ওঠার পথ এতটা মসৃণ ছিল না। দেখে নেওয়া যাক কেমন ছিল দুই দলের সেই জার্নি।
দিল্লি অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের কথায় তাঁদের পথটা ছিল ‘রোলার কোস্টার’ চড়ার মতো। কখনও ওপরে, কখনও নীচে। সত্যিই তাই। আইপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচে দিল্লি মুখোমুখি হয়েছিল কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের। সুপার ওভারে জেতা সেই ম্যাচ আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল শ্রেয়াসদের। প্রথম ৬টা ম্যাচের মধ্যে ৫টিতেই জয়। হারতে হয় শুধু সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে। যাদের হারিয়েই ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে দিল্লি। শুরুর এই সাফল্য ধাক্কা খায় মুম্বইয়ের কাছে। লিগের দুটো ম্যাচেই তাদের কাছে হারতে হয়েছে দিল্লিকে। এ বারের টুর্নামেন্টে এক বারও রোহিতদের হারাতে পারেননি শ্রেয়াসরা।
টুর্নামেন্টের মাঝ পথে খেই হারিয়ে ফেলে দিল্লির তরুণ ব্রিগেড। চোটের জন্য অমিত মিশ্র, ইশান্ত শর্মাদের হারিয়ে ভীত নড়ে যায় দলটার। একের পর এক ম্যাচ হারতে থাকে তারা। যদিও দলের অভিজ্ঞ ওপেনার শিখর ধওয়ন এরই মধ্যে টুর্নামেন্টে পর পর ২ ম্যাচে শতরানের রেকর্ড গড়েন। দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী তিনিই। ১৬ ম্যাচে তিনি করেছেন ৬০৩ রান, গড় ৪৬.৩৮। ফাইনালে ৬৮ রান করতে পারলে সুযোগ রয়েছে কমলা টুপি জেতার। বেগুনি টুপির মালিক কাগিসো রাবাদা এই মুহূর্তে ১৬ ম্যাচে ২৯ উইকেট নিলেও, ফাইনালের তাঁর লড়াই হবে যশপ্রীত বুমরার সঙ্গে। তরুণ অধিনায়ক শ্রেয়াসের নেতৃত্বে প্লে অফে ওঠার জন্য কাঙ্ক্ষিত পয়েন্ট সংগ্রহ করে নেয় তারা। এখন দেখার টুর্নামেন্টে মুম্বইকে প্রথমবারের জন্য হারিয়ে কাপ তুলে নিতে পারে কিনা ‘নয়া দিল্লি’।
মুম্বই জানে ফাইনালের চাপ কী। এই অভিজ্ঞতা এগিয়ে রাখবে তাদের। দিল্লির বিরুদ্ধে এখনও অবধি না হারার পরিসংখ্যান দেবে বাড়তি আত্মবিশ্বাসও। রোহিতদের টুর্নামেন্টের শুরুটা হয় চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হেরে। যদিও তার ছাপ পরের ম্যাচগুলোতে পড়েনি। দ্বিতীয় ম্যাচেই আসে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ৪৯ রানে দাপুটে জয়। লিগের ১৪ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার আগে প্লে অফে নিজেদের জায়গা পাকা করে তারা।
আরও পড়ুন: আসল অস্ত্র বুমরা, ফাইনালের আগে জানিয়ে দিল মুম্বই শিবির
তরুণ ঈশান কিষাণ, অভিজ্ঞ কুইন্টন ডি’ককের ফর্ম যেমন মজবুত করেছে ব্যাটিং বিভাগকে, তেমনই ট্রেন্ট বোল্ট এবং বুমরা কাঁধে তুলে নিয়েছেন বোলিংয়ের দায়িত্ব। ১৩ ম্যাচে ঈশানের সংগ্রহ ৪৮৩ রান, গড় ৫৩.৬৬। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ৯৯ রানে আউট হয়ে ফেরা এখনও নিশ্চয়ই ভুলতে পারেননি ঈশান নিজেও। কুইন্টনেরও সংগ্রহ ৪৮৩ রান। তিনি যদিও খেলেছেন ১৫টি ম্যাচ। ওপেনিংয়ে তাঁর ব্যাট ঢেকে দিয়েছে রোহিত শর্মার অফ ফর্মও। বল হাতে বুমরার সংগ্রহ ১৪ ম্যাচে ২৭ উইকেট। অন্য দিকে বোল্ট নিয়েছেন ২২টি উইকেট। তাঁদের জুটি প্রতি ম্যাচেই ত্রাস হয়ে উঠেছে প্রতিপক্ষের কাছে। ফাইনালেও যা চিন্তা বাড়াবে দিল্লির।
আরও পড়ুন: সুপারনোভাসকে হারিয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন ট্রেলব্লেজার্স
কাপ এবং ঠোঁটের মধ্যে তফাত যে কতখানি তা বোঝেন ৪ বার ফাইনাল জেতা অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তরুণ শ্রেয়াসের কাছে চ্যালেঞ্জ বুমরা, বোল্টের পেসের বুলডোজারকে রুখে দেওয়া। মুম্বইকেও সামলাতে হবে রাবাদার আগুনে বোলিং। ‘শেষ ভাল যার, সব ভাল তার’ প্রবাদকে আবার সত্যি প্রমাণ করতে চাইবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। প্রথম বার ফাইনাল খেলতে নামা দিল্লির কাছে সুযোগ আইপিএলের ট্রফিতে নিজেদের নাম খোদাই করার। খুব সহজে সেই সুযোগ হারাতে চাইবে না তারাও।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।