দুরন্ত: হায়দরাবাদকে হারানোর পরে শ্রেয়স-রাবাডাদের উচ্ছ্বাস। আইপিএল
ছ’দিন আগেই দিল্লি ক্যাপিটালসের কোচ রিকি পন্টিংয়ের সঙ্গে টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে কথা হচ্ছিল। রিকি বলছিল, মার্কাস স্টোয়নিসের কথা। ও মনে করে অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হয়ে উঠতে পারে এই ছেলেটি। কে জানত, রবিবার এই স্টোয়নিসকে ওপেন করতে পাঠানোটা ডেভিড ওয়ার্নারদের বিরুদ্ধে মাস্টারস্ট্রোক হবে পন্টিংয়ের? ওপেনিং জুটি পরিবর্তনের সিদ্ধান্তই আশীর্বাদ হয়ে ওঠে দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে। সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদকে ১৭ রানে হারিয়ে মঙ্গলবার ফাইনালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মুখোমুখি দিল্লি ক্যাপিটালস। প্রথম বারের মতো আইপিএল ফাইনালে শ্রেয়স আয়াররা।
দিল্লির জয়ের মূল কারণ দু’টি। এক, স্টোয়নিসকে দিয়ে ওপেন করিয়ে বিপক্ষকে চাপে ফেলে দেওয়া। দুই, কাগিসো রাবাডার স্বপ্নের ডেলিভারিতে ডেভিড ওয়ার্নারের ফিরে যাওয়া। স্পেলের প্রথম বলেই রাবাডার ‘লেট সুইং’ ওয়ার্নারের প্যাডে লেগে স্টাম্প ভেঙে দেয়। ওয়ার্নার পা সরানোর সুযোগ পায়নি। বিপক্ষের সব চেয়ে বড় শক্তিকে একেবারে স্কুলছাত্রের মতো ফিরিয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার।
রাবাডার হুঙ্কারই বুঝিয়ে দিচ্ছিল, কত বড় ধাক্কা শুরুতেই হায়দরাবাদকে দিতে পেরেছে দিল্লি। আইপএলের শুরু থেকেই পৃথ্বী শয়ের উপরে অতিরিক্ত ভরসা রেখেও লাভ হচ্ছিল না দিল্লির। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে তরুণ ওপেনারকে খেলানোর ঝুঁকিই নিতে পারেনি পন্টিং। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া দিল্লির পরিকল্পনাই ছিল বড় রান তোলার। তাই স্টোয়নিসকেই আক্রমণ করতে পাঠায় পন্টিং। সফল ভাবেই সেই দায়িত্ব পূরণ করে অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার।
আরও পডুন: ট্রফির দ্বৈরথ শ্রেয়স চান উপভোগ করতে
পাওয়ার প্লে শেষে দিল্লির স্কোর ছিল ৬৫-০। এই জায়গা থেকে ওদেরও দু’শোর উপরে রান করা উচিত ছিল। কিন্তু রশিদ খানের চারটি ওভার সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেয়। মাত্র ২৬ রান দিয়ে আফগান লেগস্পিনার ফিরিয়ে দেয় ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা স্টোয়নিসকে। সেখান থেকে রানের গতি ধরে রাখার কাজটি করে শিখর ধওয়ন। ৫০ বলে ৭৮ রান করে ধওয়ন বুঝিয়ে দিল, ও কিন্তু বড় ম্যাচের ক্রিকেটার।
দিল্লির ব্যাটসম্যানেরা রশিদকে সমীহ করে বাকিদের আক্রমণ করেছে। তাই মাঝের ওভারে হাতে উইকেট রেখে রানের গতি ধরে রাখতে পেরেছে। শিমরন হেটমায়ারের সঙ্গে ধওয়নের ৫২ রানের জুটিই দিল্লিকে পৌঁছে দেয় ১৮৯-৩ স্কোরে। জবাবে হায়দরাবাদ আটকে যায় ১৭২-৮ রানে। নেপথ্যে রাবাডা ও স্টোয়নিসের দুরন্ত বোলিং। ১৭তম ওভারে উইলিয়ামসনকে ফিরিয়ে দেয় স্টোয়নিস। ১৯তম ওভারে আব্দুল সামাদ, রশিদ খান ও শ্রীবৎস গোস্বামীর উইকেট নিয়ে দিল্লির জয় নিশ্চিত করে রাবাডা। ২৯ রানে চার উইকেট নিয়ে বেগুনি টুপির তালিকায় পিছনে ফেলে দিল যশপ্রীত বুমরাকেও। লড়াকু উইলিয়ামসনের জন্য কিন্তু খারাপ লাগছে। একমাত্র উইলিয়ামসনই হায়দরাবাদ শিবিরে জয়ের আশা জাগিয়ে তুলেছিল। সামাদও খারাপ সঙ্গ দেয়নি। কিন্তু রাবাডার ইয়র্কার তুলে মারতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনে জম্মু ও কাশ্মীরের ব্যাটসম্যান।