কোচ ট্রেভর বেইলিসের সঙ্গে ডেভিড ওয়ার্নার ও জনি বেয়ারস্টো। —ছবি ট্যইটার।
ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিটা সিরিজেই এখন অস্ট্রেলিয়া দলের নেটে দেখা যায় তাঁকে। এমনকি, গত বছর ৫০ ওভারের বিশ্বকাপেও ডেভিড ওয়ার্নারদের সঙ্গে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন কেরলের বাঁ-হাতি স্পিনার কে কে জিয়াস। লক্ষ্য ছিল, অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের স্পিনের বিরুদ্ধে তৈরি করে দেওয়া। বা বলা ভাল, চায়নাম্যানের বিরুদ্ধে তৈরি করে দেওয়া!
এ বারও কুলদীপ যাদবের মোকাবিলায় ওয়ার্নারের দল তৈরি হচ্ছে কেরলের এই চায়নাম্যান স্পিনারকে খেলেই। তবে ওয়ার্নারের অস্ট্রেলিয়া নয়। ওয়ার্নারের সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদ। নেটে এত দিন জিয়াসের চায়নাম্যান আর গুগলির সামনে প্রস্তুতি নিয়েই আজ, শনিবার, আবু ধাবিতে কলকাতা নাইট রাইডার্সের মোকাবিলায় নামছে সানরাইজ়ার্স।
অস্ট্রেলীয় দলে ওয়ার্নারের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে সানরাইজ়ার্সের নেট বোলার হিসেবে ডাক পেতে সমস্যা হয়নি জিয়াসের। প্রথম দিন থেকেই তিনি ছিলেন দলের প্রস্তুতিতে। দুবাই থেকে জিয়াস বলছিলেন, ‘‘নিভৃতবাসের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই নেটে বল করা শুরু করেছি। ওয়ার্নার, বেয়ারস্টোরা পরে এল। তার আগে নেটে সবাইকেই বল করেছি আমি। সেটাই তো আমার কাজ।’’
ঠিক কী ভাবে কেকেআরের চায়নাম্যান বোলার, কুলদীপকে খেলার প্রস্তুতি চলছে সানরাইজ়ার্সের নেটে? জানা গেল, গুগলি করার উপরে জোর দিতে বলা হয়েছে জিয়াসকে। বিশেষ করে ডান-হাতি ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে। চায়নাম্যানের গুগলি বা ‘রং ওয়ান’ ডান-হাতি ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে বাইরে চলে যায়। যে বলটা বুঝতে অনেক ব্যাটসম্যানেরই সমস্যা হয়ে থাকে। তার ওপর বাইরে যাওয়া বলে বড় শট খেলা সহজ নয়। এর পাশাপাশি প্রথাগত চায়নাম্যান (ডান-হাতি ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে কব্জির মোচড়ে স্পিন করে ভিতরে আসা বল) এবং ফ্লিপারও করতে হচ্ছে জিয়াসকে। অর্থাৎ যে বলটা স্পিন না করে গতির সঙ্গে ‘স্লাইড’ করে ডান-হাতি ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে সোজা চলে যাবে।
ডেভিড ওয়ার্নার-জনি বেয়ারস্টো তো পরে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। ওঁরাও কি আপনার স্পিনের বিরুদ্ধে নেট প্র্যাক্টিস করেছে? প্রশ্নের জবাবে জিয়াস বলেছেন, ‘‘অবশ্যই। ওয়ার্নাররা অনেকটা সময় আমার বোলিংয়ের বিরুদ্ধে অনুশীলন করেছে। ওদেরও আমি নেটে প্রচুর গুগলি করেছি।’’
নেটে চায়নাম্যানের বিরুদ্ধে ব্যাট করা ওয়ার্নারদের প্রস্তুতির একটা অংশ হলে, দু’নম্বরটা হল ভিজে বলের মহড়া। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে শিশির নিয়ে ইতিমধ্যেই অঙ্ক কষা শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি দলই মোটামুটি শিশির মাথায় রেখে রণকৌশল সাজাচ্ছে। ব্যতিক্রম নয় সানরাইজ়ার্সও। দুবাইয়ে পা রেখেই ওয়ার্নার বলেছিলেন, ‘‘এখানে রাতে শিশির পড়ার কথা মাথায় রাখতেই হবে। যে কারণে ভেজা বলে প্রস্তুতি নেওয়াটা খুবই জরুরি।’’
ঠিক সেটাই করছে সানরাইজ়ার্স। জানা গেল, নেটে ভিজে বলে শুধু স্পিনাররাই নন, পেসাররাও অনুশীলন করছেন। এমনকি ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে ওই ভিজে বল। শহর থেকে অনেক দূরে, ফাঁকা জায়গায় আবু ধাবির শেখ জ়ায়েদ স্টেডিয়াম। যে কারণে শিশির পড়ার আশঙ্কা থাকে। এখানে দুটো ম্যাচেই টসজয়ী দল ফিল্ডিং নিয়েছিল শিশিরের কথা মাথায় রেখে। প্রথম ম্যাচে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস রান তাড়া করে সহজেই ম্যাচ জেতে। কিন্তু কেকেআর পারেনি। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিশাল স্কোরের সামনে ‘ডিউ ফ্যাক্টর’ কোনও কাজেই আসেনি।
সানরাইজ়ার্স অবশ্য কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না। নিজেদের প্রথম ম্যাচের আগেই দলের অন্যতম সেরা অস্ত্র, লেগস্পিনার রশিদ খান বলেছিলেন, ‘‘শিশিরের কথা মাথায় রেখে আমরা ভেজা বলেই অনুশীলন করছি।’’ সেই অনুশীলনে ভাঁটা পড়েনি। জোড়া মহড়ার ফল কী দাঁড়ায়, সেটাই এখন দেখার।