এঁদের অনেকের নাম সে ভাবে শোনা যায়নি এই টুর্নামেন্টের আগে। কেউ বা এ বারের টুর্নামেন্টেই নিজেকে মেলে ধরেছেন। এ বছরের আইপিএল তৈরি করেছে এই তারকাদের যাঁদের ভবিষ্যতে ভারতীয় দলে দেখা যেতেই পারে। কেমন হতে পারে তাঁদের নিয়ে তৈরি একাদশ? দেখে নেওয়া যাক।
দেবদত্ত পাড়িকাল: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর চিনিয়ে দিয়েছে এমন এক বাঁহাতি ওপেনারকে যে ভবিষ্যতে হয়ে উঠতেই পারে ভারতীয় দলের সম্পদ। ১৫ ম্যাচে ৪৭৩ রান করে এ বারের টুর্নামেন্টে দলের হয়ে সর্বাধিক রান করেছেন তিনিই। টপকে গিয়েছেন বিরাট কোহালিকেও।
ঈশান কিশান: বিহারের তরুণ এই উইকেটকিপার বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনিও তৈরি ঋষভ পন্থ, সঞ্জু স্যামসনদের চ্যালেঞ্জ জানাতে। ধোনি অবসর নেওয়ার পর ভারতীয় দলের উইকেটকিপারের জায়গাটি এখনও কেউ নিশ্চিত করতে পারেননি। ফাইনালের আগে ১৩ ম্যাচ খেলে তাঁর সংগ্রহ ৪৮৩ রান। রয়েছে ৪টি হাফ সেঞ্চুরি।
সূর্যকুমার যাদব: মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের এই ব্যাটসম্যানের বয়স ৩০ পেরলেও এখনও জাতীয় দলে খেলা হয়নি। যদিও প্রতিভা কম নেই তাঁর। অনেকেই বলেন তিনি হচ্ছেন অমল মুজুমদারদের মতো সম্ভাবনাময় তারকা যাঁরা ঘরোয়া ক্রিকেটে দুরন্ত খেললেও জাতীয় দলে জায়গা হয় না। ১৫ ম্যাচে ৪টি হাফ সেঞ্চুরি-সহ তাঁর রান ৪৬১।
প্রিয়ম গর্গ: উত্তরপ্রদেশের তরুণ এই ক্রিকেটার অনভিজ্ঞ হলেও সুযোগ পেলেই তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন। নজর কেড়েছেন এ বারের আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে। বয়স ২০ না পেরলেও তাঁর ব্যাট কিন্তু ঘুম কেড়ে নিতে পারে প্রতিপক্ষ বোলারদের।
রাহুল তেওয়াটিয়া: এ বারের আইপিএলের আরেক আবিষ্কার এই রাহুল। ব্যাট হাতে ১৪ ম্যাচে ২৫৫ রান যেমন করেছেন, তেমনই নিয়েছেন ১০টি উইকেট। ভারতীয় দলের জন্য নতুন এক অলরাউন্ডার যে তৈরি তা দেখিয়ে দিল আইপিএল ২০২০।
আবদুল সামাদ: জম্মু কাশ্মীরের এই তরুণ ক্রিকেটারকে খুঁজে আনার জন্য বাহবা পেতেই পারেন ইরফান পাঠান। ধ্বংসাত্মক এই ব্যাটসম্যান ১২ ম্যাচে ১১১ রান করলেও, স্ট্রাইক রেট ১৭০.৭৬। বল হাতে একটি উইকেটও আছে। আরও একটু পরিণত হলে ফিনিশার হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেটে যে তাঁকে দেখা যাবে না, এ কথা বলা যায় না।
শিবম মাভি: কলকাতা নাইট রাইডার্সের অনেক না পাওয়ার মাঝে একটা পাওয়া অবশ্যই শিবম। ৮ ম্যাচে ৯ উইকেট নেওয়া এই তরুণ পেসারের কৃতিত্ব অবশ্যই প্যাট কামিন্সের মতো পেসারের সঙ্গে বল করেও নজর কেড়ে নেওয়া। আরও বেশি সুযোগ পেলে তিনি যে নিজেকে প্রমাণ করতে পারতেন তা বলাই বাহুল্য।
রবি বিষ্ণোই: কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের এই লেগ স্পিনারের দখলে ১৪ ম্যাচে ১২টি উইকেট। রাজস্থানের এই ক্রিকেটার ইতিমধ্যেই অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলের হয়ে খেলে ফেলেছেন। ভারতীয় দলের স্পিনারদের দৌড়ে তিনি নিজেকে নিয়ে আসতে পারেন কি না তা সময় বলবে।
কার্তিক ত্যাগী: সদ্য ২০তম জন্মদিন পেরনো উত্তরপ্রদেশের এই পেসার কিন্তু প্রতি ম্যাচেই ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলেছেন। ১০ ম্যাচে ৯ উইকেট নেওয়া কার্তিকের রান বেশি দিয়ে ফেললেও তাঁর বোলিং নজর কেড়েছে অনেকের। ভারতীয় পেস অ্যাটাকে এখনই তাঁকে দেখা না গেলেও নিজেকে ভবিষ্যতের জন্য অবশ্যই তৈরি করবেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলা এই পেসার।
বরুণ চক্রবর্তী: কলকাতা দলে বড় চমক এ বারের আইপিএলে বোধ হয় তিনিই ছিলেন। ১৩ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে পাকা করে ফেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়াগামী বিমানের টিকিট। কিন্তু চোটের জন্য শেষ পর্যন্ত তাঁর যাওয়া হচ্ছে না। তবে নির্বাচকদের নজরে যে এসেছেন তা বোঝাই যাচ্ছে। পরের সুযোগ পেতে যাতে খুব বেশি দেরি না হয় সেই আশাই করবেন বরুণ।
টি নটরাজন: বর্তমানে ভারতীয় পেস অ্যাটাক বিশ্ববন্দিত হলেও বাঁহাতি পেসারের অভাব এখনও রয়েছে। সেই অভাব মেটাতে সুযোগ দেওয়া যেতেই পারে ৩০ ছুঁইছুঁই এই পেসারকে। ১৬ ম্যাচে তিনি নিয়েছেন ১৬ উইকেট। চোটের জন্য বরুণের সর্বনাশ হলেও তা পৌষ মাস হয়ে গিয়েছে নটরাজনের কাছে। ভারতের টি২০ দলে জায়গা পেয়ে গিয়েছেন তিনি।