গৌতম গম্ভীর
নিলামের সর্বোচ্চ দরের ক্রিকেটার হিসেবে প্যাট কামিন্সকে তুলে নিলেও কাটাছেঁড়ার মুখে পড়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের নিলাম পারফরম্যান্স। প্রাক্তন নাইট অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর, যাঁর অধীনে প্রথম আইপিএল জিতেছিল কেকেআর, তিনি তুলোধনা করেছেন নাইট কর্তাদের।
গম্ভীরের বক্তব্য, কেকেআর নিলাম থেকে দলটাকে সাজাতেই পারেনি। তাঁর ব্যাখ্যা, ভাল অলরাউন্ডার নিতে পারেনি শাহরুখ খানের ফ্র্যাঞ্চাইজি। টি-টোয়েন্টি লিগে প্রত্যেক ক্রিকেটারের বিকল্প তৈরি রাখতে হয়। লম্বা প্রতিযোগিতায় কখন কোন ক্রিকেটার চোট-আঘাতের ধাক্কায় ভেঙে পড়ে। তখন সেই একই ধরনের কাউকে তৈরি রাখতে হবে তাঁর জায়গায় খেলানোর জন্য। সেই ভাবনাও কেকেআরের নিলাম নীতিতে চোখে পড়েনি বলে মনে করছেন গম্ভীর। ‘‘কেকেআরের দলটার দিকে তাকালে দেখা যাবে আন্দ্রে রাসেলের কোনও ব্যাক-আপ নেই। অইন মর্গ্যান বা সুনীল নারাইনের কিছু হলে কী হবে, তা-ও কেউ জানে না,’’ বিশ্লেষণ গম্ভীরের। যোগ করছেন, ‘‘বিশেষ করে যদি মর্গ্যানের চোট লাগে, কে খেলবে তার জায়গায়? আর কোনও বিদেশি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানই তো নেয়নি কেকেআর।’’
কলকাতার নিলামে সব চেয়ে বেশি টাকা দিয়ে ক্রিকেটার কিনেছে নাইট রাইডার্স। অস্ট্রেলীয় পেসার প্যাট কামিন্সকে তারা নেয় ১৫.৫ কোটি টাকায়। পেসার নেওয়ার কারণ অবশ্যই নিজেদের ঘরের মাঠ ইডেনের বাইশ গজের পাল্টে যাওয়া চরিত্রের কথা ভেবে। আগের মতো আর স্পিন-সহায়ক নয়, ইডেনে এখন পেস-বন্ধু উইকেট হচ্ছে। পিচে ঘাসও রাখা হয়। গম্ভীরও মানছেন, ‘‘পেস বোলিং বিভাগটা ঠিক আছে। কামিন্সের চোট লাগলে লকি ফার্গুসন আছে। কিন্তু উপরের দিকের ব্যাটিংয়ে বিকল্প রাস্তা খোলা রাখা হয়নি।’’
আরও পড়ুন: দ্রাবিড়ের সঙ্গে আলোচনা করে মেটাতে চান সৌরভ
অনেকেরই মনে হচ্ছে, নাইট রাইডার্সের ব্যাটিং বিভাগ খুব বেশি এক-দু’জনের উপর নির্ভরশীল না হয়ে পড়ে। যেমন ওপেনার হিসেবে সম্ভবত তারা ব্যবহার করবে রাহুল ত্রিপাঠী এবং সুনীল নারাইনকে। প্রথম জনের অভিজ্ঞতা কম, দ্বিতীয় জন পিঞ্চ হিটার হিসেবে পরিচিত। মিডল অর্ডারে শুভমন গিল, দীনেশ কার্তিক, অইন মর্গ্যান। টি-টোয়েন্টিতে খুব অভিজ্ঞ এবং সফল লাইন-আপ বলা যাবে না। ফের তাই তাকিয়ে থাকতে হতে পারে আন্দ্রে রাসেলের ছক্কা বৃষ্টির দিকে। রাসেল ছাড়া আর কোনও পাওয়ারহিটারও নেই কেকেআরে।
বোলিং বিভাগও যে খুব পোক্ত দেখাচ্ছে, জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। ভাল কোনও ভারতীয় পেসার নেই তাদের হাতে। সেই প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ বা সন্দীপ ওয়ারিয়েরের উপর ভরসা করতে হবে। প্যাট কামিন্স, লকি ফার্গুসন এবং হ্যারি গার্নি রয়েছেন বিদেশি পেসারদের মধ্যে। স্পিন বিভাগে নারাইন এবং কুলদীপ যাদব তুরুপের তাস। কিন্তু রহস্য স্পিনার বরুণ চক্রবর্তীকে চার কোটিতে কেনা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গত বছর আট কোটির উপরে দাম উঠেছিল বিস্ময় স্পিনার বরুণের। কিন্তু একটি মাত্র ম্যাচ খেলে চোটের জন্য ছিটকে যান। ৪৮ বছরের প্রবীণ তাম্বেকে নেওয়া নিয়েও হাসাহাসি হচ্ছে। প্রবীণ আবার বলেছেন, তিনি নাকি নাইট শিবিরে কুড়ি বছরের তারুণ্যের ফূর্তি আনবেন!
শুনে কেউ কেউ বলে ফেলছেন, ‘‘আহা, প্রবীণ হবে নবীন!’’