ক্ষিপ্ত: যে ছবি এর আগে কখনও দেখেনি ক্রিকেটমহল। নো বল না দেওয়া নিয়ে আম্পায়ারদের সঙ্গে মাঠে ঢুকে তর্ক শুরু ধোনির। আইপিএল
বিশ্বক্রিকেটে তিনি পরিচিত ‘ক্যাপ্টেন কুল’ হিসেবে। কিন্তু শীতলমস্তিষ্কের মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মাথা যখন গরম হয়ে যায়, তখন কী হতে পারে?
বৃহস্পতিবার সেই মুহূর্তের সাক্ষী রইল জয়পুরের সোয়াই মান সিংহ স্টেডিয়ামও। ১৯.৪ ওভারে বেন স্টোকসের বল বুক সমান উচ্চতায় ধেয়ে আসে মিচেল স্যান্টনারের দিকে। সঙ্গত কারণেই তিনি আম্পায়ারের কাছে নো বলের আবেদন জানান। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দিতে চাননি আম্পায়াররা। আর তখনই ক্ষিপ্ত ধোনি মাঠে ঢুকে পড়েন। কেন নো বল দেওয়া হবে না, তা নিয়ে তর্ক শুরু করে দেন তিনি। পঞ্চম বলে দু’রান নেন স্যান্টনার। স্টোকসের শেষ বল ওয়াইড হয়। পরের বলই স্যান্টনার পাঠিয়ে দেন গ্যালারিতে। রক্তচাপ বাড়িয়ে চার উইকেটে জয় পায় চেন্নাই সুপার কিংস। অধিনায়ক ধোনি উপহার দেন ৪৩ বলে ৬৮ রানের ইনিংস। শুধু তাই নয়। শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যেতে যেতেও যে বিশাল ছক্কা হাঁকানো সম্ভব, তা-ও দেখিয়ে দিলেন রবীন্দ্র জাডেজা। শেষ ওভার স্টোকসের প্রথম বলে ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে পড়ে যান জাডেজা। কিন্তু তারই মধ্যে সপাটে ব্যাট চালিয়ে বল পাঠিয়ে দেন গ্যালারিতে। মজার ব্যাপার, ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান বেন স্টোকসও। মাটিতে শুয়েই তিনি দেখলেন জাডেজার শট পৌঁছে গিয়েছে গ্যালারিতে।
ম্যাচের সেরা সেই ধোনি। যিনি চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে এ দিনই জয়েরও সেঞ্চুুরি করে ফেললেন। ধোনি মেনে নিলেন, রাজস্থান বোলাররা তাঁদের উপর চাপ তৈরি করেছিলেন। সেরার পুরস্কার নিয়ে রসিকতা করে সঞ্চালককে বলেও দিলেন, ‘‘পুরস্কার নিতে আসার সময়ে আমি ভাবছিলাম, এ বার হয়তো আম্পায়ারদের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।’’ ধোনির সঙ্গে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৯৫ রান যোগ করা অম্বাতি রায়ডু (৪৭ বলে ৫৭) বলেছেন, ‘‘ম্যাচটা এক সময়ে খুবই কঠিন হয়ে গিয়েছিল। তবে ধোনি বলেছিল, নিজের উপর বাড়তি চাপ তৈরি না করে রানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। ধোনি উইকেটে থাকার অর্থ যে কোনও সময়ে ম্যাচের রং পাল্টে যাবে। সেটাই হল।’’
টানা হারে বিধ্বস্ত রাজস্থান রয়্যালস এ দিনও তেমন বড় ইনিমস তৈরি করতে পারেনি। আগে ব্যাট করে আটকে যায় ১৫১ রানে। তাও শেষ ওভারে শার্দূল ঠাকুর ১৮ রান দেওয়ায় দেড়শোর গণ্ডি টপকায় তারা।
চেন্নাই বোলারদের মধ্যে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন দীপক চাহার, রবীন্দ্র জাডেজা, শার্দূল ঠাকুর। জাডেজা মাত্র ২০ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন। অন্য বাঁ হাতি স্পিনার, নিউজ়িল্যান্ডের মিচেল স্যান্টনার ২৫ রান দিয়ে নেন এক উইকেট। এ দিন আইপিএলে নিজের একশো উইকেট হয়ে গেল জাডেজার। ইনিংসের মাঝে তিনি বলছিলেন, ‘‘আমি এখন খেলাটা খুব উপভোগ করছি। যে ভাবে এখন বল করছি, তাতে আমি খুশি। রাজস্থানের হয়ে আমি আইপিএল খেলা শুরু করেছিলাম। এই মাঠের দর্শকদের সামনে আবার খেলতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’’
এ বারের আইপিএলে ধোনির দলের প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠছে তাঁর তিন স্পিনার। যদিও এই ম্যাচে হরভজন সিংহ খেলছেন না। তাঁর জায়গায় খেলছেন স্যান্টনার। জাডেজা বলেছেন, ‘‘এখানে বল ঘুরছিল। আমি জায়গায় বলটা রাখার চেষ্টা করে গিয়েছি।’’