বিরল: সেই মুহূর্ত। বল উইকেটে লাগলেও পড়ল না বেল। টুইটার
রবিবার বিকেলে হায়দরাবাদ দেখেছিল ডেভিড ওয়ার্নার এবং জনি বেয়ারস্টোর ব্যাটিং তাণ্ডব। রাতের চেন্নাই দেখল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সেই পরিচিত মেজাজ।
৪৬ বলে অপরাজিত ৭৫। মারলেন চারটি বাউন্ডারি এবং চারটি ছয়। যার মধ্যে এ বার ৮.৪ কোটি টাকায় রাজস্থান রয়্যালসে যাওয়া বাঁ হাতি পেসার জয়দেব উনাদকাটের শেষ ওভারের শেষ তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকালেন তিনি। স্ট্রাইক রেট ১৬৩.০৪। ৮৮ রানের মধ্যে চার উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপে পড়ে যাওয়া চেন্নাই সুপার কিংস ফের জেগে উঠল ধোনির ব্যাটিংয়েই। যদিও শুরুতেই জোফ্রা আর্চারের বল তাঁর ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটে লাগলেও বেল পড়েনি। সেই সময়ে তাঁর রান ছিল শূন্য। খুব সম্ভবত তখনই স্থির হয়ে গিয়েছিল ম্যাচের ভবিষ্যৎ।
তবে টানা তিন ম্যাচে জিতেও আগের মতোই নির্বিকার সিএসকে অধিনায়ক। ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিতে এসে ধোনি বলে গেলেন, ‘‘আমি যে সময়ে খেলতে নেমেছিলাম, তখন দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটা বড় পার্টনারশিপের প্রয়োজন ছিল। সেটা মনে রেখেই আমরা খেলেছি।’’ এ দিনের দলে হরভজন সিংহ ছাড়া অন্য কোনও পরিবর্তন হয়নি। ধোনির মন্তব্য, ‘‘লোকে ঘনঘন দলে পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে অনেক কথাবার্তা বলেন। কিন্তু আমি মনে করি, একান্তই প্রয়োজন না পড়লে দল অবিকৃত রাখাই ভাল। আর তা ছাড়া রাজস্থান রয়্যালস দলে ডান হাতি ব্যাটসম্যানের সংখ্যা বেশি বলেই হরভজনকে খেলাইনি।’’ বরং ইমরান তাহিরের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘‘শিশিরের জন্য এই উইকেটে ফিঙ্গার স্পিনারদের কাজ সহজ হত না। তাই রিস্ট স্পিনার ব্যবহার করেছি। ইমরান কিন্তু এ দিন দারুণ বল করেছে।’’
ক্রিকেটবিশ্ব একবাক্যে কুর্নিশ করে তাঁর ক্রিকেট মস্তিষ্কের। রবিবার যা আরও একবার দেখা গেল। চেন্নাই ইনিংসের ৪.৫ ওভারে কেদার যাদব যখন ফিরলেন, সিএসকের রান মাত্র ২৭। তখন ব্যাট করতে নামলেন ধোনি। কোনও তাড়াহুড়ো নেই। দীর্ঘদিনের আর এক অভিজ্ঞ সঙ্গী সুরেশ রায়নাকে নিয়ে ধীরে ধীরে রানকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন সিঙ্গলস নিয়ে। তারই মধ্যে রায়না অবশ্য ছিলেন আগ্রাসী মেজাজেই। ৩২ রানে ৩৬ রান করেন তিনি। ইনিংসে ছিল চারটি বাউন্ডারি এবং একটি ছয়। রায়নাকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ধোনি তুললেন মূল্যবান ৬১ রান। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দিলেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার ডোয়েন ব্র্যাভো (১৬ বলে ২৭ রান)। তাঁকে নিয়ে ধোনি তুললেন আরও ৫৬ রান।
ইমরান তাহির সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ধোনির নেতৃত্বেই তাঁরা ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছেন। হলও তাই। প্রথমার্ধে চেন্নাই সুপার কিংস অধিনায়ক যেখানে থামলেন, সেখান থেকে টানা তিন নম্বর ম্যাচ জয়ের অভিযান শুরু করলেন ইমরান তাহিররা। ধাক্কা দিলেন দুই পেসার দীপক চাহার এবং শার্দূল ঠাকুর। মাত্র ১৪ রানের মধ্যে ফেরেন অজিঙ্ক রাহানে, জস বাটলার এবং সঞ্জু স্যামসন। ধোনির কথায়, ‘‘ঠিক করেছিলাম, এই উইকেটে জোরে বোলাররা শুরুতে কতটা ধাক্কা দিতে পারছে সেটা দেখে নিয়ে স্পিনারদের তাড়াতাড়ি নিয়ে আসার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করব। তবে দুই পেসার দারুণ বল করেছে।’’
শেষ ওভারে ১২ রানের দরকার ছিল। ডোয়েন ব্র্যাভো তুলে নিলেন দু’উইকেট। উঠল তিন রান। আট রানে ম্যাট জিতে চেন্নাই সুপার কিংস স্বমেজাজে। টানা তিন ম্যাচে জিতে টেবলের শীর্ষে ধোনির দল (৬ পয়েন্ট)।