ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থার প্রধান নরেন্দ্র বাত্রা।—ফাইল চিত্র।
কমনওয়েলথ গেমসের কোনও গুরুত্ব নেই বলে ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থার প্রধান নরেন্দ্র বাত্রা যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে ঝড় উঠেছে দেশের ক্রীড়া মহলে। ক্রীড়া কর্তারা বেশিরভাগ নিশ্চুপ থাকলেও, ক্রীড়াবিদরা কিন্তু পুরোপুরি উল্টো কথা বলছেন। কেউ কেউ তো রীতিমতো ক্ষুব্ধ বাত্রার এই মন্তব্যে।
বেঙ্গালুরুতে এক অনুষ্ঠানে বাত্রা মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘কমনওয়েলথ গেমসের মান ভাল নয় এবং ভারতের এই প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোই উচিত।’’ এর আগে কমনওয়েলথ গেমস থেকে শুটিংকে বাতিল করার কারণে ২০২২ সালের প্রতিযোগিতা বয়কট করার ডাক দিয়েছিলেন বাত্রা। কমনওয়েলথ গেমস নিয়ে আবার নিজের মনোভাব প্রকাশ করলেন তিনি। যা নিয়েই বিতর্ক শুরু।
গত বছর কমনওয়েলথ গেমস টেবল টেনিসে জোড়া রুপোজয়ী জি সাতিয়ান বলেছেন, ‘‘এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’ অলিম্পিক্সে ভারতের একমাত্র পদকজয়ী বক্সার বিজেন্দ্র সিংহের মন্তব্য, ‘‘এ রকম কথা শুনে খুবই খারাপ লাগছে। এই যুক্তি মেনে নিলে তো কোনও আমন্ত্রণমূলক প্রতিযোগিতায় দল পাঠানোই উচিত নয়। কারণ সে সব প্রতিযোগিতার মানও অলিম্পিক্স বা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের মতো নয়।’’ তিনটি কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নিয়ে দুটি রুপো এবং একটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন বিজেন্দ্র। ভারতীয় তারকা বক্সারের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘অ্যাথলিটদের কৃতিত্ব খাটো করে লাভ কী? তা ছাড়া কমনওয়েলথ গেমসে কিন্তু ইংল্যান্ডের মতো দেশ অংশ নেয়, যারা বক্সিংয়ে খুব শক্তিশালী বলে পরিচিত।’’
শুটারদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বাত্রাকে ধন্যবাদ দিয়েও তাঁর সঙ্গে একমত হতে পারছেন না যশপাল রানা। ভারতের এই প্রাক্তন শুটার বলেছেন, ‘‘কমনওয়েলথের মতো প্রতিযোগিতাই অলিম্পিক্সের জন্য অ্যাথলিটদের তৈরি করে দেয়।’’
কমনওয়েলথ গেমসের সোনাজয়ী ব্যাডমিন্টন তারকা পারুপল্লি কাশ্যপও মানতে পারছেন না বাত্রার কথা। কাশ্যপ বলেছেন, ‘‘কমনওয়েলথ গেমস বয়কটের ভাবনাটাই অদ্ভুত। আমার মনে হয় না ওই প্রতিযোগিতা আদৌ নিম্ন মানের। আমি যখন পদক জিতেছিলাম (২০১০ সালে ব্রোঞ্জ, ২০১৪ সালে সোনা), তখন অনেক শক্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলাই করতে হয়েছিল।’’ ২০১০ কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী ডিসকাস থ্রোয়ার কৃষ্ণা পুনিয়া মনে করেন, এই প্রতিযোগিতার অ্যাথলেটিক্সের মান অনেক ভাল। তিনি বলেছেন, ‘‘অ্যাথলিটদের জন্য কমনওয়েলথ গেমস বিশ্বমানের প্রতিযোগিতা। এমনকি এশিয়ান গেমসের চেয়েও কঠিন।’’