ফাইল চিত্র।
অপেক্ষা আর কয়েক দিনের। তার পরেই স্পষ্ট হয়ে যাবে লাল-হলুদের ভবিষ্যৎ!
চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করা নিয়ে বিনিয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের সংঘাত তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে। সূত্রের খবর দু’-এক দিনের মধ্যে লগ্নিকারী সংস্থার তরফে ফের চিঠি দেওয়া হবে ইস্টবেঙ্গলকে। বলা হবে, ৩১ মে-র মধ্যে জানাতে হবে লাল-হলুদ কর্তারা চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করবেন কি না। যদি তাঁরা রাজি না হন, তা হলে এফএসডিএল (আইএসএলের আয়োজক ফুটবল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড)-কে জানিয়ে দেওয়া হবে, অষ্টম আইএসলে দল নামাবে না এসসি ইস্টবেঙ্গল। ছেড়ে দেওয়া হবে ফুটবলারদেরও।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে প্রাথমিক চুক্তি হয়েছিল নতুন লগ্নিকারী সংস্থা ও ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে। কিন্তু তার পর থেকেই লাল-হলুদ কর্তারা অভিযোগ করতে শুরু করেন, প্রাথমিক ও চূড়ান্ত চুক্তির মধ্যে একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। লগ্নিকারী সংস্থার শর্ত মেনে নিলে সদস্যদের অধিকার খর্ব হবে। তাই যত ক্ষণ না তাঁদের সুপারিশ অনুযায়ী পরিবর্তন করা হচ্ছে, চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করবেন না তাঁরা। লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা প্রথম থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। গত ২৪ মার্চ তাঁরা প্রথম চিঠি দেন ইস্টবেঙ্গলকে। সেই সঙ্গে পাঠান প্রাথমিক ও চূড়ান্ত চুক্তিপত্রের খসড়া। কোথায় অসঙ্গতি রয়েছে তা দ্রুত জানাতে বলা হয়। এক মাস চার দিন পরে সেই চিঠির জবাব দিয়েছিলেন লাল-হলুদের কর্তারা! যদিও আশ্চর্যজনক ভাবে উল্লেখ করেননি, প্রাথমিক ও চূড়ান্ত চুক্তিপত্রের মধ্যে কী কী অসঙ্গতি রয়েছে। পাশাপাশি তাঁরা প্রস্তাব দিয়েছিলেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানসূত্র খোঁজার। এর পরে ১২ মে লগ্নিকারী সংস্থার তরফে দ্বিতীয় বার চিঠি দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গলের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে বলা হয়, গত বছরের ১৭ অক্টোবর-ই জানানো হয়েছিল প্রাথমিক ও চূড়ান্ত চুক্তিপত্রের মধ্যে কী কী অসঙ্গতি রয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়, ফুটবল স্বত্ব যে-হেতু লগ্নিকারী সংস্থার হাতেই রয়েছে, তাই দল গঠন করতে কোনও সমস্যা নেই। এখানেই শেষ নয়। পরিস্থিতি যে ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝতে পেরে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা নতুন দাবি করেন, এটিকে ও মোহনবাগানের সংযুক্তিকরণ যে ভাবে হয়েছিল, সেই শর্ত মেনেই নতুন চুক্তি করা হোক। লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা সেই সম্ভাবনাও খারিজ করে দিয়েছেন। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, চূড়ান্ত চুক্তিতেই স্বাক্ষর করতে হবে। এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তারা। লগ্নিকারী সংস্থার তৃতীয় চিঠি পাওয়ার পরে কী পদক্ষেপ করা হবে তা নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, লগ্নিকারী সংস্থার শর্ত মেনে চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করার সম্ভাবনাই বেশি ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। শেষ পর্যন্ত তা হবে কি না, তা নিয়েই জল্পনা তুঙ্গে।