ফাইল ছবি।
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কার্যকরী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হল, চুক্তিপত্রে সই করা হবে না। সদস্যরা ক্লাব সচিবকে জানিয়ে দিয়েছেন, বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তিপত্রে সই করা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার সুস্থ সমাধান হলে তাঁরা ক্লাবের সঙ্গে আছেন। ক্লাবের সুরক্ষা যদি না থাকে, তাহলে তাঁরা পদত্যাগ করবেন। বিনিয়োগকারী সংস্থা শ্রী সিমেন্ট এখন মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ করা হয় ক্লাবের পক্ষ থেকে। যদিও শ্রী সিমেন্টের পক্ষ থেকে আরও একবার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ক্লাবকে আগে চুক্তিপত্রে সই করতে হবে, তারপর আলোচনা হবে। চুক্তিপত্রে সই না হলে বিনিয়োগকারী সংস্থা একটা পয়সাও খরচ করবে না।
শ্রী সিমেন্টের কর্ণধার হরিমোহন বাঙুর আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে যে চুক্তিপত্রে সই হয়েছিল, সেটাই গ্রাহ্য হবে। এই নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, ‘‘বারবার বলা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে কথা হয়েছে। সে তো হয়েইছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কি চুক্তিপত্রের পাতা উল্টে দেখেছেন যে, প্রথমে কী ছিল, আর পরে কী ঢোকানো হয়েছে? ওঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যবহার করে ম্যাচ জিততে চাইছেন। এতে কোনও লাভ হবে না। কারণ মুখ্যমন্ত্রী জানেন আমরা এই অপরাধ করতে পারি না।’’
দেবব্রত বললেন, ‘‘সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় দেখা গেল, খসড়া চুক্তিপত্র তৈরি হওয়ার পর চূড়ান্ত চুক্তিপত্র যখন তৈরি হয়েছে, সেখানে বহু বিষয় আলাদা করে যোগ করা হয়েছে। চূড়ান্ত চুক্তিপত্রটা ক্লাব বিক্রি করে দেওয়ার চুক্তিপত্র হয়েছে। এটা এগ্রিমেন্ট নয়, সেল এগ্রিমেন্ট হয়ে যাচ্ছে। ক্লাব বিক্রি করার ক্ষমতা আমাদের নেই। আমাদের আইজীবীরাও তাই বলছেন। আমরা কেয়ারটেকার। সদস্যরাই আমাদের কেয়ারটেকার হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। কেয়ারটেকার কখনও এই চুক্তিপত্রে সই করতে পারে না।’’
বারবার বিনিয়োগকারী সংস্থা শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে বসতে চাওয়া হচ্ছে কেন, জানতে চাইলে দেবব্রত বলেন, ‘‘আজকের বৈঠকে এটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সবাই একমত যে, কোথায় কোথায় আমাদের আপত্তি, বা কোথায় তোমরা ভুল, সেটা নিয়ে আমরা চিঠি দিয়েছি। তোমরা যদি সেটা বুঝতে না পার, তাহলে তোমাদের বোঝানোর একটা সুযোগ সবসময় আমাদের প্রাপ্য।’’
কিন্তু এই ডামাডোলে দল গঠনই তো আটকে যাচ্ছে। দেবব্রত সরকার বললেন, ‘‘ফুটবল স্বত্ব তো ওদের (বিনিয়োগকারী) হাতেই রয়েছে। দল তৈরি করার ক্ষেত্রে কোনও জায়গায় অসুবিধে নেই। যুগ যুগ ধরে ওরা দল করতে পারবে। কিন্তু এর বাইরে যেগুলো চাইছে, যেমন ক্লাব তাঁবুর স্বত্ব, এগুলো আমরা কোথা থেকে দেব? কোনও সরকার অশোক স্তম্ভ বিক্রি করতে পারে? তাহলে আমার ক্লাবের লোগো কি আমি বিক্রি করতে পারি? কোনও সরকার নবান্ন বেচে দিতে পারে? পারে না।’’
হরিমোহন বাঙুর আনন্দবাজার ডিজিটালকে বললেন, ‘‘ওদের কার্যকরী কমিটির সদস্যরা পদত্যাগ করলেন কিনা, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। এটা ওদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমি কী করে বলব ওঁরা থাকবেন, না পদত্যাগ করবেন।’’
চিঠি, পাল্টা চিঠি কি চলতেই থাকবে? সমস্যার সমাধান কোথায়? শ্রী সিমেন্ট কর্ণধার বললেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমাধান এমনিই হয়ে যাবে। দশ দিন পরে আর কোনও সমস্যাই থাকবে না।’’ ক্লাবের লোগো কিনে নিতে চাইছেন, এই অভিযোগ নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা কিছুই চাইছি না। সবার আগে চুক্তিপত্রে সই হোক। ওঁদের যা বলার আছে, সেটা আমরা তারপর শুনব।’’