শোয়েব আখতার। ফাইল চিত্র
পাক টিভিতে তাঁর করা মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই পাকিস্তান তথা উপমহাদেশের ক্রিকেটমহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে দানিশ কানেরিয়াকে নিয়ে। অবশেষে সেই প্রাক্তন পাক পেসার শোয়েব আখতার ব্যাখ্যা দিলেন, কেন তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তানকে টেস্ট জেতালেও দলে ব্রাত্য ছিলেন কানেরিয়া। শোয়েব এ-ও বলেছিলেন, কানেরিয়ার সঙ্গে খাবার খেতেও অস্বীকার করত দলের অনেকেই।
শনিবার রাতে এ সম্পর্কে শোয়েব বলেন, ‘‘দু’একজন ক্রিকেটার কানেরিয়ার সঙ্গে ধর্ম নিয়ে বৈষম্যমূলক আচরণ করত। আমি সেটা বন্ধ করতেই উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কারণ ধর্ম নিয়ে বৈষম্যমূলক আচরণ পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সংস্কৃতি নয়।’’ যোগ করেন ‘‘কানেরিয়াকে নিয়ে আমার মম্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে যে আলোড়ন হচ্ছে, তা দেখছি। আমি সম্পূর্ণ অন্য একটি বিষয়ে বলতে চেয়েছিলাম।’’
টুইটারে এই বক্তব্যের সঙ্গে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করা একটি ভিডিয়ো আপলোড করেন শোয়েব। যেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের সকলকেই একটা অলিখিত চুক্তি মেনে চলতে হয়। তা হল, প্রত্যেক খেলোয়াড়কে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে। কিন্তু তা মেনে চলতে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের মধ্যে অনীহা দেখা গিয়েছে। যা পাকিস্তান ক্রিকেট দলের শৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে না।’’ আগের বক্তব্য থেকে কিছুটা সরে এসে শোয়েব বলেন, ‘‘এটা দু’একজন ক্রিকেটারের আচরণের ভিত্তিতে সৃষ্টি হয়েছিল। এই ধরনের ক্রিকেটার বিশ্বের সর্বত্রই রয়েছেন। যাঁরা সহ-খেলোয়াড়ের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করে থাকেন।’’
এর পরেই শোয়েব জানান, তিনি দানিশের প্রতি ধর্মীয় বৈষম্যমূলক আচরণের কথা জানার পরেই তা বন্ধ করতে সক্রিয় হয়েছিলেন। যাতে সমাজের প্রতি একটা বার্তা যায়। প্রাক্তন এই পাক পেসারের কথায়, ‘‘সামাজিক ভাবে আমাদের বোঝা উচিত এই ধরনের ধর্মীয় বৈষম্য অঙ্কুরেই বিনাশ করা দরকার। কারণ আমি এই বৈষম্যহীন সমাজেই বেড়ে ওঠার শিক্ষা পেয়েছি। আমি বিষয়টা শুনেই ওই ক্রিকেটারদের বলেছিলাম, কানেরিয়ার ধর্ম নিয়ে বৈষম্যমূলক আচরণ করলে বা কথাবার্তা বললে তোমাদের ছুড়ে বাইরে ফেলে দেব। কারণ এটা পাকিস্তানের সংস্কৃতি নয়।’’ যোগ করেন, ‘‘জাতি হিসেবে আমরা কখনও চাই না এই ধরনের ঘৃণ্য সংস্কৃতি আমাদের সমাজে বিরাজ করুক। তাই আমি তা বন্ধ করেছিলাম।’’
শোয়েব বলেন, ‘‘ও পাকিস্তানকে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছে। তবে কানেরিয়াকে পাকিস্তান বোর্ড শাস্তি দেয়নি। দল থেকে থেকে ও বাদ পড়ে ইসিবির জন্য। গড়াপেটার অভিযোগে শাস্তি পেয়েছিল। পাকিস্তান কিন্তু দানিশের সঙ্গে কোনও খারাপ আচরণ করেনি বা কোনও খারাপ সিদ্ধান্ত নেয়নি।’’