বজরং পুনিয়া। — ফাইল চিত্র।
কুস্তি সংস্থার বিরুদ্ধে কুস্তিগিরদের প্রতিবাদ আবার তীব্র হচ্ছে। শুক্রবার বিকালেই একটি বিবৃতির মাধ্যমে পদ্মশ্রী ফেরানোর ঘোষণা করেছিলেন বজরং পুনিয়া। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই সম্মান ফেরাতে নিজেই রওনা হয়েছিলেন সংসদ ভবনের দিকে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত থাকায় দেখা পাননি। সংসদ ভবনের রাস্তাতেই পদ্মশ্রী ফেলে রেখে এলেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে দু’বারের পদকজয়ী কুস্তিগির। জানিয়ে দিলেন, এই পদক আর বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন না।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সঞ্জয় সিংহ। তিনি যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত কুস্তিকর্তা ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তার পরেই প্রতিবাদে কুস্তি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সাক্ষী মালিক। সেই সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন অলিম্পিক্স পদকজয়ী কুস্তিগির। এ দিন বজরং পদ্মশ্রী ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি।
পরে সাংবাদিকদের বলেন, “আগেই বলেছিলাম, আমি আমার মেয়ে এবং বোনেদের বাঁচানোর জন্য লড়াই করছি। ওদের ন্যায়বিচার এখনও দিতে পারিনি। তাই আমার মনে হয় আর এই সম্মানের যোগ্য নই আমি। এখানে এসেছি নিজের পুরস্কার ফিরিয়ে দিতে। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারিনি কারণ আগে থেকে কিছু জানিয়ে আসিনি। প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ত সূচি রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীকে যে চিঠি লিখেছি, তার উপরেই পুরস্কারটা রেখে দিচ্ছি। এই পদক আর বাড়ি নিয়ে যেতে চাই না।”
শুক্রবার বিকালে বজরং সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানান যে, তিনি পদ্মশ্রী ফিরিয়ে দিচ্ছেন। বজরং তাঁর বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখেন, “আমি আমার পদ্মশ্রী সম্মান ফিরিয়ে দিচ্ছি। আপনি নিশ্চয়ই বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত, তবুও আপনাকে লিখতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ দেশের কুস্তিগিরদের সঙ্গে এমন অনেক কিছু ঘটছে যার প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করা জরুরি।”
বজরং তাঁর চিঠিতে এই বছর জানুয়ারি থেকে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ তাঁরা শুরু করেছিলেন, সেটার উল্লেখ করেন। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ছিল কুস্তিগিরদের। দিল্লির যন্তর মন্তরের সামনে ধর্না দিয়েছিলেন বজরংরা। তিনি বলেন, “আমরা প্রতিবাদ বন্ধ করেছিলাম, কারণ সরকার আমাদের কথা দিয়েছিল ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তিন মাস কেটে গেলেও এফআইআর হয়নি। আমরা আবার প্রতিবাদ শুরু করি। কিন্তু জানুয়ারিতে ১৯টি অভিযোগ থাকলেও তা কমে আসে সাতে। এটা প্রমাণ করে যে ব্রিজভূষণ কতটা প্রভাবশালী। ১২ জন কুস্তিগির প্রতিবাদ করা বন্ধ করে দেন।”
এ দিকে, রিও অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জয়ী সাক্ষী বৃহস্পতিবার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমাকে আর কেউ কখনও কুস্তি লড়তে দেখবে না।” তাঁর পাশে ছিলেন বজরং পুনিয়া। তিনি বলেন, “আমরা আর কুস্তি লড়তে পারব কি না জানি না। রাজনীতি কী ভাবে কাজ করে জানি না।”
(ভ্রম সংশোধন: কুস্তিগির বজরং পুনিয়া তাঁর পদ্মশ্রী সম্মান প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে দিয়ে এসেছেন বলে প্রথমে লেখা হয়েছিল। কিন্তু তিনি এই পদক সংসদ ভবনের সামনের রাস্তা কর্তব্য পথে ফেলে দিয়ে এসেছেন। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।)