পুরুষশাসিত খেলাতেও দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করতে পারে মেয়েরা। দেখিয়ে দিয়েছেন তাঁর দুই দিদি। সেই পথে পা রেখেছেন বোন-ও। মহিলা ক্রীড়াবিদ হিসেবে কুস্তিতে মুখ উজ্জ্বল করেছেন দেশের। তিনি, মহাবীর ফোগতের সেজো মেয়ে ঋতু ফোগত।
ঋতুর জন্ম ১৯৯৪-এর ২ মে, হরিয়ানার বালালিতে। ছোট থেকেই আখড়ায় দিদিদের মহড়া দেখে বড় হয়েছেন। বাবা, প্রাক্তন কুস্তিগীর মহাবীর ফোগতের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় ঋতুর-ও প্রশিক্ষণ। তখন তাঁর বয়স মাত্র আট বছর। খেলায় মন দেবেন বলে দশম শ্রেণিতেই স্কুল ছেড়ে দেন ঋতু। এরপর তাঁর জীবন জুড়ে শুধুই কুস্তি।
মহাবীর ফোগতের পরিবারের মেয়ে মানেই নামী কুস্তিগীর। গত কয়েক দশক ধরে এটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিচিত রীতি। মহাবীর ফোগতের বড় ও মেজো মেয়ে, গীতা ও ববিতা দু’জনেই কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণপদক জিতেছেন।
গীতা-ববিতা এবং মহাবীর ফোগতের লড়াই সেলুলয়েডবন্দি হয়েছে আমির খানের ‘দঙ্গল’ ছবিতে। তবে মহাবীর ফোগতের লড়াই ওখানেই শেষ হয়ে যায়নি। তিনি হাতে ধরে তৈরি করেছেন পরিবারের বাকি মেয়েদেরও।
কমনওয়েলথ গেমসে সোনা পেয়েছেন ভিনেশ ফোগত। প্রিয়ঙ্কা ফোগত-ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে পরিচিত নাম। দু’জনেই ফোগত পরিবারের মেয়ে এবং গীতা-ববিতার তুতো বোন।
২০১৬-র নভেম্বরে সিঙ্গাপুরে ৪৮ কেজি বিভাগে কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জেতেন ঋতু ফোগত। সে বছর প্রো রেসলিং লিগ-এ তিনি ছিলেন সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়। ৩৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাঁর সঙ্গে চুক্তি করে জয়পুর নিনজা ফ্র্যাঞ্চাইজি।
২০১৭-র নভেম্বরে তিনি রৌপ্যপদক পান অনূর্ধ্ব ২৩ বিশ্ব কুস্তি চ্যাম্পিয়নশিপে। প্রথম ভারতীয় ক্রীড়াবিদ হিসেবে তিনি-ই এই প্রতিযোগিতা থেকে পদক লাভ করেন।
সম্প্রতি ঋতুর শিরোপায় যুক্ত হয়েছে আর একটি পালক। জয়ী হয়েছেন ওয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ‘এমএমএ’ বা ‘মিক্সড মার্শাল আর্ট’-এ।
চিনের বেইজিং-এ এই প্রতিযোগিতার অ্যাটমওয়েট বা ৫২ কেজি বিভাগে জয়ী হয়েছেন ঋতু। প্রতিদ্বন্দ্বী, দক্ষিণ কোরিয়ার কিম নাম হি-কে ধরাশায়ী করতে ঋতুর সময় লেগেছে মাত্র সাড়ে তিন মিনিট।
খেতাব লাভের পরে ঋতু জানিয়েছেন, তিনি গর্বিত ও উচ্ছ্বসিত। জীবনভর কুস্তিতে নিজেকে উজাড় করে দিতে চান তিনি। জানিয়েছেন ভারতীয় বাঘিনী, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ঋতু ফোগত। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)