এ ছাড়াও লিয়েন্ডারকে বলা হয়েছে, আইনি খরচ বাবদ রিয়াকে অতিরিক্ত ১ লক্ষ টাকা দিতে হবে। লিয়েন্ডার এবং রিয়ার সন্তান আয়নার পড়াশোনা, দেখভালের খরচও দিতে হবে টেনিস তারকাকে। তবে আগের দেখভালের খরচ লিয়েন্ডারের থেকে চেয়েছিলেন রিয়া। আদালত সেই আবেদন মানেনি। পশ্চিম মুম্বইয়ের যে বাড়িতে দু’জনে থাকতেন, তা ভাগাভাগি করার আর্জি জানিয়েছিলেন রিয়া। তাঁর সেই আবেদনও নাকচ হয়ে গিয়েছে।
—ফাইল চিত্র
গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলেন লিয়েন্ডার পেজ। ভারতের এই টেনিস তারকার বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিও ঘোষণা করেছে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। ২০১৪ সালে ভারতীয় টেনিস তারকার বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার মামলা করেছিলেন তাঁর প্রাক্তন সঙ্গী রিয়া পিল্লাই।
আদালত রিয়ার সামনে দু’টি রাস্তা রেখেছে। এক, লিয়েন্ডারের সঙ্গে যে বাড়িতে বাস করতেন, তা রিয়াকে ছেড়ে দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে লিয়েন্ডারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাড়ি ভাড়া হিসেবে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা এবং বাড়ির দেখভালের খরচ হিসেবে সঙ্গে ১ লক্ষ টাকা তিনি দেবেন রিয়াকে। আর রিয়া যদি ওই বাড়ি না ছাড়েন, তা হলে তিনি এই টাকা পাবেন না। আদালতের বক্তব্য, যে হেতু লিয়েন্ডারের টেনিস কেরিয়ার ‘প্রায় শেষ’, এমন অবস্থায় তাঁকে ভাড়া বাড়িতে থাকতে বলা এবং একই সঙ্গে রিয়াকে খোরপোশ দিতে বলা ‘গুরুতর পক্ষপাতিত্ব’ হবে।
এ ছাড়াও লিয়েন্ডারকে বলা হয়েছে, আইনি খরচ বাবদ রিয়াকে অতিরিক্ত ১ লক্ষ টাকা দিতে হবে। লিয়েন্ডার এবং রিয়ার সন্তান আয়নার পড়াশোনা, দেখভালের খরচও দিতে হবে টেনিস তারকাকে। তবে আগের দেখভালের খরচ লিয়েন্ডারের থেকে চেয়েছিলেন রিয়া। আদালত সেই আবেদন মানেনি। পশ্চিম মুম্বইয়ের যে বাড়িতে দু’জনে থাকতেন, তা ভাগাভাগি করার আর্জি জানিয়েছিলেন রিয়া। তাঁর সেই আবেদনও নাকচ হয়ে গিয়েছে।
রিয়ার দাবি, ২০০৩ সাল থেকে তিনি সম্পর্কে ছিলেন লিয়েন্ডারের সঙ্গে। ২০০৫-০৬ পর্যন্ত তাঁদের সম্পর্ক ছিল। ২০০৬ সালে তাঁদের মেয়ের জন্ম হয়। ২০১৪ সালে লিয়েন্ডারের বিরুদ্ধে মামলা করেন রিয়া। সাত বছরের বেশি সময় ধরে মামলা চলার পর রায় দিল কোর্ট।
২০০৬ সালে বান্দ্রায় থাকতে শুরু করেন লিয়েন্ডাররা। সেখানে তাঁর বাবা ভেস পেজও থাকতেন। সেখানে থাকার সময়ই লিয়েন্ডারের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় রিয়ার। বান্দ্রায় পারিবারিক আদালতে মেয়ের হেফাজত চেয়ে মামলা করেন লিয়েন্ডার। এর পর ২০১৪ সালে লিয়েন্ডারের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগে মামলা করেন রিয়া।
রিয়া যে গার্হস্থ্য হিংসার কথা বলেছেন, তার মধ্যে ‘আর্থিক হিংসার’ কথাও জানানো হয়েছিল। অর্থাৎ, নিজে রোজগার করা সত্ত্বেও লিয়েন্ডার খরচের সব বোঝা রিয়ার ঘাড়ে চাপাতেন। আদালত এই বিষয়টিও বিবেচনা করেছে।
লিয়েন্ডারের আইনজীবীরা রিয়ার দাবি নাকচ করার চেষ্টা করেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, রিয়ার অভিযোগের আইনী ভিত্তি নেই, কারণ তিনি যখন লিয়েন্ডারের সঙ্গে সহবাস শুরু করেছিলেন, তখন বিবাহিত ছিলেন। ২০০৮ সালে অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় রিয়ার। লিয়েন্ডারের দাবি, রিয়া যে বিবাহিত ছিলেন তা তিনি তখন জানতেন না।
রিয়ার পাল্টা যুক্তি ছিল, সঞ্জয়ের সঙ্গে যে তিনি থাকেন না, তা লিয়েন্ডার তখনই জানতেন। সঞ্জয়ের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ মামলা তখন চলছিল। সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে অন্য মামলা চলায় এবং সঞ্জয়ের বাবার মৃত্যুর জন্য বিবাহ বিচ্ছেদের রায় বেরতে দেরি হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, তাদের পক্ষে এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয় যে লিয়েন্ডার জানতেন না রিয়ার বিবাহবিচ্ছেদ মামলা চলছে। ফলে, রিয়া এবং লিয়েন্ডারের বিবাহ না হলেও তাঁদের সম্পর্ককে বিবাহ হিসাবেই দেখেছে কোর্ট।