লক্ষ্য: শরতের অভিজ্ঞতাই চিনে ভরসা ভারতের। —ফাইল চিত্র।
শেষ দু’সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টি চলছে। তীব্র দাবদাহ ভুলে মেঘলা আকাশই স্বস্তি দিচ্ছে স্থানীয় মানুষদের। সরকার রেড অ্যালার্ট জারি করে দিয়েছে শহর জুড়ে। তারই মধ্যে চলছে আলটিমেট টেবল টেনিসের (ইউটিটি) আসর। যেখানে খেলছেন ভারত ও বিদেশের একাধিক তারকারা। রয়েছেন এশিয়ান গেমসে ভারতীয় টেবল টেনিস দলের অধিনায়ক অচন্ত শরৎ কমলও।
কমনওয়েলথ গেমস টেবল টেনিসে ভারতের হয়ে সোনা জিতেছেন তিনি। পঞ্চম এশিয়ান গেমসের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে এই প্রতিযোগিতা থেকেই। সেপ্টেম্বরে পঞ্চম এশিয়ান গেমসে নামার আগে আনন্দবাজারকে ৪১ বছরের শরৎ কমল জানালেন, তাঁর কাছে বয়স শুধু সংখ্যা মাত্র। তবে আসন্ন এশিয়ান গেমসে তরুণ তারকারাই যে ভরসা, তা-ও স্বীকার করলেন তিনি।
বাংলার সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়, ঐহিকা মুখোপাধ্যায় রয়েছেন ভারতীয় দলে। মণিকা বাত্রা, জি সাথিয়ান, শরৎ, সৃজা আকুলাদের উপরে ভরসা রাখছেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক শরৎ। ৪১ বছরের অভিজ্ঞ শরৎ আলটিমেট টেবল টেনিসে খেলছেন চেন্নাই লায়ন্সের হয়ে। তাঁর দল শনিবার সেমিফাইনালে খেলবে পুণেরি পল্টনের বিরুদ্ধে।
শরৎ বলছিলেন, ‘‘আলটিমেট টেবল টেনিসের মতো মঞ্চ যদি আমরা শুরুর দিকে পেতাম, আরও উন্নত করতে পারতাম নিজেকে। বর্তমানে ভারতীয় টিটি খেলোয়াড়েরা এই লিগ থেকেই উঠে আসছে। ক্রিকেটে যেমন আইপিএল ভারতীয় ক্রিকেটের ক্ষেত্রে তরুণ মুখেদেরে আত্মপ্রকাশ্যের মঞ্চে পরিণত হয়েছে, তেমনই টেবল টেনিসে ইউটিটি আমাদের বড় মঞ্চ।’’
জি সাথিয়ানের সঙ্গে এ বারের এশিয়ান গেমসে ডাবলসে খেলবেন শরৎ। সিঙ্গলসেও ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন। তিনি বলছিলেন, ‘‘সাথিয়ানের সঙ্গে ডাবলস খেলার মজা অন্য রকম। আমার চাপ অনেকটাই হাল্কা করে দেয় ও। কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জেতার নেপথ্যে সাথিয়ানের অবদান প্রচুর।’’
আসন্ন এশিয়ান গেমসে ভারতকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শরৎ। দ্বিতীয় অধিনায়ক মণিকা। অভিজ্ঞ শরৎ মনে করেন, ‘‘তরুণ খেলোয়াড়েরা ভারতকে পদক জেতানোর রাস্তায় এ বার এগিয়ে দেবেন। তবে আমার অভিজ্ঞতাও আশা করি কাজে লাগবে। তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মেলবন্ধনই অস্ত্র হয়ে উঠবে ভারতীয় দলের।’’
আলটিমেট টেবল টেনিসের মাধ্যমে যে তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটাতে পারছেন, তা মানছেন শরৎ। তাঁর কথায়, ‘‘এক ছাদের তলায় এত জন টেবল টেনিস তারকাদের পাশে পাচ্ছি। আমার থেকেও যেমন ওরা শিখছে, তেমনই আমিও ওদের থেকে অনেক কিছু শিখে নিচ্ছি। টেবল টেনিসের থেকে এত সম্মান পেয়েছি, এ বার যদি এই খেলাটাকে কিছু ফিরিয়ে দিতে না পারি, আমারই খারাপ লাগবে।’’
শরৎ জানিয়েছেন, নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের আরও পরিণত করার চেষ্টা করে চলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘চেন্নাই লায়ন্স দলে যারা খেলেছেন, প্রত্যেককেই কিছু না কিছু শেখানোর চেষ্টা করেছি। আমাকেও ওরা অনেক কিছু শিখিয়েছে। শুধুমাত্র নিজের উন্নতি দেখলে চলবে না।’’
আরও বলে গেলেন, ‘‘নিজের সঙ্গে অপেক্ষা করতে হবে দলের বাকিদের জয়েরও। দলীয় বোঝাপড়া জরুরি। ক্রিকেট অথবা ফুটবলের মতো অন্যের উপরে ভরসা করা থেকে অন্যদের সাহস দেওয়া জরুরি।’’