ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতার পর পিছিয়ে পড়েও একদিনের সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে ভারত। বিরাট কোহালির দল এ বার নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। চ্যালেঞ্জ বেশ কয়েক জন ক্রিকেটারের সামনেও। এই বছরেই রয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেই স্কোয়াডে নিজেকে নিশ্চিত করার জন্য পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এঁদের কাছে বাড়তি গুরুত্বের।
শিবম দুবে হলেন সিমার অলরাউন্ডার। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকতা, হার্দিক পাণ্ড্যর চোট তাঁর সামনে জাতীয় দলের দরজা খুলে দিয়েছিল। কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে ২৬ বছর বয়সি এখনও পর্যন্ত আট ম্যাচ খেলেছেন। ৩২ গড়ে করেছেন ৬৪ রান। নিয়েছেন তিনটি উইকেট। কিন্তু, দলে নিয়মিত হতে হলে ব্যাটে-বলে আরও ধারাবাহিক থাকতে হবে তাঁকে।
চোট সারিয়ে হার্দিকের ফেরা প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু শিবম এখনও দলে নিজের জায়গা পাকা করতে পারেননি। এই সিরিজে তাই ব্যাটে যেমন বড় শট নিতে হবে, তেমনই বল হাতেও থাকতে হবে নির্ভরযোগ্য। না হলে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা মিলবে না। শুধু হার্দিক নয়, বিজয় শঙ্করও অলরাউন্ডার হিসেবে লড়াইয়ে আসতে পারেন। তিনিও নিউজিল্যান্ডেই রয়েছেন। বিজয় ভাল পারফর্ম করলে সে ক্ষেত্রে দলে জায়গা পাওয়া আরও কঠিন হতে পারে দুবের।
ভারতের একদিনের দলে রবীন্দ্র জাডেজা অপরিহার্য। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তা নন। যদিও দলে ভারসাম্য যোগ করতে তাঁর বিকল্প নেই। ব্যাটিংয়ে অনেক উন্নতি ঘটেছে তাঁর। বল হাতেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে উইকেট নিয়েছেন মাঝের ওভারে। রানের গতিও আটকেছেন। আর ফিল্ডার হিসেবে তো তুলনাই হয় না।
এখনও পর্যন্ত ৪৬ টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে খেলেছেন জাডেজা। করেছেন ১৬৩ রান। স্ট্রাইক রেট ৯৮.৭৮। নিয়েছেন ৩৫ উইকেট। স্ট্রাইক রেট ৩১.২২। ভারতীয় দল এখন বোলারদের কাছেও রান চাইছে। সে দিক দিয়ে জাডেজার গুরুত্ব অপরিসীম। তবে স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে ওয়াশিংটন সুন্দরের সঙ্গে লড়াই তাঁর।
ওয়াশিংটন সুন্দরের বয়স ২০। এর মধ্যেই খেলে ফেলেছেন ২১ টি-টোয়েন্টি। শুধু অফস্পিনার নয়, তিনি অলরাউন্ডারও। যদিও ব্যাট হাতে এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তেমন কিছু করে উঠতে পারেননি। পেয়েছেন মাত্র ছয় ইনিংস। করেছেন ২৬ রান। তিন বার নট আউট থেকেছেন। অলরাউন্ডার হয়ে উঠতে চাইলে সুযোগ পেলেই ব্যাটে ভরসা দিতে হবে।
সুন্দরের প্লাস পয়েন্ট হল পাওয়ারপ্লে-র প্রথম ছয় ওভারের মধ্যে বল করতে পারা। ভারতের হয়ে অধিকাংশ সময়েই শুরুতে বল করেছেন তিনি। নিয়েছেন ১৮ উইকেট। তাঁর ইকনমি রেট চমকপ্রদ, ৬.৮০। যা ফিল্ডিংয়ে বিধিনিষেধ থাকা অবস্থায় বল করার পরিপ্রেক্ষিতে ঈর্ষণীয়। তবে রান আটকানোর পাশাপাশি উইকেটও নিতে হবে তাঁকে।
শার্দুল ঠাকুর এখনও পর্যন্ত খেলেছেন আট টি-টোয়েন্টি। তার মধ্যেই নজর কেড়েছেন। বোলার হিসেবে গতির হেরফের ঘটিয়ে, নাকল বলের ব্যবহারে তিনি নজর কেড়েছেন। ইকনমি রেট বেশ ভাল, মাত্র ৬.৪৯। বিশেষ করে ডেথ ওভারে বল করার কথা ভাবলে যা প্রশংসনীয়। নিয়েছেন আট উইকেট। এই দিকে নজর দিতে হবে তাঁকে।
শুধু বোলার নয়, ব্যাট হাতে বড় শট নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে শার্দুলের। যার প্রমাণও রেখেছেন তিনি। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবেও তাই বিবেচিত হতে পারেন তিনি। কিন্তু বিশ্বকাপের দলে জায়গা নিশ্চিত করতে বোলার হিসেবে আরও ভরসা জোগাতে হবে। না হলে জশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামি, ভুবনেশ্বর কুমার, দীপক চাহার, নবদীপ সাইনিরা তাঁকে টপকে যেতে পারেন।
ঋষভ পন্থের কাছে ২০১৯ খুব একটা ভাল যায়নি। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের আগে থেকেই তাঁকে তিন ফরম্যাটেই দলে অপরিহার্য বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু এখন টি-টোয়েন্টি দলেও কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামনে তিনি। লোকেশ রাহুল কিপার হিসেবে কাজ চালিয়ে দেওয়ায় প্রশ্নের মুখে তাঁর জায়গা। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ সেই কারণেই তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
শিখর ধওয়ন না থাকায় নিউজিল্যান্ড সফরে সুযোগ পেতে পারেন ঋষভ। তবে তা কাজে লাগাতে হবে তাঁকে। উইকেট ছুড়ে দিয়ে এলে চলবে না। দায়িত্ব নিতে হবে। না হলে এই ফরম্যাটেও ক্রমশ পিছিয়ে পড়বেন তিনি।