বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে সোনা জিতে ভারতীয় পতাকা হাতে নীরজ চোপড়া। ছবি: রয়টার্স
বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম ভারতীয় হিসাবে সোনা জিতেছেন নীরজ চোপড়া। তাঁর সাফল্য নিয়ে সন্দেহ ছিল না পরিবারের। নীরজের বাবা সতীশ কুমার জানিয়েছেন, তাঁরা জানতেন যে নীরজ সোনা জিতবেন। তাই তাঁর মধ্যে বাড়তি উচ্ছ্বাস, আবেগ কিছুই নেই। ছেলের পাশাপাশি পাকিস্তানের জ্যাভলিন থ্রোয়ার আরশাদ নাদিমেরও প্রশংসা করেছেন তিনি। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে রুপো জিতেছেন পাকিস্তানের অ্যাথলিট।
বুদাপেস্টে ৮৮.১৭ মিটার ছুড়ে সোনা জিতেছেন নীরজ। ছেলের কৃতিত্ব নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সতীশ বলেন, ‘‘নীরজের সোনা জয় নিয়ে আমরা নিশ্চিত ছিলাম। খেলায় আগে থেকে কিছু বলা যায় না ঠিকই, কিন্তু আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। সেই একই আত্মবিশ্বাস নীরজের চোখেমুখেও দেখা যাচ্ছিল। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে আমাদের দেশ প্রথম সোনা জিতেছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের মুহূর্ত।’’
নীরজকে টক্কর দেওয়ার মতো এক জনই ছিলেন। তিনি নাদিম। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে ৮৭.৮২ মিটার ছুড়ে রুপো জিতেছেন তিনি। নাদিমের পারফরম্যান্সেও খুশি সতীশ। নীরজের বাবা বলেন, ‘‘নীরজ ও নাদিম, দু’জনেই খুব ভাল খেলেছে। ওদের নিজেদের সম্পর্ক খুব ভাল। ওরা প্রতিপক্ষ হলেও একে অপরকে সাহায্য করে। একে অপরের সাফল্যের প্রশংসা করে। দেশের ব্যবধান ওদের মধ্যে নেই। ওরা দু’জনেই সব সময় নিজেদের খেলা আরও উন্নত করার চেষ্টা করে।’’
ভারত ও পাকিস্তানের প্রতিযোগী হিসাবে না দেখে নীরজ ও নাদিমকে এশিয়ার দুই প্রতিযোগী হিসাবে দেখছেন সতীশ। নীরজের বাবার কথায়, ‘‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে জ্যাভলিনে সোনা ও রুপো জিতেছে এশিয়ার দু’জন অ্যাথলিট। এটা এশিয়ার জন্য গর্ব। দু’জনকেই শুভেচ্ছা।’’
অলিম্পিক্স, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান গেমস ও ডায়মন্ড লিগে সোনাজয়ী নীরজই কি ভারতের সর্বকালের সেরা অ্যাথলিট! মানতে নারাজ নীরজ নিজে। তিনি বলেন, ‘‘অ্যাথলিটদের কোনও সীমা থাকে না। ফিনিশ লাইন থাকে না। কারণ, প্রতি দিন উন্নতি করার জায়গা থাকে। অন্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে। যদি সেরাদের কথা বলতেই হয় তা হলে জেলেজ়নি আছে।’’ চেক প্রজাতন্ত্রের অ্যাথলিট জেলেজ়নি। জ্যাভলিনে সব থেকে দূরে ছোড়ার রেকর্ড তাঁরই আছে। কেরিয়ারে ৩৩ বার ৯০ মিটারের বেশি জ্যাভলিন ছুড়েছেন তিনি। সর্বাধিক ৯৮.৪৮ মিটার।
নিজেকে সর্বকালের সেরা না বললেও তাঁর সাফল্য যে তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করছে তা মানছেন নীরজ। তিনি বলেন, ‘‘ভারতে এখন অনেক প্রতিভা। তরুণ প্রজন্ম অ্যাথলেটিক্সের দিকে ঝুঁকছে। তাতে আমারও কিছু কৃতিত্ব আছে। দেশের জন্য আরও অনেক পদক জিততে চাই। সেই লক্ষ্যেই নিজেকে তৈরি করব।’’