অনিশ্চিত: কলকাতায় স্তিমাচদের শিবির হবে কি না পরিষ্কার নয় ফাইল চিত্র
নতুন করে করোনা সংক্রমণের হার বাড়তে থাকায় কলকাতায় ভারতীয় ফুটবল দলের প্রস্তুতি শিবিরের ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের কর্তাদের। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ও এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জনের প্রাথমিক পর্বের বাকি তিনটি ম্যাচের জন্য ২ মে থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে অনুশীলন শুরু করার কথা ইগর স্তিমাচের।
চলতি সপ্তাহের শেষেই ভারতে চলে আসার কথা জাতীয় কোচের। দিন সাতেকের নিভৃতবাস শেষ করে তিনি কলকাতায় পা রাখবেন। ১ মে রাতের মধ্যে শিবিরে যোগ দেওয়ার কথা ফুটবলারদের। যুবভারতীর লাগোয়া একটি পাঁচতারা হোটেলে জৈব সুরক্ষা বলয়ে রাখা হবে সুনীল ছেত্রী, সন্দেশ জিঙ্ঘন, ধীরজ সিংহ-দের। চিন্তিত ফেডারেশন সচিব কুশল দাস মঙ্গলবার দিল্লি থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে বললেন, “কলকাতায় ভারতীয় দলের প্রস্তুতি শিবিরের ভাগ্য নির্ভর করছে পরিস্থিতির উপরে। আমাদের হাতে কিছু নেই।” তিনি যোগ করলেন, “এখনও পর্যন্ত যা শোনা যাচ্ছে, তাতে কলকাতায় লকডাউন হবে না।” কিন্তু করোনা পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয়, সে ক্ষেত্রে কী কলকাতার বদলে অন্য কোথাও শিবির হতে পারে? ফেডারেশন সচিব স্পষ্ট বলে দিলেন, “না, ভারতের সর্বত্রই তো একই অবস্থা। জানি না শেষ পর্যন্ত কী হবে। তবে আমরা এখনও আশাবাদী ১৭ বছর পরে কলকাতায় জাতীয় দলের প্রস্তুতি শিবিরের ব্যাপারে।”
বিশ্বকাপ ও এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জনের প্রাথমিক পর্বে ‘ই’ গ্রুপে পাঁচটি দলের মধ্যে এই মুহূর্তে তিন পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে রয়েছে ভারত। পাঁচটি ম্যাচের একটিও জিততে পারেননি সুনীলরা। তাঁরা হেরেছেন দু’টিতে। ড্র করেছেন তিনটি ম্যাচে। ভারতের এখনও তিনটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। কাতারের বিরুদ্ধে খেলা ৩ জুন। সুনীলরা বাংলাদেশের মুখোমুখি হবেন ৭ জুন। ভারতের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ১৫ জুন। সব ম্যাচই হবে কাতারে। ৩৫ দিনের প্রস্তুতি সেরে কলকাতা থেকেই সরাসরি দোহা উড়ে যাওয়ার কথা ভারতীয় দলের।
২০২২-এ কাতার বিশ্বকাপে ভারতের খেলার অবশ্য কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে ২০২৩ সালে চিনে এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জনের সুযোগ এখনও শেষ হয়ে যায়নি সুনীলদের। আসন্ন তিনটি ম্যাচের উপরেই নির্ভর করছে তাঁদের ভাগ্য। এই কারণেই দীর্ঘমেয়াদি শিবির করার পরিকল্পনা নিয়েছেন ইগর।
বিশ্বকাপ ও এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জনের প্রাথমিক পর্বের বাকি তিনটি ম্যাচের প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবেই সম্প্রতি ওমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলেছে ভারতীয় দল। ওমানের বিরুদ্ধে পিছিয়ে পড়েও মনবীর সিংহের গোলে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে ১-১ ড্র করেছিল ভারত। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে ০-৬ পর্যুদস্ত হয়েছিলেন গুরপ্রীত সিংহ সাঁধুরা। করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় দু’টি ফ্রেন্ডলিতেই ছিলেন না অধিনায়ক সুনীল। প্রথম ম্যাচে ওমানের বিরুদ্ধে দশ জন ফুটবলারের ভারতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল। আমিরশাহির বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে আট ফুটবলার পরিবর্তন করেছিলেন ইগর। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও বিশ্রাম দিয়েছিলেন সন্দেশ, অমরিন্দর সিংহের মতো তারকাদের। আমিরশাহির বিরুদ্ধে ০-৬ চূর্ণ হওয়ার পরেই সমালোচনায় বিদ্ধ হন জাতীয় কোচ। ইগর স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ফ্রেন্ডলি ম্যাচই হচ্ছে নতুন ফুটবলারদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সেরা মঞ্চ। ম্যাচের ফলকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে চান না তিনি। জাতীয় কোচের ভাবনাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন ভারতীয় ফুটবলের দুই কিংবদন্তি আই এম বিজয়ন ও ভাইচুং ভুটিয়া। এখন দেখার, বিশ্বকাপ ও এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জনের প্রাথমিক পর্বের শেষ তিনটি ম্যাচে সুনীলরা
কী করেন।