ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন সচিন তেন্ডুলকর। শুধু ভারতেরই নয়, ক্রিকেটবিশ্বেই সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলেছেন সচিন। কিন্তু একটানা ওয়ানডে খেলে চলাও একটা রেকর্ড। বিরামহীন ভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার জন্য প্রয়োজন হয় ফিটনেস। এবং অতি অবশ্যই ধারাবাহিকতা। দেখা যাক, ভারতীয়দের মধ্যে একটানা একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড কার রয়েছে।
বিরাট কোহালি টানা ১০২ ওয়ানডে ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন ২০১০ সালের ২৫ অগস্ট থেকে ২০১৪ সালের ৫ মার্চের মধ্যে। এই ম্যাচগুলোতে ৫৪.৮৪ গড়ে তিনি করেছেন ৪,৫৫২ রান। যার মধ্যে ছিল ১৭টা সেঞ্চুরি ও ২২ হাফ-সেঞ্চুরি।
এই সময়ের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুর্দান্ত ধারাবাহিকতা দেখিয়েছিলেন কোহালি। ১১ ইনিংসে তিন শতরান ও দুই অর্ধশতরান করেছিলেন। গড় ছিল ৬৩.১১। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধেও সাফল্য পেয়েছিলেন।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে কোহালির রেকর্ড অবশ্য আরও ভাল। ১৭ ইনিংসে তাঁর গড় ছিল ৬৪.৮৫। চার সেঞ্চুরি ও তিন হাফ-সেঞ্চুরি করেছিলেন প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে। এই সময়েই ভারত ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল। চার নম্বরে নেমে ভারতের মিডল অর্ডারে ভরসা জুগিয়েছিলেন কোহালি।
এখনও পর্যন্ত ২৪৮ ওয়ানডে খেলেছেন কোহালি। ৫৯.৩৩ গড়ে করেছেন ১১৮৬৭ রান। সর্বাধিক ১৮৩। শতরানের সংখ্যা ৪৩। এখনও খেলছেন তিনি। এই মুহূর্তে তিন ফরম্যাটে ভারতের অধিনায়ক কোহালিই।
তালিকায় বিরাট কোহালির উপরে আছেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ১৯৯১ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৭ সালের ৩ মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে টানা ১২৬ ওয়ানডে খেলেছিলেন হায়দরাবাদি। এই সময়ে ৩৮.১২ গড়ে ৩,৭৭৪ রান করেছিলেন তিনি।
এই ১২৬ ম্যাচের মধ্যে ২৭ বার পঞ্চাশের গণ্ডি টপকে ছিলেন আজহার। কিন্তু একবারও সেঞ্চুরি করতে পারেননি। এর মধ্যে ১৯৯৩ সালে ৫৯.১৫ গড়ে আজহার করেছিলেন ৭৬৯ রান। যার মধ্যে আটটি হাফ সেঞ্চুরি ছিল।
১৯৯৬ সালের পর থেকে আজহারের ফর্ম খারাপ হতে থাকে। নেতৃত্ব হারান তিনি। নেতৃত্ব হারানোর পর ব্যাট হাতে তাঁকে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে দেখা যায়। অবশ্য ফের নেতৃত্ব ফিরে আসে তাঁর কাছে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি।
ভারতের হয়ে ৩৩৪ একদিনের ম্যাচ খেলেছেন আজহার। ৩৬.৯২ গড়ে করেছেন ৯৩৭৮ রান। সর্বাধিক অপরাজিত ১৫৩। রয়েছে সাতটি শতরান। ১৯৮৫ সালে অভিষেকের পর ২০০০ সাল পর্যন্ত ৫০ ওভারের ফরম্যাটে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
১৯৮৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। ১৯৯০ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে টানা আট বছর একটানা ১৮৫ ম্যাচ খেলেছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। এই সময়ে ৪০.৬১ গড়ে ৬,৬২০ রান করেছিলেন তিনি।
এই সময়ে ১৫ সেঞ্চুরি করেছিলেন সচিন। আর শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবেই নয়, বোলার হিসেবেও অবদান রেখেছিলেন সচিন। মিডিয়াম পেস ও স্পিন, দুই ধরনের বোলিংয়ে নিয়েছিলেন ৬২ উইকেট। নিয়েছিলেন ৬৫ ক্যাচও।
এই সময়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রতি বিশেষ ভাবে নির্দয় ছিলেন সচিন। ৫৫.৯৫ গড়ে করেছিলেন রান। অজিদের বিরুদ্ধে করেছিলেন চারটি সেঞ্চুরি। এর মধ্যে ১৯৯৬ সালে মাত্র ৩২ একদিনের ম্যাচে ১,৬১১ রান করেছিলেন সচিন। সেই বছর তাঁর শতরানের সংখ্যা ছিল ছয়।
৫০ ওভারের ফরম্যাটে ৪৬৩ ম্যাচ খেলেছিলেন সচিন। রান করেছিলেন ১৮,৪২৬। ম্যাচের সংখ্যা ও মোট রান, দুটোই বিশ্বরেকর্ড। সবচেয়ে বেশি ৪৯ শতরানেরও মালিক তিনি। গড় ৪৪.৮৩। বিশ্বের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এই ফরম্যাটে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন সচিন।