জুটি: টোকিয়ো রওনা দিলেন অতনু-দীপিকা। শনিবার। টুইটার
বর বাংলার। কনে ঝাড়খণ্ডের। এই দুই তিরন্দাজ তারকা অতনু দাস ও দীপিকা কুমারিকে ঘিরেই অলিম্পিক্স পদকের স্বপ্ন দেখছে গোটা দেশ। গত কয়েক মাসে বিশ্বকাপে এই তিরন্দাজ দম্পতির সোনার-সাফল্য রয়েছে
তার নেপথ্যে।
যা নিয়ে জানতে চাইলে, অলিম্পিক্সগামী তিরন্দাজ অতনু বলে দিলেন, ‘‘স্বপ্ন তো সবাই দেখতে পারে। কিন্তু তা সফল করার রাস্তা নিজেকেই বার করতে হবে। তা পারলে নায়ক হওয়া যায়। না হলে কী হয়, সেই অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। সাফল্য ও ব্যর্থতার দু’পিঠই আমার দেখা আছে।’’ দীপিকা বলে দিচ্ছেন, ‘‘অতীতের অভিজ্ঞতাই আমাদের বড় শিক্ষক। তবে এ বার অলিম্পিক্স প্রস্তুতি আগের বারের চেয়ে অনেক ভাল হয়েছে। আমরাও আত্মবিশ্বাসী। পদকের স্বপ্ন দেখছি চোখ বন্ধ করে নয়, খোলা রেখে।’’
টোকিয়ো অলিম্পিক্সে তিরন্দাজির ব্যক্তিগত ও দলগত রিকার্ভ বিভাগে ছাড়পত্র পেয়েছেন অতনু। মহিলাদের রিকার্ভে ব্যক্তিগত বিভাগে পদকের জন্য লড়বেন দীপিকা।
অলিম্পিক্সের জন্য পুণের সেনানিবাসে গত দু’মাস কঠোর অনুশীলন করেছেন ভারতের এই তিরন্দাজ দম্পতি। অতনুর কথায়, ‘‘আন্তর্জাতিক মঞ্চে সফল হতে গেলে শারীরিক ও মানসিক ভাবে দৃঢ় রাখতে হবে নিজেকে। তাই প্রস্তুতি পর্বে সকাল ছ’টা থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত যোগাভ্যাস ও ধ্যান করতে হত। তার পরে বেলা আটটা থেকে বারোটা পর্যন্ত চলত তিরন্দাজির মহড়া।’’ যোগ করেন, ‘‘বিকেলে সাড়ে তিনটে থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত ফের তিরন্দাজি। তার পরে তিন দিন দৌড়, ফিটনেস চর্চা। বাকি তিন দিন মনোবিদের ক্লাসে যেতে হত।’’
গত কয়েক মাসে গুয়াতেমালায় স্টেজ ওয়ান ও প্যারিসে স্টেজ থ্রি বিশ্বকাপে দীপিকা এবং অতনু, দু’জনেই সাফল্য পেয়েছেন। যে প্রসঙ্গে বরানগরের প্রামাণিক ঘাট রোড এলাকায় জন্মানো ও বেড়ে ওঠা অতনু বলে ওঠেন, ‘‘এই জায়গায় দাঁড়িয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। অনেক ক্রীড়াবিদ তো অলিম্পিক্সের আগে কোনও প্রতিযোগিতাও পায়নি। তাদের মনে হতাশা ও আশঙ্কার চোরাস্রোত রয়েছে। সেখানে আমরা গত চার মাসে নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে দু’টো বিশ্বকাপে সফল হয়েছি। তাই আত্মবিশ্বাসও তুঙ্গে রয়েছে।’’
অতনুর এটি দ্বিতীয় অলিম্পিক্স। পাঁচ বছর আগে রিয়োয় ভারতীয় তিরন্দাজ দলের প্রতিনিধি ছিলেন। দীপিকার এটি তৃতীয় অলিম্পিক্স। লন্ডন ও রিয়োয় পদক হাতছাড়া হওয়ার পরে ভারতীয় তিরন্দাজমহল থেকে যুক্তি ভেসে এসেছিল, প্রতিযোগিতার দিন নাকি জোরে হাওয়ার জন্য তিনি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এ বার যদি তেমনই কিছু হয় টোকিয়োয়? অতনু বলছেন, ‘‘বেসামাল হাওয়ার ফল সবাইকেই ভুগতে হয়েছে। এগুলো থাকবেই। তা অতিক্রম করেই কেউ সোনা জিতেছে। আমরা মানসিকতাকে সেই জায়গাতেই রেখেছি। চাপ থাকবে। কিন্তু তা সামলেই পদক আনতে হবে দেশের জন্য।’’ দীপিকার কথায়, ‘‘পরিশ্রম ও অভিজ্ঞতার মূল্য নিশ্চয়ই এ বার পাব আমরা।’’