কোহলীর দল একটি হাতি এবং এবং একটি ঘোড়াকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামতে পারেন। —ফাইল চিত্র
বৃহস্পতিবার থেকে ওভালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চতুর্থ টেস্ট খেলতে নামবে ভারত। এই টেস্টে বিরাট কোহলীর দল একটি হাতি এবং এবং একটি ঘোড়াকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামতে পারেন। কারণ ৫০ বছর আগে ওভালে ইংল্যান্ডের মাটিতে ভারত যখন প্রথম টেস্ট ও সিরিজ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল, তখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল একটি হাতি এবং ঘোড়া।
পুরো ঘটনাটাই জানিয়েছেন ভাগবৎ চন্দ্রশেখর। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে ১০১ রানে ইংল্যান্ডের ইনিংস শেষ করে দিয়েছিলেন এই লেগস্পিনার। জেতার জন্য ১৭৩ রানের লক্ষ্য ৬ উইকেটে তুলে নেয় ভারত। অজিত ওয়াড়েকরের নেতৃত্বে সে দিন ভারতীয় ক্রিকেটে ইতিহাস তৈরিতে ভূমিকা ছিল বেলা এবং মিল রিফের।
শেষ দিন ওভালে ভারতীয় সমর্থকরা বেলা নামে একটি হাতিকে মাঠে নিয়ে এসেছিলেন। লন্ডনের চেসিংটন চিড়িয়াখানা থেকে হাতিটিকে ভাড়া করে মাঠে নিয়ে আসা হয়েছিল। চন্দ্রশেখর, সুনীল গাওস্কর, গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথরা আজও মনে করেন, বেলার জন্যই ভারত জিততে পেরেছিল। কারণ তখন গণেশ চতুর্থী চলছিল। ইংল্যান্ডের মাটিতে তার আগে ২১টি টেস্ট খেলে ১৫টিতে হারা ভারতীয় দলের ভাগ্য গণেশ উৎসবের সময় সেই হাতিই ফিরিয়েছিল বলে মনে করেন তাঁরা।
সেই জয়ের ৫০ বছর উপলক্ষে লন্ডনের একটি হোটেলের অনুষ্ঠানে চন্দ্রশেখর ঘোড়ার গল্পটি শুনিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘বল করার জন্য তখন বোলিং রান আপের দিকে যাচ্ছি। হঠাৎ দিলীপ সারদেশাই চেঁচিয়ে বলল, ‘চন্দ্র, মিল রিফ বল কর’। তখন ইংল্যান্ডে মিল রিফ নামে একটা ঘোড়া ছিল। ইংল্যান্ডের সব বড় বড় রেসগুলো ওই ঘোড়াটাই জিতছিল। ১৯৭১ সালের এপসম ডার্বিও জিতেছিল মিল রিফ। ঘোড়াটার অসম্ভব গতি ছিল। বুঝলাম আমাকে গতি বাড়িয়ে বল করতে বলছে। প্রথমে ভেবেছিলাম জন এডরিচকে গুগলি দেব। কিন্তু তারপর মনে হল, দিলীপ খেলাটা ভাল বোঝে।’’
দ্বিতীয় ইনিংসে এডরিচকে শূন্য রানে বোল্ড করেছিলেন চন্দ্রশেখর। সে কথা মনে করলে এখনও সমান উৎফুল্ল হন তিনি। বলেন, ‘‘ও ব্যাট নামানোর আগেই বল গিয়ে স্টাম্পে লেগেছিল।’’
অনুষ্ঠানে ছিলেন রবি শাস্ত্রীও। চন্দ্রশেখরদের ইতিহাস তৈরির সময় নয় বছর বয়স ছিল ভারতীয় দলের এখনকার কোচের। বলেন, ‘‘আমার তখন নয় বছর বয়স। রেডিয়োতে বিবিসি টেস্ট ম্যাচ স্পেশালে ওই টেস্টের প্রত্যেকটা বল শুনেছিলাম। নয় বছরের একটা ছেলের কাছে ওই জয়ের উত্তেজনা কতটা ছিল, বলে বোঝাতে পারব না। ক্রিকেট খেললে ইংল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন সবার থাকে। দু’ বার আমার সেই অভিজ্ঞতা হয়েছিল। একবার ১৯৮৬ সালে ক্রিকেটার হিসেবে, আর একবার ২০০৭ সালে কোচ হিসেবে।’’
এই সিরিজের ফল এখন ১-১। স্বপ্ন পূরণের হ্যাটট্রিক এ বারও হতে পারে। তার জন্য শাস্ত্রী হয়ত বেলা আর মিল রিফকে খুঁজছেন।