সিরিজ জয়ের অভিব্যক্তি ধরা পড়ল কোহালির হাসিতে। ছবি টুইটার
আমদাবাদে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস স্থায়ী হয়েছিল মাত্র ৩০.৪ ওভার। একটা বলও করতে দেখা যায়নি ভারতের দুই জোরে বোলার ইশান্ত শর্মা এবং যশপ্রীত বুমরাকে। দুই স্পিনার অক্ষর পটেল এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন ১৫ ওভার করে হাত ঘোরালেন। শেষ যে উইকেট পড়েছিল, ৩১তম ওভার করতে এসে চতুর্থ বলে সেটাও তুলে নিলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। এক সেশনেরও কমে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়ে যাওয়াই এই ম্যাচের নির্যাস স্পষ্ট করে দিয়েছে।
আমদাবাদে তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডকে সহজেই ১০ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। সব থেকে বড় ব্যাপার, টেস্ট শেষ হয়ে গেল দু’দিনেই। আরও স্পষ্ট করে বললে ১২ ঘণ্টায় টেস্ট পকেটে পুরলেন বিরাট কোহালিরা। স্বাভাবিক ভাবেই এদিক-ওদিক ইতিউতি সমালোচনা ভেসে এসেছে। কিন্তু খেলা এত দ্রুত শেষ হওয়ার পিছনে যে পুরোপুরি দায়ী ঘূর্ণি উইকেট, এ কথা অতি বড় ইংরেজ সমর্থকও বলতে পারছেন না। বরং, ইংরেজ ব্যাটসম্যানদের স্পিন খেলার অক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে বেশি।
এতদিন পর্যন্ত যে ক’টি দিন-রাতের টেস্ট হয়েছে, সবেতেই পেসারদের প্রাধান্য দেখা গিয়েছে। ইংল্যান্ড হোক বা অস্ট্রেলিয়া, সর্বত্র গতির দাপটে নাজেহাল হয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। এমনকি, ভারতের মাটিতে হওয়া প্রথম দিন-রাতের টেস্টেও দেখা গিয়েছিল একই চিত্র। ২০১৯-এর নভেম্বরে ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হওয়া সেই টেস্টে জোরে বোলাররা নিয়েছিলেন ১৯টি উইকেট।
কিন্তু আমদাবাদের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। শক্তির বিচারে বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ডের ফারাক আকাশ-পাতাল। পাশাপাশি, এই মুহূর্তে বিশ্বের দুই ভয়ঙ্কর পেসার জেমস অ্যান্ডারসন এবং স্টুয়ার্ট ব্রড তাঁদের দলে রয়েছেন, যাঁরা অবলীলায় দু’দিকেই বল সুইং করাতে পারেন। সম্ভবত সে কারণেই এ বার ঝুঁকি নিতে চাননি বিরাট কোহালিরা।
বল ঘুরেছে প্রথম দিন থেকেই। ১১২ রানে ইংল্যান্ড শেষ হয়ে যাওয়ার পর ৯৯ রানে তুলতে তিন উইকেট হারায় ভারত। আর দ্বিতীয় দিন চার ঘণ্টাতেই পড়ল ১৭টি উইকেট! ইংল্যান্ডের থেকে রানের ব্যবধান অনেকটা বাড়িয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে নেমেছিলেন রোহিত শর্মারা। কিন্তু ব্যাটিং অর্ডারে ধস আটকানো যায়নি। অজিঙ্ক রাহানেকে দিয়ে শুরু। একের পর এক ব্যাটসম্যান সাজঘর থেকে ক্রিজে আসা-যাওয়া করছিলেন। মাত্র ৩৩ রানে এগিয়ে থেকে ১৪৫-এ শেষ হয়ে যায় ভারতের ইনিংস।
বল কতটা ঘুরছে, তা তখনই অনুমান করেছিলেন বিরাট কোহালি। তাই জোরে বোলারদের আনার কোনও চেষ্টাই করলেন। শুরু থেকেই লেলিয়ে দিলেন স্পিনারদের। প্রথম ওভারেই সাফল্য। প্রথম বলে জ্যাক ক্রলিকে তুলে নেওয়ার পর তৃতীয় বলে জনি বেয়ারস্টোও ফিরে যান।
উপমহাদেশীয় উইকেটে খেলার অক্ষমতার ব্যাপারে ইংল্যান্ডের বরাবরই দুর্নাম রয়েছে। অক্ষর এবং অশ্বিনের ঘূর্ণি সামলানোর ক্ষমতা তাঁদের ছিলও না। কতক্ষণ ইংরেজদের ইনিংস টেকে, সেই অপেক্ষাই করছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা। কার্যত দেখা গেল, এক সেশনও লাগল না।
লক্ষ্যমাত্রার ৪৯ রান তুলতে ভারতকে একেবারেই বেগ পেতে হয়নি। ছয় মেরে জেতালেন রোহিত শর্মা (অপরাজিত ২৫)। উল্টোদিকে ছিলেন শুভমন (অপরাজিত ১৫)