ছন্দে: সিরিজ জিততে উডের দুরন্ত গতি বড় অস্ত্র মর্গ্যানের। ফাইল চিত্র
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মরণ-বাঁচন ম্যাচে ভারতীয় বোলারদের পরীক্ষা হয় কী ভাবে জস বাটলারদের থামাব। আর ব্যাটসম্যানদের জন্য কাঁটা হচ্ছে, মার্ক উড-জফ্রা আর্চারদের গতি। আর্চারের আগুনে পেস সম্পর্কে সকলেই অবহিত। কিন্তু চলতি টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতের উপরের দিককার ব্যাটিংকে সব চেয়ে সমস্যায় ফেলেছে মার্ক উডের এক্সপ্রেস গতি। ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিও তিনি তুলে ফেলছেন ভারতের পিচে। সঙ্গে শরীরের দিকে ধেয়ে আসা বল। যার উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না শিখর ধওয়ন, রোহিত শর্মা, কে এল রাহুলেরা।
উডদের গতির সামনে ভারতের প্রধান ভরসা হবেন অবশ্যই বিরাট কোহালি। পর-পর দু’টি ম্যাচে বড় রান করে ভারত অধিনায়ক আত্মবিশ্বাসের শিখরে আছেন। তবে হারের ধাক্কায় সমালোচনার ঢেউ কোহালির দিকেও ধেয়ে আসছে। তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ভারতের দলগঠন নিয়ে যেমন প্রশ্ন তুলেছেন গৌতম গম্ভীর এবং সঞ্জয় মঞ্জরেকর। প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার গম্ভীর হতাশ সূর্যকুমার যাদব বাদ পড়ায়। প্রথম ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পাননি মুম্বই ইন্ডিয়ন্সের ব্যাটসম্যান। তবুও পরের ম্যাচে কেন বাদ দেওয়া হল সূর্যকে, জানতে চান গম্ভীর। মঞ্জরেকর প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের ওপেনিং জুটির পরিবর্তন নিয়ে। এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে গম্ভীর বলেছেন, “বিশ্বকাপের এত দিন আগে থেকে সেই প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি নেওয়ার মানে আমি বুঝতে পারছি না। যারা ছন্দে আছে তাদের খেলানো উচিত।” যোগ করেন, “ধরা যাক বিশ্বকাপে চোট পেল এমন একজন যে হয়তো চার-পাঁচ নম্বরে ব্যাট করবে। তখন তো সূর্যকুমারকে খেলাতেই হবে। কিন্তু সূর্যকে তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরীক্ষাই করা হচ্ছে না। হতেই পারে শ্রেয়স আয়ারের পরিবর্তন প্রয়োজন পড়ল। তখন কাকে খেলানোর কথা ভাবা হবে? নিশ্চয়ই সূর্যকে। এটাই তো সময় ওকে খেলিয়ে দেখে নেওয়ার।”
ভারতীয় দলে রোটেশন প্রথা নিয়েও খুশি নন গম্ভীর। ক্রিকেটারদের অতিরিক্ত বিশ্রাম দেওয়ার প্রয়োজনও মনে করেন না তিনি। গম্ভীর বলেছেন, “আমরা অতিরিক্ত পরিবর্তন করি দলে। প্রত্যেক ম্যাচেই অহেতুক পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি। ইংল্যান্ড কিন্তু তা করছে না। ব্যাটিং বিভাগে যারা ছিল, তারাই খেলেছে এই ম্যাচ। ভারত যদি নিজেরাই নিজেদের সমস্যা ডেকে আনে তা হলে কিছু বলার নেই। দলে স্থায়িত্ব আনা প্রয়োজন।” গম্ভীরের আরও বক্তব্য, “ভারতে কখনও প্রতিভার অভাব হবে না। কারণ, ভালবেসে ক্রিকেট খেলে প্রত্যেকে। আইপিএলের মতো প্রতিযোগিতা থেকে উঠে আসে ক্রিকেটার। কিন্তু যতক্ষণ না দলে অতিরিক্ত পরিবর্তন বন্ধ হবে, সমস্যা থেকেই যাবে।”
সঞ্জয় মঞ্জরেকর অবাক ওপেনিংয়ে ঈশান কিশানকে দেখতে না পেয়ে। অভিষেক ম্যাচে ৫৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে সকলের প্রশংসা জিতে নিয়েছিলেন ঈশান। ভারতও জেতে সেই ম্যাচ। মঞ্জরেকরের টুইট, “টি-টোয়েন্টি ওপেনার হিসেবে দুর্দান্ত অভিষেকের পরের ম্যাচে তিন নম্বরে ঈশান কিশান। এই পরিবর্তনের কারণ আমার মাথায় ঢুকছে না।” ঈশানের পরিবর্তে কে এল রাহুলের সঙ্গে ওপেন করেন রোহিত শর্মা। যদিও দুই ওপেনারই তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ব্যর্থ। রাহুল একেবারেই ছন্দে নেই। তবে অধিনায়ক কোহালি ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠৌর তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, হারলেই যেখানে সিরিজ ফস্কে যাবে, এমন পরিস্থিতিতে ছন্দে না থাকা রাহুলকে খেলানোর ঝুঁকি কি নেবে ভারত? বিকল্প ঈশান তো আছেনই।