নতুন অঙ্গীকার নিয়ে জাতীয় দলের সফর শুরু করতে চাইছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। ফাইল চিত্র
২০১৯ সালে আইপিএলের একটি ম্যাচে বোলিং করতে দেখে ওঁর সম্পর্কে বিরাট কোহলী বলেছিলেন, “২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই ছেলেটা আমাদের দলের বিস্ময় হতে পারে। অসাধারণ বোলার।” অবশ্য এই উত্তরণের জন্য ভারত এ দলের হয়ে একাধিক বিদেশ সফর ও কলকাতা নাইট রাইডার্সও তাঁকে সাহায্য করেছে। গত তিন বছর নাইটদের হয়ে ২৪ উইকেট নিয়েছেন। ২০১৮-১৯ মরসুমে বিজয় হজারে ট্রফিতে ৭ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ শিকারী হয়েছিলেন। এ বারও বিজয় হজারের ৭ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়েছেন কর্ণাটকের এই জোরে বোলার।
অর্থনীতিতে স্নাতক প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর কাছে শুক্রবারের দিনটা সবচেয়ে আনন্দের। একই সঙ্গে কর্ণাটকের এই জোরে বোলারের কাছে পুরো ব্যাপারটা অবাস্তব মনে হয়েছে! সেটা আবার টুইট করেও জানিয়েছেন। শুক্রবার রাত কিংবা শনিবার সকালেই জাতীয় দলে যোগ দেবেন। এর আগে বেঙ্গালুরুর বাড়িতে বসে আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে কথা বললেন ২৫ বছরের প্রসিদ্ধ।
প্রশ্ন: অবশেষে জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন। কেমন অনুভূতি হচ্ছে? বাড়ির পরিস্থিতি কেমন?
প্রসিদ্ধ: এক আত্মীয়ের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে গিয়েছিলাম। সেখানেই এক কাছের বন্ধু ফোন করে খবরটা জানাল। ও টুইটার থেকে আমার সুযোগ পাওয়ার খবর জানতে পারে। ফোন রেখে আমিও বিসিসিআইয়ের টুইট দেখি। আমার নাম দেখে শুরুতে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। এরপর দলের তরফ থেকে ফোন এসেছিল। বাবা-মা তো দারুণ খুশি। এত বছরের পরিশ্রম সফল হল। এ বার সুযোগ পেলে নিজেকে উজাড় করে দেব।
শুধু নাইট বাহিনী নয়, ভারত এ দলের হয়েও নজর কেড়েছেন কর্ণাটকের এই তরুণ। ফাইল চিত্র।
প্রশ্ন: অধিনায়ক আপনার প্রশংসা করেছেন। কয়েক বছর আগেই আপনাকে দেশের ভবিষ্যৎ বলেছিলেন। আপনি কিছু বলবেন?
প্রসিদ্ধ: বিরাট কোহলীর মতো ক্রিকেটার আমার কথা বলছে, এটাই তো বড় প্রাপ্তি। আমাকে অনেক আগে থেকে চেনে। আসলে কেকেআরে যোগ দেওয়ার আগে আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে নেট বোলার ছিলাম। সেখানে এক নাগাড়ে বল করে যেতাম। তখন থেকেই বিরাটের সঙ্গে পরিচয়। অধিনায়কের এমন বার্তা পেলে ভাল তো লাগবেই। আমার আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়েছে। তবে দিনের শেষে মাঠে নেমে প্রমাণ করতে হবে। এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।
প্রশ্ন: ভারত এ দল এবং কেকেআরে খেলা আপনাকে কতটা সাহায্য করেছে?
প্রসিদ্ধ: অনেক সাহায্য করেছে। প্রচুর উন্নতি করেছি। ঘরের মাঠ ও বিদেশে ভারত এ দলের হয়ে একাধিক ম্যাচ খেলেছি। এই সফরগুলো আমাদের মত তরুণদের খুবই সাহায্য করেছে। একই সঙ্গে সাহায্য করেছে নাইট শিবির। আমাদের দলে একাধিক তারকা। শুভমন গিল, আন্দ্রে রাসেল, অইন মর্গ্যান, দীনেশ কার্তিকদের মতো ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে নেটে বোলিং করার পাশাপাশি প্রাক্তন বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। তাছাড়া গত তিন বছর আইপিএলে একাধিক ম্যাচ খেলার সুবাদেও নিজের ভুলত্রুটির ব্যাপারে অনেক কিছু উপলব্ধি করেছি।
গত তিন মরসুমে কেকেআর শিবিরের অন্যতম সদস্য কৃষ্ণ। ফাইল চিত্র।
প্রশ্ন: ভুবনেশ্বর কুমারের সঙ্গে রয়েছেন একাধিক তরুণ। দীপক চহার, মহম্মদ সিরাজ, টি নটরাজন, শার্দূলদের টপকে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?
প্রসিদ্ধ: বাইরের জগতে এই বিষয় নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও আমি কিন্তু একটুও চাপ অনুভব করছি না। কারণ আমি নিজের সঙ্গে লড়াই করি। ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়া গর্বের ব্যাপার। তাই এই মুহূর্তগুলো উপভোগ করতে চাই। আমাদের দলে প্রতিটি জায়গার জন্য একাধিক ক্রিকেটার রয়েছে। তাই প্রতিযোগিতা হওয়া স্বাভাবিক, এতেই দল সাফল্য পাচ্ছে।
প্রশ্ন: সীমিত ওভারের ক্রিকেটে স্লোয়ার বাউন্সার, স্লোয়ার ইয়র্কার, নাকল বল এখন বোলারদের প্রধান অস্ত্র। সেগুলোয় শান দেওয়া হয়ে গিয়েছে?
প্রসিদ্ধ: ধারাবাহিকতাই আমার অস্ত্র। আউটসুইং, ইনসুইং তো রয়েইছে। কিন্তু একই জায়গা থেকে বলকে দু’দিকে সুইং করানোর জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিকতা। সেটা নিয়ে অনেক দিন ধরে কাজ করছি। এ বারের বিজয় হজারে ট্রফিতে সেটা খুব কাজে দিয়েছে। ভুবি ভাইয়ের কাছ থেকেই এই ব্যাপারে পরামর্শ নিয়ে সামনের দিকে এগোতে চাই।