টি-২০ সিরিজের উত্তেজনা শেষ হতেই না হতেই বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের ফরম্যাটে নেমে পড়ছে টিম ইন্ডিয়া। ইনদওরের হোলকার স্টেডিয়ামে বিরাট-বাহিনীর প্রস্তুতি তাই তুঙ্গে। বাংলাদেশকে হারাতে দলে কি অতিরিক্ত পেসার নেওয়া হবে? দেখে নেওয়া যাক কোহালিদের প্রথম একাদশে কারা থাকতে পারেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে প্রথম বার ওপেন করতে নেমেই কামাল করেছেন রোহিত শর্মা। একটা ডাবল সেঞ্চুরি আর দু’টো সেঞ্চুরি দিয়ে অনেক সমালোচকেরই মুখ বন্ধ করে দিয়েছিলেন হিটম্যান। ওপেনিং স্লটে এই মুহূর্তে তাই টিম ইন্ডিয়ার অন্যতম ভরসা তিনি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও রোহিতের দুর্দান্ত ফর্ম দেখতে মুখিয়ে ফ্যানেরা।
ওপেনিংয়ে রোহিত শর্মার সঙ্গে জুটি বাঁধা প্রায় নিশ্চিত মায়াঙ্ক আগরওয়ালের। রোহিতের মতোই স্বপ্নের ইনিংস খেলেছেন গত টেস্ট সিরিজে। ঘরের মাঠে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে এসেছে তাঁর প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। পরের টেস্টেও সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি। ৭ টেস্ট খেলা ২৮ বছরের মায়াঙ্কের গড় ৫৫.৯০। রোহিতের মতোই তাঁর থেকেও বড় ইনিংসের আশায় টিম ইন্ডিয়া।
প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে গত টেস্ট সিরিজে দলকে ভরসা দিয়েছেন চেতেশ্বর পূজারা। রোহিত শর্মা বা মায়াঙ্ক আহরওয়ালের মতো রানের বন্যা বইয়ে দিয়ে না পারলেও দু’টি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। তবে গত দুই টেস্ট সিরিজে তাঁর ব্যাট থেকে কোনও সেঞ্চুরি আসেনি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেই পরিসংখ্যান নিশ্চয়ই বদলাতে চাইবেন পূজারা।
পুণেতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট কেরিয়ারের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান করেছেন বিরাট কোহালি। ২৫৪ রানের সেই অপরাজিত ইনিংসের স্মৃতি এখনও তাজা ক্রিকেট ফ্যানেদের মনে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিজের টেস্ট রেকর্ডে আরও রেকর্ড গড়ার সুযোগ বোধহয় হাতছাড়া করতে চাইবেন না ক্যাপ্টেন কোহালি।
মিডল অর্ডারে দেখা যেতে পারে অজিঙ্ক রাহানেকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে নিজের কেরিয়ারকে চাঙ্গা করেছেন তিনি। এর পর রাঁচীতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষেও তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে সেঞ্চুরি। ইনদওরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেই পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি করতে চাইবেন রাহানে।
২০১৮-র সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওভাল টেস্টে অপরাজিত ৮৬ করার পর থেকেই যেন টেস্টে নয়া অবতারে দেখা যাচ্ছে রবীন্দ্র জাডেজাকে। রাজকোটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অপরাজিত সেঞ্চুরি। প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে পুণেতে ৯১ রান। সঙ্গে ওই সিরিজের ৩ টেস্টে ১৩ উইকেট। ফলে ছ’নম্বরে দেখা যেতে পারে জাডেজাকে।
রবীন্দ্র জাডেজার সঙ্গী করে স্পিন বিভাগের নেতৃত্ব দিতে পারেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। টেস্টে ৩৫৭ উইকেট নেওয়া অশ্বিন অক্টোবরে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে নিজের ৫০ উইকেটের গণ্ডি পার করেছেন। পেসারদের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে ভাঙন ধরাতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন।
প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে গত টেস্ট সিরিজে নিজের যোগ্যতা আরও এক বার প্রমাণ করেছেন ঋদ্ধিমান সাহা। উইকেটকিপার হিসাবে টেস্টে ঋষভ পন্থের ধারাবাহিক ব্যর্থতার পর ভরসা দিয়েছে ঋদ্ধির গ্লাভস। যদিও ইনদওরে নিজের ব্যাটিং স্কিলও দেখাতে চাইবেন ঋদ্ধিমান।
মহম্মদ শামির সঙ্গী হিসাবে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে যেন অন্য এক উমেশ যাদবকে দেখা গিয়েছে। দুই টেস্টে নিয়েছেন ১১ উইকেট। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের বেগ দিতে ইনদওরের পিচে দেখা যেতে পারে উমেশকে।
ইনদওরে তিন স্পিনারের ফর্মুলা বোধহয় মাথায় রাখতে চাইবেন না টিম ম্যানেজমেন্ট। সে ক্ষেত্রে পেস অ্যাটাকে দেখা যেতে পারে ইশান্ত শর্মাকে। প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স না থাকলেও বাংলাদেশিদের বেগ দিতে পারেন ইশান্ত।
পেস অ্যাটাকে মহম্মদ শামির থাকাটা প্রায় নিশ্চিত। বিশাখাপত্তনমের পর রাঁচীতেও শামির বিধ্বংসী রূপ দেখেছেন প্রোটিয়ারা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ইনদওরের স্পোর্টিং পিচে ফের নিজের একই রূপ দেখাতে চাইবেন শামি।