অস্ট্রেলিয়া সিরিজের প্রথম ম্যাচেই বড় ব্যবধানে হার ভারতের। সেই ধাক্কা কাটিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে ফিরে আসতে গেলে ঢাকতে হবে অনেক ভুল ত্রুটি। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক বিরাটও হারের জন্য কোনও অজুহাত দিতে চাননি। তবে কি রবিবার ম্যাচের আগে নিজেদের পাল্টে নিতে পারবে ভারত? নজর দিতে হবে কোন কোন বিষয়? দেখে নেওয়া যাক।
এ বারের এই গুরুত্বপূর্ণ সফরের আগে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়নি ভারত। এত দিন আইপিএল খেলার পর এক হয়েছে দল। নিজেদের এক সঙ্গে খেলার ছন্দটাই যেন হারিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেদের মধ্যে এই বোঝাপড়ার অভাবটা কিন্তু কাটিয়ে ফেলতেই হবে।
গোটা ম্যাচে ভারতীয় বোলারদের কখনওই ভয়ঙ্কর দেখায়নি। বুমরা, শামিদের অনায়াসে খেলছিলেন ফিঞ্চরা। পিচ থেকে কোনও সাহায্য পাচ্ছিলেন না ভারতীয় পেসাররা। সুইংয়ের অভাব যেমন ছিল তেমনই যেন কিছুটা ক্লান্তও লাগছিল ভারতীয় পেস অ্যাটাককে। কোনও প্ল্যান বি দেখা গেল না বোলারদের মধ্যে। এই ‘প্ল্যান বি’টাই ভেবে ফেলতে হবে বিরাটদের। এবং তা করতে হবে খুব তাড়াতাড়ি।
ভারতীয় দল ভুগছিল ষষ্ঠ বোলারের অভাবে। প্রধান ৫ বোলার যখন ব্যর্থ, তখন কোনও বিকল্প ছিল ভারত অধিনায়কের হাতে। দলে হার্দিক থাকলেও তিনি বল করার জন্য এখনও পুরোপুরি ফিট নন। সেই অভাব ঢাকার মতো কেউ নেইও ভারতীয় দলে। এই বিষয়ে দ্রুত ভাবতেই হবে নির্বাচকদের।
ময়াঙ্ক ভাল শুরু করলেও যে ভাবে আউট হলেন সেটা কিন্তু বেশ চিন্তার। আরও একটা সুযোগ তিনি অবশ্যই পেতে পারেন, তবে রাহুলকেও দেখা যেতে পারে ওপেনিংয়ে এনে। সেই ক্ষেত্রে ময়াঙ্কের পরিবর্তে দলে আনা যেতে পারে শুভমন গিলকে।
বিরাট কি ফর্ম হারিয়েছেন? তাঁর ব্যাট থেকে শেষ সেঞ্চুরি এসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রায় দেড় বছর আগে। এর পর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া হোক বা নিউজিল্যান্ড সফর, ৩টি হাফ সেঞ্চুরি এলেও শতরান অধরাই। ভারতীয় দলের জন্য তাঁর ফর্মে ফেরাটা জরুরি।
মিডল অর্ডারে শ্রেয়াসের সফল হওয়াটা খুব জরুরী। তাড়াতাড়ি ২ উইকেট পড়ে গেলে অনেক বেশি দায়িত্ববান হতে হবে শ্রেয়াসকে। মনে রাখতে হবে ভারতে কিন্তু সূর্যকুমার বসে রয়েছেন। দিন দিন নিজের দাবি জোরালো করছেন তিনি।
হারা ম্যাচে ভারতের বড় প্রাপ্তি হার্দিক পাণ্ড্য। বলা ভাল ব্যাটসম্যান হার্দিক। তিনি যত ক্ষণ ক্রিজে ছিলেন আশা ছিল ভারতীয় সমর্থকদের মনে। বার বার বুঝিয়ে দিয়েছেন বল হাতে না পারলেও ব্যাট হাতে তিনি দলের প্রয়োজনে নিজেকে উজার করে দিতে প্রস্তুত। এই সিরিজে যা প্রচণ্ড প্রয়োজন হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দলে একমাত্র অলরাউন্ডার জাদেজা। তার পরে ব্যাট করতে নামা বোলারদের থেকে আশা করাটাই অনুচিত। নবদীপ তবুও কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে ব্যাটিংয়ের গভীরতা ধাক্কা খাচ্ছে। শামি, বুমরাদের ব্যাট হাতেও কিছুটা তৎপর হওয়া প্রয়োজন এই আধুনিক ক্রিকেটে।
রবিবার ফের খেলা সিডনির মাঠেই। যে রকম পিচ শুক্রবার দেখা গিয়েছে তার থেকে খুব বেশি পার্থক্য হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। টস জিতলে ব্যাট করাটাই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে রবিবার। তবে সেটা না হলে কিন্তু অনেক বেশি দায়িত্ব নিতে হবে ব্যাটসম্যানদের। প্রথম ম্যাচের মতো তাড়াহুড়ো করলে সিরিজের সাঙ্গ হয়ে যাবে সিডনিতেই।