আইপিএল শেষ হলেই ভারতীয় দল উড়ে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। সেখানে ২৬ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচের টি টোয়েন্টি সিরিজ। আজ সোমবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি টোয়েন্টি সিরিজের দল ঘোষণা করলেন নির্বাচকরা। কেমন হল ভারতের টি টোয়েন্টি দল? দেখে নিন তা।
বিরাট কোহালি- বিরাট কোহালি দলকে নেতৃত্ব দেবেন। তাঁর দিকে তাকিয়ে গোটা ক্রিকেটবিশ্ব। আইপিএলে এখনও পর্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর দলকে পরিচালনা করেছেন। টুর্নামেন্টের গোড়ার দিকে রান পাচ্ছিলেন না। কিন্তু পরের দিকে রানে ফিরেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর ক্যাপ্টেন্সির সঙ্গে ব্যাটিংয়ের দিকেও সবার নজর থাকবে।
শিখর ধওয়ন - বর্ষীয়ান ওপেনার। এ বারের আইপিএলে রেকর্ড গড়েছেন তিনি। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে পর পর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে কোহালির।
ময়ঙ্ক আগরওয়াল- মরুদেশে আয়োজিত আইপিএলে রাহুলের মতোই দারুণ ছন্দে রযেছেন ময়ঙ্ক আগরওয়াল। প্রথম ম্যাচ থেকেই নজর কেড়েছেন তিনি। একসময়ে অরেঞ্জ ক্যাপের দৌড়ে লোকেশ রাহুলের সঙ্গে জোড় লড়াই ছিল ময়ঙ্কের। এখন অবশ্য ময়ঙ্ক পিছিয়ে পড়েছেন দৌড়ে। তবুও যে রকম ফর্মে রয়েছেন তাতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি টোয়েন্টি সিরিজে ময়ঙ্কের ব্যাট গর্জে ওটার সম্ভাবনাই বেশি।
লোকেশ রাহুল- নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে গত সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিল রাহুলের। উইকেট কিপিংয়ের পাশাপাশি দারুণ ব্যাটিংও করেছিলেন। এ বারের আইপিএলে শুরু থেকেই দারুণ ছন্দে রয়েছেন রাহুল। এখনও পর্যন্ত অরেঞ্জ ক্যাপের দৌড়ে সবার থেকে এগিয়ে রাহুল। অস্ট্রেলিয়ায় এই ফর্ম ধরে রাখতে পারলে লাভবান হবে কোহালির দল।
শ্রেয়াস আইয়ার- তাঁর নেতৃত্বে দিল্লি ক্যাপিটালস এক সময়ে আইপিএলের পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে ছিল। দলকে দুর্দান্ত নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি দারুণ ব্যাটিংও করছেন। দলের প্রয়োজনে জ্বলে উঠছেন তিনি। বড় রান করছেন। অস্ট্রেলিয়ায় আইপিএলের ফর্ম ধরে রাখতে পারলে লাভ হবে ভারতেরই।
মণীশ পাণ্ডে- প্রয়োজনের সময়ে মারমুখী ব্যাটিং করতে পারেন। তাঁর ফিল্ডিও দারুণ। এ বারের আইপিএলে হায়দরাবাদের হয়ে ১১ ম্যাচে ৩১০ রান করেছেন তিনি। এর জন্যই নির্বাচকরা তাঁকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি টোয়েন্টি সিরিজের জন্য দলে সুযোগ দিয়েছেন।
হার্দিক পাণ্ড্য - যে কোনও সময়ে ম্যাচের রং বদলে দিতে পারেন হার্দিক পাণ্ড্য। রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে গতকাল ২১ বলে ৬০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন পাণ্ড্য। আর তাঁর ওই ইনিংস মুম্বইয়ের রান তোলার গতি বাড়িয়ে দেয়। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি পাণ্ড্যর বোলিংয়ের হাতও বেশ ভাল। টি টোয়েন্টিতে পাণ্ড্যর মতো অলরাউন্ডার দরকার যে কোনও দলের।
সঞ্জু স্যামসন: উপেক্ষা, যন্ত্রণার অবসান। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ভারতীয় দলে সুযোগ পেলেন সঞ্জু স্যামসন। এ বারের আইপিএলে সঞ্জু প্রথম থেকেই নজর কেড়েছেন। দলের প্রয়োজনে জ্বলে উঠেছেন। ১২টি ম্যাচ থেকে ৩২৬ রান করেছেন। আর তার পুরস্কারও পেলেন সোমবার। আইপিএলের শেষে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার বিমানে উঠছেন সঞ্জু।
রবীন্দ্র জাদেজা- বল করতে পারেন। ব্যাট ও ফিল্ডিংয়েও দারুণ। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে কোহালির হাতের অন্যতম অস্ত্র। এ বারের আইপিএলে চেন্নাই সফল হয়নি। জাড্ডু ১২ ম্যাচে ২০১ রান করেন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জাড্ডু কী করেন, তা দেখার অপেক্ষায় সবাই।
ওয়াশিংটন সুন্দর - এ বারের আইপিএলে ওয়াশিংটন সুন্দরকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ব্যবহার করেছেন বিরাট কোহালি। শুরুর দিকে তাঁকে বল করতে এনেছেন। অধিনায়কের আস্থার মর্যাদাও দিয়েছেন তিনি। বিপক্ষকে শান্ত রেখেছেন। এ বারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত তাঁর নামের পাশে লেখা রয়েছে ৬টি উইকেট।
যুজবেন্দ্র চহাল-বিরাট কোহালির হাতের অন্যতম সেরা অস্ত্র। এ বারের টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত চহাল ১৬টি উইকেট নিয়েছেন। রান আটকানোর পাশাপাশি উইকেট নেওয়ার জন্যই চহাল সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভয়ঙ্কর। অস্ট্রেলিয়ায় কোহালিকে নির্ভরতা দেবে চহালের স্পিন।
যশপ্রীত বুমরা - কোহালির পেস আক্রমণের আসল অস্ত্র। তাঁর বোলিংয়ে এত বৈচিত্র্য যে ব্যাটসম্যানরা বুমরার বলের নাগাল পান না। এ বারের আইপিলে ১১ ম্যাচে ১৭টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।
মহম্মদ শামি: যশপ্রীত বুমরার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার বাউন্সি পিচে ধারালো হয়ে উঠতে পারে মহম্মদ শামির জুটি। আসন্ন সফরে অজিদের বধ করতে টিম ইন্ডিয়ার বড় অস্ত্র হয়ে উঠতে পারেন তিনি। তা ছাড়া এ বারের আইপিএলে তাঁর সুইংয়ের মোকাবিলা করতে পারছেন না অনেকেই।
নবদীপ সাইনি -বলে গতি রয়েছে। সেই গতির আগুনে বিপক্ষের উইকেট তুলতে চান নবদীপ। এ বারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত অবশ্য নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। ৫ উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার প্রাণবন্ত পিচে নবদীপের গতিশীল বোলিং কাজে আসবে।
দীপক চহার- ধোনির দলের হয়ে বোলিং ওপেন করেন দীপক চহার। উইকেটের দুই প্রান্তে সুইং করাতে পারেন। এ বারের টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত ১২টি উইকেট নিয়েছেন চহার। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টি টোয়েন্টিতে ৭ রানের বিনিময়ে ৬টি উইকেট নেওয়া দীপক চহার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কোহালির বড় অস্ত্র।
বরুণ চক্রবর্তী: কেকেআরের আগের ম্যাচে দিল্লিকে একার হাতেই শেষ করেছিলেন বরুণ চক্রবর্তী। ৪ ওভারের হাত ঘুরিয়ে ২০ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। এ বারের আইপিএলে নজর কেড়েছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত ১১ ম্যাচে ১২ টি উইকেট নিয়েছেন। তাঁর পারফরম্যান্সে খুশি নির্বাচকরা। সেই কারণেই অস্ট্রেলিয়ার বিমানে উঠছেন বরুণ।