অবশেষে চূড়ান্ত হল ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজের সূচি। অ্যাডিলেড টেস্ট দিয়ে সিরিজ শুরু। যে টেস্ট এগিয়ে আনা হচ্ছে তিন দিন। উদ্বোধনী টেস্টের জায়গায় ব্রিসবেন পেল দ্বিতীয় টেস্ট। ম্যাচের সংখ্যা না কমিয়ে নির্ধারিত ৩৩ দিনেই সিরিজ শেষ করা হবে। নতুন সূচিতে একমাত্র মেলবোর্নের বক্সিং ডে টেস্টই পূর্বনির্ধারিত দিনে শুরু হচ্ছে।
সিরিজের শুরু পাঁচ দিন পিছিয়ে যাওয়ায় আবার মনে করা হচ্ছে, প্রথম থেকেই খেলতে পারবেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। বুড়ো আঙুলের চোট সারাতে যিনি প্রথম টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ান। অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কও হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের জন্য প্রথম টেস্ট থেকে প্রায় বাদ পড়ে গিয়েছিলেন। যদিও ক্লার্ক গত ক’দিন রিহ্যাব চালিয়ে যেতে পারেননি। ফিলিপ হিউজের সঙ্গে হাসপাতালে প্রায় পুরো সময়টাই ছিলেন ক্লার্ক। ইতিমধ্যেই হিউজের অন্ত্যেষ্টির জন্য ম্যাক্সভিল উড়ে গিয়েছেন তিনি।
আগামী বৃহস্পতিবার ব্রিসবেনে শুরু হওয়ার কথা ছিল প্রথম টেস্ট। কিন্তু বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ম্যাক্সভিলে হিউজের শেষকৃত্য। তার পরের দিন কোনও ভাবেই টেস্ট খেলতে নামতে পারতেন না অস্ট্রেলীয়রা। পরিস্থিতি এমন ছিল যে, গাব্বা টেস্ট বাতিল করে দেওয়ার কথাও উঠছিল। আবার বলা হচ্ছিল, গাব্বা আর অ্যাডিলেডের টেস্ট কয়েক দিন পিছিয়ে দেওয়া হোক। বা নতুন বছরে সিডনি টেস্টের পরে হোক ব্রিসবেন টেস্ট। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুটো বিকল্পই নাকচ হয়ে যায়। প্রথমটার ক্ষেত্রে বলা হয়, টেস্ট মাত্র দিনদুয়েক পিছোলে প্লেয়াররা মানসিক ভাবে নিজেদের সামলানোর যথেষ্ট সময় পাবেন না। দ্বিতীয়টা হলে টেস্ট সিরিজের পরে ত্রিদেশীয় ওয়ান ডে সিরিজের প্রস্তুতির সময় কমে যাবে।
চূড়ান্ত সূচিতে অ্যাডিলেড আর ব্রিসবেন টেস্টের মধ্যে মাত্র তিন দিন বিশ্রাম পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। ব্রিসবেন আর মেলবোর্ন টেস্টের ফাঁকে চার দিন। প্লেয়ারদের বাড়তি বিশ্রাম দিতে তাই মেলবোর্ন আর সিডনি টেস্টের মধ্যে একটু বেশি সময় রাখা হয়েছে। আরও ঠিক হয়েছে, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর অ্যাডিলেডে দু’দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারে ভারত। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের বিশ্বাস, অ্যাডিলেডে সিরিজ শুরু করাই এখন সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত। এত কম সময়ের মধ্যে চারটে টেস্টের ধকল নেওয়ার জন্যও তাঁরা তৈরি। অ্যাডিলেডে প্রথম টেস্ট করার আরও একটা কারণ, গত দুটো গ্রীষ্ম এই মাঠই ছিল হিউজের ঘরের মাঠ। যাঁর অকালমৃত্যুর পরে এই প্রথম হালকা ট্রেনিং করলেন অস্ট্রেলীয় টেস্ট স্কোয়াডের কয়েক জন। যাঁদের মধ্যে ছিলেন ব্র্যাড হাডিন এবং জশ হ্যাজেলউড।
শেফিল্ড শিল্ডের পরের রাউন্ডের ম্যাচগুলো চার দিন পিছিয়ে শুরু হবে ৯ ডিসেম্বর। যার মধ্যে একটা ম্যাচ সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে, যেখানে হিউজ-ট্র্যাজেডির সূত্রপাত। তাঁর স্মৃতির প্রতি এখনও শ্রদ্ধা জানিয়ে চলেছে তাঁর দেশ। গত শনিবার যেমন একটি গ্রেড ম্যাচে অ্যাশটন আগার ৯৮ করে আউট হয়ে যান। গত বছর ট্রেন্টব্রিজে তাঁর অভিষেক টেস্টে ওই স্কোরেই আউট হয়েছিলেন আগার। দশম উইকেটে তাঁর সঙ্গে সে দিন দু’ঘণ্টারও বেশি ব্যাট করেন হিউজ। এ দিন একটা ক্লাব ম্যাচে আবার ৪০৮ রানে ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দিলেন হ্যাডন ক্লাবের অধিনায়ক শন ম্যাকআর্থার। তিনি নিজে তখন ২২০ রানে ব্যাট করছিলেন, যার সঙ্গে আর এগারোটা রান যোগ করলেই নতুন ক্লাব রেকর্ড হত। ৪০৮ রানে ডিক্লেয়ার করার কারণ ওটা ফিলিপ হিউজের টেস্ট ক্যাপের নম্বর।
৯-১৩ ডিসেম্বর প্রথম টেস্ট, অ্যাডিলেড।
১৭-২১ ডিসেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট, ব্রিসবেন।
২৬-৩০ ডিসেম্বর তৃতীয় টেস্ট, মেলবোর্ন।
৬-১০ জানুয়ারি চতুর্থ টেস্ট, সিডনি।