দুঙ্গার চোখ ‘নতুন নেইমার’ গ্যাব্রিয়েলের দিকে।
পাঁচ বারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। কিন্তু কোপায় পেলের দেশের রেকর্ড সাদামাঠা। ১৯৯৭ থেকে ২০০৭— দশ বছরে চার বার কোপা ব্রাজিলে গেলেও একশো বছরের টুর্নামেন্টে উরুগুয়ে-আর্জেন্তিনার মতো রমরমা সাফল্য নেই ব্রাজিলের।
এ বার কী হবে?
সম্ভাবনা
ব্রাজিল সমর্থকদের শুনতে খারাপ লাগতে পারে। কিন্তু চলতি শতবার্ষিকী কোপায় ব্রাজিলের সম্ভাবনা সেই অর্থে দেখতে পাচ্ছি না। বরং মনে হচ্ছে, ওদের কোচ দুঙ্গা এই টুর্নামেন্টকে তার কিছু দিনের মধ্যেই নিজেদের দেশে অলিম্পিক্সের প্রস্তুতি হিসেবে দেখছে। দু’টো কারণে।
এক, ব্রাজিলের আজ পর্যন্ত ফুটবলে অলিম্পিক্স সোনা নেই। মেসির আর্জেন্তিনারও যা আছে।
দুই, দেশের মাঠে দুঙ্গার দল যদি সেই নজির গড়তে পারে, তা হলে সেটা দু’বছর আগেই ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ বিপর্যয়ের কাটা ঘায়ে কিছুটা হলেও মলম লাগানো হবে। ব্রাজিল কোচের আসনে দুঙ্গার জায়গাও অনেকটা মজবুত হবে।
এখন প্রশ্ন, কেন সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি না?
দুঙ্গার টিমে যারা বল ধরে খেলার লোক তারা এই কোপায় নেই। যার প্রথমেই আসবে নেইমারের নাম। এই ব্রাজিলের ৪০ শতাংশ আক্রমণ অপারেট হয় ওকে সামনে রেখে। দুঙ্গা ওকে পাবে অলিম্পিক্সের টিমে। ফলে কোপায় নেইমার বিহীন ব্রাজিলের আক্রমণ কিন্তু আমার মতে নির্বিষ।
এর উপর টিমে নেই অস্কার, মার্সেলো, থিয়াগো সিলভা, ডগলাস কোস্তার মতো ফুটবলাররা। অনেক দিন পরে ব্রাজিল দলে ডাক পেলেও কাকা শেষ মুহূর্তে চোট পেয়ে ছিটকে গেল। শুনছি লুইস গুস্তাভোও নাকি চোটের জন্য নেই। প্রথম এগারোর চার-পাঁচটা ইউটিলিটি ফুটবলার না থাকলে সমস্যা তো হবেই। তা ছাড়া ব্রাজিলের গ্রুপে ইকুয়েডর আর পেরু খুব একটা দুর্বল প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। বাকি থাকল হাইতি। ম্যাচটায় সনি নর্ডির দিকে আমাদের হয়তো আলাদা নজর থাকবে। কিন্তু ব্রাজিলের ওটাই সবচেয়ে সহজ লড়াই।
কেমন হতে পারে দুঙ্গার এগারো
গোলে খুব সম্ভবত দিয়েগো আলভেজকে রাখবে কোচ। ব্যাক ফোরে দানি আলভেজ থাকায় ডান দিক থেকে ওর বিখ্যাত ওভারল্যাপ থাকবে। যেটা এই নতুনদের নিয়ে গড়া ব্রাজিল টিমে দুঙ্গার অন্যতম অক্সিজেন। সঙ্গে জিল, মিরান্দার সঙ্গে আটলেটিকে মাদ্রিদের ফেলিপে লুইস।
দুঙ্গা হয়তো ব্যাক ফোরের আগে কাসিমিরোকে রাখবে। রিয়ালের কাসিমিরো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে দুর্দান্ত খেলেছে। ফলে দুঙ্গা ওই জায়গায় ওর উপর ভরসা রাখবেই। সামনে দুই উইংয়ে উইলিয়ান আর ফেলিপে কুটিনহো। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে লুকাস, রেনাতো বা গানসোর মধ্যে দু’জন। আর আক্রমণে জোনাস, হাল্ক আর ১৯ বছরে গ্যাব্রিয়েলের মধ্যে কেউ একজন।
যে ছকে খেলতে পারে
৪-১-৪-১। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী সেটাই ৪-৪-২ বা ৪-৩-৩ বদলে নিতে পারে।
এক্স ফ্যাক্টর
গ্যাব্রিয়েল বা গ্যাবিগোল। ১৯ বছরের এই তরুণ ফুটবলারকে বলা হচ্ছে নতুন নেইমার। ডান দিক থেকে দানি আলভেজের সঙ্গে গ্যাব্রিয়েলের বোঝাপড়া ব্রাজিলের লুকনো তাস।
কত দূর যেতে পারে
কোয়ার্টার ফাইনাল যাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। তবে এই ব্রাজিল শেষ চারের বাধা টপকালে সেটা অঘটন হবে।
কাল কোপায় ব্রাজিল বনাম ইকুয়েডর সকাল ৭-৩০