অগ্নিপরীক্ষা: ওমান ম্যাচের প্রস্তুতিতে সুনীল। এআইএফএফ
ফিফা ক্রমপর্যায়ে অনেক পিছিয়ে থাকা দেশ আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি ভারত। শেষ মুহূর্তের গোলে হার বাঁচিয়েছিল ভারত। তা সত্ত্বেও সুনীল ছেত্রীদের বিরুদ্ধে অনেক এগিয়ে থাকা ওমানকে হারানোর স্বপ্ন দেখছেন কোচ ইগর স্তিমাচ। আজ, মঙ্গলবার মাস্কাটে বিশ্বকাপ যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ খেলতে নামার আগে তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা যেখানেই খেলতে যাই, জেতার কথা ভেবেই খেলতে নামি। ওমান অত্যন্ত শক্তিশালী দল। ওদের বিরুদ্ধে গুয়াহাটিতে খেলছি। তবুও আমরা জেতার কথা ভেবেই নামব।’’
ইগর পেশাদার কোচ। দলকে চাঙ্গা করতে তিনি ‘জেতার জন্য খেলব’ বলবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবটা দেখিয়ে দিচ্ছে পয়েন্ট তালিকা। ‘ই’ বিভাগে ৪ ম্যাচ খেলে ওমানের পয়েন্ট ৯। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে ভারতের পয়েন্ট ৩। পাঁচ দলের গ্রুপে কাতারের পরেই রয়েছে ওমান (চার ম্যাচে ৯ পয়েন্ট)। ফিফা র্যাঙ্কিং তালিকায় ভারত যেখানে ১০৬ নম্বরে, সেখানে ওমান ৮৪ নম্বরে। সব চেয়ে চমকপ্রদ তথ্য, এ পর্যন্ত দুই দেশ ৮ বার মুখোমুখি হয়েছে। ছয়বার জিতেছে ওমান। দু’বার খেলা ড্র।
সেই পরিসংখ্যান মাথায় রেখেই সোমবার ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘গুয়াহাটিতে এগিয়ে গিয়েও ওমানের কাছে হেরেছিলাম আমরা। সেই হারের শোধ নেওয়ার কথা ভেবে মাঠে নেমে লাভ নেই। এই ম্যাচ থেকে পয়েন্ট পাওয়ার চেষ্টা করতেই হবে। গ্রুপের ম্যাচে এক পয়েন্টও খুব দামি।’’এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী ম্যাচে গুয়াহাটিতে ভারত মুখোমুখি হয়েছিল ওমানের। সুনীল গোল করে এগিয়ে দিয়েছিলেন দলকে। কিন্তু ওমানের স্ট্রাইকার আল মান্ধার জোড়া গোলে জিতেয়ে দেন দলকে। চার ম্যাচে চার গোল। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা তাঁকে কি প্রীতম কোটাল, আদিল খানরা আজ আটকাতে পারবেন?
ভারতীয় শিবিরের জন্য ভাল খবর, মায়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে দেশে ফিরে যাওয়া স্টপার আনাস এডাথোডিকা দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। আফগানিস্তান ম্যাচের আগে আনাস দেশে ফেরায় ভারতের রক্ষণ নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল। শোকের মধ্যেও আনাস ফিরে আসায় ইগর আপ্লুত। বলেছেন, ‘‘দুঃখের মধ্যেও এত তাড়াতাড়ি আনাস দেশের হয়ে খেলতে চলে এসেছে এটা বড় ব্যাপার। আমার দলের চরিত্র এটা থেকেই স্পষ্ট। ওমানের বিরুদ্ধে সবাই একসঙ্গে ঝাঁপাতে চায়।’’
খাতায় কলমে পরের রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ এখনও রয়েছে ভারতের। কিন্তু বাস্তবে কাজটা খুবই কঠিন। অলৌকিক কিছু না ঘটলে ইগরের দলের পরের পর্বে যাওয়া কোনও ভাবে সম্ভব নয়। নিয়মানুযায়ী এশিয়া থেকে কাতার বিশ্বকাপের মূলপর্বে যাওয়ার জন্য দুটি ধাপ পেরোতে হবে। এখন ভারত খেলছে প্রথম পর্বে। এশীয় অঞ্চলের এখন যে আটটি গ্রুপের খেলা চলছে, সেখান থেকে ১২ দলের যাওয়ার কথা পরের পর্বে। সব গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন আটটি দলের সঙ্গে রানার্স হওয়া সেরা চারটি দলও খেলবে দ্বিতীয় পর্বে।
২০২০-র বিশ্বকাপ সংগঠক কাতার যদি ভারতের গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়, তা হলে আরও একটি রানার্স দল যাবে পরের রাউন্ডে। অর্থাৎ ভারতকে পরের পর্যায়ে যেতে গেলে গ্রুপে অন্তত রানার্স হতেই হবে। ইগরের দল এখন রয়েছে গ্রুপের চার নম্বরে। এ বার এশিয়া থেকে পাঁচটি দল খেলবে বিশ্বকাপের মুল পর্বে। সংগঠক কাতার তো খেলছেই। বাকি চারটি দল বাছা হবে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে। আটটি গ্রুপ থেকে যে ১২ টি দল দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবে, তাদের দুটি গ্রুপে ভাগ করা হবে।
ওই গ্রুপ গুলির মধ্যে লিগ হবে। দুই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স খেলবে পরের বছর কাতার বিশ্বকাপে। পথ এত কঠিন যে, সুনীলদের কোচ অত দূর ভাবতে চাইছেন না। তিনি এ দিন যা অনুশীলন করিয়েছেন, তাতে রক্ষণ জমাট করে ওমানকে থামাতে চান।
মঙ্গলবার বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্ব: ওমান বনাম ভারত (সন্ধে ৮.৩০, স্টার স্পোর্টস ওয়ান)।