পরপর দু’বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জিতেছেন তিনি। ভারতীয় ব্যাডমিন্টনে যে নজির বিরল। সাইনা নেহওয়ালেরও নেই।
তাঁর কাছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের চেয়েও বেশি দামি অলিম্পিক্স পদক।
যিনি রিও অলিম্পিক্সে ব্যাডমিন্টনে শুধু নিজের নয়, সঙ্গে আরও ছয় ভারতীয় খেলোয়াড়ের ছাড়পত্র পাওয়া নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন।
তবে সবচেয়ে বেশি উত্তেজিত কেরিয়ারের প্রথম অলিম্পিক্সে নামা নিয়ে। তিনি— পুসারেলা বেঙ্কট সিন্ধু।
এ দিন বলেন, ‘‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের চেয়েও অলিম্পিক্স বড় ব্যাপার। সবার স্বপ্ন থাকে অলিম্পিক্স পদক জেতার। যেখানে পরিবেশ, পরিস্থিতি একেবারে অন্য রকম। তার উপর এটা আমার প্রথম অলিম্পিক্স বলে আরও উত্তেজনা হচ্ছে।’’ গত বছর চোটের জন্য দীর্ঘদিন কোর্টের বাইরে কাটিয়েছিলেন। সেই চোট যাতে আর ভোগাতে না পারে তাই শুক্রবার বিশেষ ‘ইনসোল’ থাকা জুতোর জন্য মুম্বইয়ে এসেছিলেন সিন্ধু। এই বিশেষ জুতোয় কোর্টে তাঁর চোটের সম্ভাবনা কমবে।
তাঁর আর সাইনার উপর যে পদক জয়ের আশায় ভক্তরা অনেক আশা নিয়ে তাকিয়ে থাকবেন সেটা সিন্ধু জানেন তাই অলিম্পিক্সের প্রস্তুতি কী ভাবে নিচ্ছেন প্রশ্ন করতে বলেন, ‘‘আমরা প্রচুর খাটছি। কোর্টে, কোর্টের বাইরেও। প্রধান লক্ষ নিজেদের চোটমুক্ত রাখা। ফিট থাকা। আপাতত আমি এখন নিজের ফুটওয়ার্ক নিয়ে পড়ে আছি। কোর্টে আরও দ্রুত নড়াচড়া করতে।’’ পাশাপাশি অবশ্য এটাও বললেন, ‘‘বিশ্বের ১-২০ র্যাঙ্কিংয়ে থাকা যে কোনও প্লেয়ারই পদক জিততে পারে অলিম্পিক্সে। যার দিন থাকবে সে-ই জিতবে। তাই কাউকে হাল্কা ভাবে নেওয়া যাবে না।’’
রিওতে নামার আগে সিন্ধু আরও একজনের থেকে অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন। সতীর্থ সাইনা। বললেন, ‘‘সাইনা প্রচুর সাফল্য পেয়েছে। পাচ্ছে। সাইনার সাফল্য দেখে আমার মনে হয় আমাকে আরও ভাল খেলতে হবে। নিজেকে প্রমাণ করতে আরও খাটতে হবে। সাইনা আসলে অনুপ্রেরণা। সাইনার অভি়জ্ঞতাও প্রচুর। রিও ওর তৃতীয় অলিম্পিক্স।’’ তিনি যে সাইনার মতোই অলিম্পিক্সে পদক জিতে দেশে ফেরার স্বপ্ন দেখেন সেটাও স্পষ্ট করে দেন সিন্ধু। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ২০ বছরের হায়দরাবাদি তারকা যেন চলে যান চার বছর আগে। সাইনার লন্ডন অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জিতে দেশে ফেরার দিন। ‘‘আমরা সবাই সে দিন সাইনাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। বিরাট ব্যাপার হয়েছিল। কত মানুষ এসেছিল সাইনাকে দেখতে। দারুণ লাগছিল তখন।’’
সাইনার কাছে অলিম্পিক্স পদকটা নিশ্চয়ই দেখতে চেয়েছিলেন? এ বার যেন সাইনার কোর্টের প্রতিদ্বন্দ্বীর গলাটা বেরিয়ে এল, ‘‘না সাইনার কাছে মেডেলটা দেখতে চাইনি।’’ যেন বলতে চাইলেন সাইনার পদক দেখতে নয়, অলিম্পিক্স থেকে নিজে পদক জিততে চান। সেটাই চ্যালেঞ্জ। আর সেটা পাওয়ার পথে সাইনার সামনে পড়লে? ‘‘সেটা হতেই পারে। আমরা একজনই জিতব তা হলে সে দিন। আমরা কিন্তু কোর্টের বাইরে বন্ধু। কোর্টে অবশ্য লড়াইটা আছে।’’