বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত অপ্রতিরোধ্য ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের পর এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও হেলায় হারাল বিরাট বাহিনী। তাদের এই জয়ের পিছনে কী কী কারণ রয়েছে? কোথায় দরকার উন্নতির? দেখে নেওয়া যাক।
টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার পর শুরুতেই ধাক্কা রো'হিট' ফিরে যাওয়ায়। সেই ধাক্কা সামলে দেন কিং কোহালি। ৭২ রানের ত্রুটিহীন ইনিংসে একটাই লুজ শট খেলেন এবং সেই শটেই ফিরে যান। কিন্তু যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন দিয়ে যান চাপে পড়ে যাওয়া ভারতীয় ব্যাটিংকে।
বিরাটের এই ইনিংস শুধু যে ওপেনারদের ব্যর্থতা ঢেকে দেয় তাই নয়, সুযোগ করে দেয় মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের বড় শট নেওয়ারও। যদিও সেই সুযোগ নিতে ফের ব্যর্থ হন বিজয় শঙ্কর ও কেদার যাদব। যথাক্রমে ১৪ ও ৭ রান করে দ্রুত ফিরে যান তাঁরা। যা ভারতকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়।
গত ম্যাচের মন্থর ব্যাটিং বোধহয় পরিবর্তন আনে ধোনির ব্যাটিং অর্ডারে। প্যাঁচের বদলে তিনি নামেন ছয়। যদিও এই ম্যাচেও শুরুতে সেই ধীর লয়ের ব্যাটিংই করেন ধোনি। যা ভারতের রান ৩০০ না হওয়ার বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে তাঁর ৬১ বলে অপরাজিত ৫৬ এ দিনের জয়ের অন্যতম কারণও বটে।
বিরাটের সঙ্গে ধোনির পার্টনারশিপ সুযোগ করে দেয় হার্দিক পাণ্ড্যকে খোলা মনে খেলতে। তাঁর ৩৮ বলে ৪৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস ভারতকে ২৫০ রানের গণ্ডি টপকাতে সাহায্য করে।
শেষ ওভারে ধোনির নেওয়া ১৬ রান আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয় গোটা টিমের। সেই পুরনো ধোনির ছায়া দেখতে পাওয়া যায় তখনই। থমাসের করা ওই ওভারে একটি চার ও দু’টি ছয় বুঝিয়ে দেয় ধোনির মধ্যে এখনও কিছু বারুদের অস্তিত্ব রয়েছে।
ভয়ঙ্কর ক্রিস গেল নিজের দিনে যেকোনও টার্গেটকেই যে নিমেষে টপকে দিতে পারেন, তা পোড় খাওয়া শামিরা ভালই জানেন। শুরুতেই গত ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা শামি গেলকে ফিরিয়ে দিতেই ২৬৯-এর লক্ষ্যটা অনেকটাই বড় হয়ে যায় ক্যারিবিয়ানদের কাছে।
বুমরাহ-শামির জুটি যে ভাবে বিপক্ষের মনে শুরুতেই ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে, তা থেকে বেরিয়ে আসা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে যেকোনও ব্যাটিং লাইনআপের পক্ষে। এতদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের যে চিন মিউজিক শুনিয়ে এসেছেন, তা এবার ফিরিয়ে দেওয়ার পালা নতুন ভারতীয় বোলিং লাইন আপের।
‘কুল-চা’ জুটির কৃপণ বোলিং আরও শ্বাসরোধ করে দিচ্ছে মাঝের ওভারগুলোতে। যার সুযোগ নিয়ে উইকেট তুলে নিচ্ছেন হার্দিক পাণ্ড্য।
ওয়েল অয়েল্ড মেসিনের মতো ছুটতে থাকা বিরাট বাহিনীর চিন্তার একমাত্র কারণ বোধহয় তাদের মিডল অর্ডার। ঋষভ পন্থ, দীনেশ কার্তিকের মতো ব্যাটসম্যানরা কিন্তু বেঞ্চে বসে রয়েছেন তা মনে রাখা উচিত শঙ্কর-যাদবের।
ধোনির ব্যাট হাতে কিছুটা পড়তি ফর্ম চিন্তার কারণ হলেও উইকেটের পিছনে তাঁর উপস্থিতি বটবৃক্ষর মতোই ছায়া যোগায় বিরাটের টিম ইন্ডিয়াকে। সেই নিশ্চিন্ত ছায়া এত সহজে যে ভারত হারাতে চাইবে না তা নিশ্চিত। তবে এ দিন উইকেটের পিছনেও কিছুটা নড়বড়ে দেখিয়েছে ধোনিকে। প্রচুর বাই রান দিয়েছেন তিনি। ফস্কেছেন স্টাম্পিংয়ের সুযোগও।