২০০৭ বিশ্বকাপের গ্লেন ম্যাকগ্রা বা ২০১১ বিশ্বকাপের যুবরাজ সিংহ। এঁদের পারফরম্যান্সের জোরে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। কিন্তু বিশ্বকাপের ইতিহাসে এমনও কিছু ট্র্যাজিক নায়ক রয়েছেন, যাঁরা নিজেদের সেরাটা দিয়েও চ্যাম্পিয়ন করতে পারেননি দেশকে। দেখে নেওয়া যাক এমনই কিছু ঘটনা
১৯৯৬ বিশ্বকাপ স্মরণীয় মার্ক ওয়ার জন্য। মোট ৪৮৪ রান করেন মার্ক। ফাইনালে অরবিন্দ ডি’সিলভার বল হাতে তিন উইকেট ও ব্যাট করতে নেমে অনবদ্য শতরানের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ভর করে ইতিহাস রচনা করে শ্রীলঙ্কা। ডি’ সিলভা স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। মার্ক ওয়া নিজের সেরাটা উজাড় করে দিলেও তিনি স্মৃতির অতলে তলিয়ে গিয়েছেন।
১৯৯৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ল্যান্স ক্লুজনারের সেমিফাইনালে হারের পর হতাশায় মাঠে হাঁটু গেড়ে বসে পড়া সবার মনে আছে। ওইদিন অবধারিত জয় মাঠে ফেলে আসার পরথেকেই দক্ষিণ আফ্রিকা দলের ভাগ্যে জোটে ‘চোকার্স’ বদনাম। বিশ্বকাপে ১৭টি উইকেট ও ১২২.২ স্ট্রাইক রেট নিয়ে শেষের ওভারে মোট ২৩০ রান করে প্রোটিয়াদের বিশ্বকাপের শেষ চারে পৌঁছে দেন ক্লুজনার। তবুও ট্রফি না জিতেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হয় তাঁকে।
২০০৩ বিশ্বকাপে সচিন তেন্ডুলকরের ভাঙা আঙুল নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শোয়েব আখতারকে মারা আপার কাটটি চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। বিশ্বকাপ জুড়েই রাজ করেছিলেন ‘মাস্টার ব্লাস্টার’। সেই বিশ্বকাপে সচিনের করা ৬৭৩ রান এক বিশ্বকাপে এখনও সর্বাধিক। পাকিস্তান হোক বা শ্রীলঙ্কা, সচিনের চওড়া ব্যাট ভারতকে নিয়ে গিয়েছিল ফাইনালে। শেষরক্ষা করতে পারেননি সচিন।
২০০৭ বিশ্বকাপে মুথাইয়া মুরলীধরনের অফস্পিনের জালেআটকে পড়েন বহু ব্যাটসম্যান। কিন্তু লাসিথ মালিঙ্গার ডেথ ওভারে ব্যাটসম্যানের পায়ের পাতা লক্ষ্য করে নির্ভুল ইয়ার্কার ছিল শ্রীলঙ্কার ফাইনালে যাওয়ার অন্যতম কারণ। মালিঙ্গা ৪.৮৬-এর ইকোনমি রেট-সহ ৮ ম্যাচে ১৮ টি উইকেট নেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে চার বলে চার উইকেট নিয়ে একাই ম্যাচের রং বদলে দেন মালিঙ্গা। শেষে মুরলী ও মালিঙ্গা হয়ে রইলেন সে বারের বিশ্বকাপের পরাজিত নায়ক।
২০১১ সালের ওয়াংখেড়েতে সেঞ্চুরি করার পরে শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক মাহেলা জয়বর্ধনে গ্যালারি লক্ষ্য করে ব্যাট তুলেছিলেন। মাহেলার স্ত্রী স্ট্যান্ড থেকে তাঁকে ইশারায় বলছিলেন, উইকেটে টিকে থাকো। কিন্তু, শ্রীলঙ্কার রান তাড়া করতে নেমে গৌতম গম্ভীর ও মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ব্যাটের জোরে শেষ হাসি হাসে ভারতীয় দল। হতাশায় মাঠ ছাড়তে হয় মাহেলাকে।
২০১৫ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ছিটকে যাওয়ার পরে মর্নি মর্কেলের কান্না এখনও মনে রয়েছে সবার। তিনিই ট্র্যাজিক নায়ক।
চলতি বিশ্বকাপে এমনই এক নায়ক শাকিব আল হাসান। শাকিব এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ‘ওয়ান ম্যান আর্মি’। ব্যাট হাতে ৬০৬ রান এবং বল হাতে ১১ উইকেট। এরকম দুরন্ত পারফরম্যান্সের পরেও শাকিব কিন্তু বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে তুলতে পারেননি।