দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলাটা সব ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে। তবে নিজের দেশের হয়ে নয়, চলতি বিশ্বকাপে এমন অনেকে ক্রিকেটার রয়েছেন যাঁরা খেলছেন অন্য কোনও দেশের জার্সিতে। ‘বিদেশি’ এই ক্রিকেটারদের চেনেন?
একটা নয়, দু’টো দেশের হয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট খেলেছেন অইন মর্গ্যান। প্রথমে আয়ারল্যান্ড ও পরে ইংল্যান্ডের জার্সিতে। জন্ম আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে। সে দেশের হয়ে ২৩টি ওয়ান ডে-তে ৭৪৪ রান করেছেন এই বাঁ-হাতি। ২০০৯-এ বিশ্ব টি-২০তে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার ডাক মেলে। তখন থেকে ইংল্যান্ডের জার্সিতে ২২৭ ওডিআই-তে করেছেন ৭২২৬ রান।
অলরাউন্ডার হিসাবে বিশ্বের অন্যতম সেরাদের তালিকায় রয়েছেন বেন স্টোকস। তবে ইংল্যান্ডে নয়, তাঁর জন্ম হয়েছিল নিউজিল্যান্ডে। বাবা জেরাল্ড স্টোকস রাগবি খেলেছেন সে দেশের হয়ে। বাবার সঙ্গে খুব ছোটবেলায় ইংল্যান্ডে পাড়ি দেন বেন। এর পর সে দেশের জার্সিতে ১৯ বছর বয়স থেকে খেলছেন তিনি। ৮৯ ওডিআইতে ২৩৩৭ রান রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ওডিআই রান কে করেছেন বলুন তো? উত্তরটা অনেকেরই জানা, জেসন রয়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৮০ রান। তবে ইংল্যান্ডে নয়, জেসনের জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে। ১০ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে চলে আসে তাঁর পরিবার। ৮০টি ওডিআইতে এই মারকাটারি ব্যাটসম্যানের রয়েছে ৩১৫৩ রান।
বাবা খেলেছেন এক দেশের জার্সিতে। ছেলে খেলছেন অন্য দেশের হয়ে। এমন প্রোফাইল রয়েছে ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার টম কুরানের। টমের বাবা কেভিন কুরান খেলেছিলেন জিম্বাবোয়ের হয়ে। ২৪ বছরের অলরাউন্ডার টম ১৭টি ওডিয়াইতে ১৭৮ রান করেছেন। উইকেট-সংখ্যা ২৭। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে জন্মানো টম এখন বিশ্বের অন্যতম তরুণ প্রতিভা।
বিশ্বের নানা প্রান্তের টি-২০ লিগে খেলেছেন জোফ্রা আর্চার। ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে দিলেও জোফ্রার জন্ম বার্বাডোজের ব্রিজটাউনে। ইংল্যান্ডের সাসেক্সের হয়ে খেলে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। এর পর বিবিএল-এ হোবার্ট হ্যারিকেনের হয়ে মাঠে নামেন। আইপিএল খেলেন রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে। ৮ ওডিআইতে ১৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
ছোটবেলায় হাত পাকিয়েছিলেন পেসার হিসাবে। তবে এখন স্পিন বোলিংয়ে নাম করেছেন পাকিস্তানের ইমাদ ওয়াসিম। ব্যাট হাতেও কম যান না। তবে পাকিস্তানের হয়ে খেললেও ইমাদের জন্ম হয়েছিল ওয়েলসের সোয়ানসিতে। জন্মসূত্রে ব্রিটিশ ইমাদ ৪৮টি ওডিআইতে ৮২৫ রান ছাড়াও তুলে নিয়েছেন ৩৯ উইকেট।
লোয়ার অর্ডারে নেমে মারকাটারি ব্যাট করতে পারেন। সঙ্গে ফাস্ট বোলিংয়ের হাতটাও বেশ ভাল। অলরাউন্ডার হিসাবে নিউজিল্যান্ডের বড় ভরসা কলিন ডে গ্র্যান্ডহম। তবে কিউয়িদের হয়ে খেললেও কলিনের জন্ম জিম্বাবোয়েতে। ২০০৪-এ সে দেশের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপও খেলেছিলেন। ৩১টি ওডিআইতে ৪৫৮ রান ছাড়াও রয়েছে ২১ উইকেট।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেললেও উসমান খোয়াজার জন্ম হয়েছিল পাকিস্তানের ইসলামাবাদে। নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে কেরিয়ারের শুরু। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন ২০১১-তে। অজি দলে তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রথম ক্রিকেটার। ৩৬টি ওডিআইতে ১৩৩৬ রান করেছেন তিনি।
বিপক্ষ রানের পাহাড় গড়ে ফেলেছে। উইকেট প্রয়োজন! এমন বহু সময় দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাপ্টেন বল তুলে দিয়েছেন ইমরান তাহিরের হাতে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে উইকেটও উপহার দিয়েছেন তিনি। ৪০ বছর বয়সেও ভেল্কি দেখাচ্ছেন তাঁর গুগলি দিয়ে। তবে প্রোটিয়াদের হয়ে খেললেও তাঁর জন্ম লাহৌরে। পাকিস্তানের যুব দলের হয়েও খেলেছেন ইমরান। ১০৩ ওডিআইতে নিয়েছেন ১৭০ উইকেট। সঙ্গে রয়েছে ১৫৬ রান।