কিংবদন্তি: ফাইনালের আগে মুখোমুখি সচিন ও লারা। এএফপি
লর্ডসের সবুজ উইকেটে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে কি ঠিক করলেন কেন উইলিয়ামসন? কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকর থেকে ব্রায়ান লারা যদিও জানিয়ে দিলেন, অধিনায়ক কেন একটু বেশিই সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। একাবের ঘাসে ঢাকা সবুজ পিচে খেলা হচ্ছে বিশ্বকাপ ফাইনালে। যা দেখে বিস্মিত সচিন থেকে লারা।
রবিবার নিউজ়িল্যান্ড ইনিংস শেষে সচিন বলেন, ‘‘ফাইনালের চাপ যে দল নিতে পারে, তারাই জেতে। এ নতুন কথা নয়। তাই বেশির ভাগ দলের অধিনায়কেরাই ফাইনালে শুরুতে ব্যাট করে নিতে চায়। যাতে রান তাড়া করার চাপ নিতে না হয়। কেন উইলিয়ামসনও সেটাই চেষ্টা করেছে। কিন্তু এই উইকেট টস জিতে ব্যাট করার মতো নয়। প্রচণ্ড ঘাস। তাই পেসারেরা সাহায্য পেয়েছে। আমরা দেখেছি ক্রস সিমে বল করেও সাফল্য আসছে। যেমন দেখা গেল লায়াম প্লাঙ্কেটের ক্ষেত্রে।’’
এ ধরনের পিচে পেসারদের কী ভাবে মোকাবিলা করা যায়? সচিনের উত্তর, ‘‘পিচ থেকে বোলাররা বেশি সাহায্য পেলে ব্যাটসম্যানদের অভিনব কিছু চেষ্টা করা উচিত। সাধারণত যে পিচে অতিরিক্ত বাউন্স পাওয়া যায়, সেখানে আড়াআড়ি শট খেলা উচিত। যেমন স্কোয়ার কাট, পুল, হুক মারতে পারলে সব চেয়ে ভাল। টম লাথাম যেমন উইকেটের আড়াআড়ি খুব ভাল খেলতে পারে। তাই রান পেতে ওর সমস্যা হয়নি। এমনকি হেনরি নিকোলসকেও দেখা গিয়েছে স্কোয়ার অব দ্য উইকেট খুব ভাল খেলে। তবে লায়াম প্লাঙ্কেটের প্রশংসাও করতেই হচ্ছে। অসাধারণ জায়গায় বল রেখে গিয়েছে ও। যদিও বিশ্বকাপের ফাইনালে এ ধরনের পিচে হবে তা একেবারেই আশা করা যায়নি।’’
ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান লারা অবশ্য কেনের পাশেই দাঁড়ালেন। বললেন, ‘‘আমিও টস জিতলে ব্যাটিংই করতাম। লর্ডসের উইকেট দ্বিতীয় ইনিংসে বদলায়। মাঠের ঢালের জন্য ইনিংস জুড়ে সাহায্য পায় বোলাররা। তাই শুরুতেই ব্যাট করে নেওয়া ভাল। আর এ ধরনের পিচ থাকলে তো আরওই ব্যাট করে নাও। কারণ, পরের দিকে বল কী রকম ব্যবহার করবে বলা যায় না।’’
তবে নিউজ়িল্যান্ডের ব্যাটিংয়ে খুশি হতে পারেননি তিনি। ৫০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান করে উইলিয়ামসনের দল। লারা মনে করেন, মার্টিন গাপ্টিলের ছন্দে না থাকাই কাঁটা হয়ে দাঁড়াল নিউজ়িল্যান্ডের। বলছিলেন, ‘‘মার্টিন গাপ্টিলের সব চেয়ে খারাপ বিশ্বকাপ গেল হয়তো। এ দিন শুরুতে ছন্দে দেখাচ্ছিল ওকে। তবুও সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারল না। এলবিডব্লিউ হওয়ার পরে ডিআরএস-ও নষ্ট করল। যার ফল ভোগ করতে হল রস টেলরকে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘একটি দলের ভিত গড়ে তাদের ওপেনার। সেখানে গাপ্টিল কোনও ম্যাচেই সেরাটা দিতে পারেনি। তাই হাল ধরতে হচ্ছিল উইলিয়ামসনকে। একদিন ও উইকেটে থাকতে পারেনি, সে দিনই এই অবস্থা।’’
১২ বছর আগে ইংল্যান্ডের হয়ে শেষ বিশ্বকাপ খেলা লায়াম প্লাঙ্কেট এ দিন তিন উইকেট নেন। সমান সংখ্যক উইকেট ক্রিস ওকসেরও। দু’জনেরই প্রশংসা করে গেলেন কেভিন পিটারসেন। বললেন, ‘‘ইংল্যান্ডের বোলিং নিয়েই সব চেয়ে বেশি চিন্তা ছিল। কিন্তু ওকস, প্লাঙ্কেট ও জোফ্রা আর্চারের ত্রয়ী সেই দুশ্চিন্তা কাটিয়ে দিয়েছে।’’