শুরু হয়ে গিয়েছে ক্রিকেটের বিশ্বযুদ্ধ। ক্যারিবিয়ান পেস আক্রমণে ২১.৪ ওভারের মধ্যেই মাত্র ১০৫ রানে প্রথম ম্যাচে অলআউট হয়ে গিয়েছে পাকিস্তান। ১৯৯২ সালেও বিশ্বকাপের শুরুটা এই ভাবেই হয়েছিল ইমরানদের। তার পরেই ঘুরে দাঁড়িয়ে স্বপ্নকে ছোঁয়া। সে বারই প্রথম এবং শেষ বার বিশ্বকাপ জেতে পাকিস্তান। সেই বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যরা আজ কোথায়?
সেই ফাইনাল ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান। ওপেনার আমির সোহেল মাত্র ৪ রানে আউট হন, বিখ্যাত ক্রিকেটারের উপর ভরসা ছিল অনেকটাই। এখন তিনি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের মুখ্য নির্বাচক।
সোহেলের সঙ্গে ছিলেন রামিজ রাজা। ২৬ বলে মাত্র ৮ রান করে ফাইনাল ম্যাচে আউট হন তিনি। যদিও টুর্নামেন্টে পারফরম্যান্স ছিল চমৎকার। তিনি একজন নামী ধারাভাষ্যকার এখন। ইংরাজি ও হিন্দিতে বেশ পারদর্শী। চলতি বছরেও রামিজের ধারাভাষ্য শোনা যাবে ক্রিকেট যুদ্ধে।
ইমরান খান দেশের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন হিসাবে। তাঁর ৭২ রান ছিল পাকিস্তানের মোট ২৪৯ রানের ভিত্তি। দেশকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছিলেন ইমরান। ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর একেবারে ভোলবদল। রাজনীতির আঙিনায় পা রাখা বিশ্বকাপজয়ী ক্যাপ্টেন বর্তমানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
জাভেদ মিঁয়াদাদের অর্ধশতরান ছিল সে বছরের ফাইনালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ প্রতিটি বিশ্বকাপে খেলেছেন তিনি। অবসরের পর ধারাভাষ্যকার, নির্বাচক, কোচ হিসাবে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন ইনজামাম উল হক। সারা টুর্নামেন্টে চমৎকার খেলেছিলেন তিনি। ফাইনালেও করেছিলেন ৪২ রান। অবসর নেওয়ার পর পাকিস্তান ক্রিকেট দলের মুখ্য নির্বাচক ছিলেন তিনি। কোচ হিসাবেও দেখা গিয়েছে তাঁকে।
ওয়াসিম আক্রম। গোটা বিশ্ব মুগ্ধ হয়ে যাঁর বোলিংয়ের দিকে তাকিয়ে থাকত। ১৯৯২ বিশ্বকাপে তাঁর বোলিংয়ে ভর করে ফাইনালে ওঠে পাকিস্তান। ফাইনালে ১৮ বলে ৩৩ রান করেন। মাত্র ৪.৯ ইকনমি রেটে ৩ উইকেট পান আক্রম। ধারাভাষ্যকার ও কোচ হিসাবে কাজ করেন তিনি।
সেলিম মালিক ১৯৯২ সালের ফাইনালে খুব একটা খারাপ খেলেননি। তবে ২০০০ সালের পর গড়াপেটা কাণ্ডে নাম জড়ানোয় তিনি আর ক্রিকেট খেলতে পারেননি। এ পর বন্ধু হামজা ইউসুফের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন। কোচ হওয়া চেষ্টা করলেও মেলেনি সুযোগ। বর্তমানে লাহৌরে একটা ক্রিকেট অ্যাকাডেমি খোলার পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইজাজ আহমেদ সারা বিশ্বকাপে ভাল খেলেন। চমৎকার বোলিংও করেছেন, ৩ ওভারে ১৩ রান দিয়েছিলেন মাত্র। বিশ্বের অন্যতম সেরা ফিল্ডারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল জয়ের পিছনে। ২০০৯ সালে পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব ১৯ দলের কোচ হন। পাকিস্তানের জাতীয় দলেরও কোচ হন ওয়াকার ইউনিসের সঙ্গে। লাহৌর ক্যালেন্ডার্স দলের পরামর্শদাতা তিনি।
মইন খান পাকিস্তানের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। ফাইনালে ইয়ান বথাম, অ্যালেক স্টুয়ার্ট, নিল ফেয়ারব্রাদার্সের ক্যাচ নেন তিনি। মইন খান অবসর নেওয়ার পর জাতীয় দলের নির্বাচক এবং কোচ হিসাবে কাজ করেছেন পরবর্তীতে।
মু্স্তাক আহমেদ তিন তিনটি উইকেট নিয়েছিলেন ফাইনাল ম্যাচে। অবসর নেওয়ার পর ২০০৮ সালে ইংল্যান্ডের বোলিং কোচ হন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিন কনসালট্যান্ট তিনি বর্তমানে।
আকিব জাভেদ নিল ফেয়ারব্রাদার্সের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি তুলে নিয়েছিলেন। নিল সেই সময় ৬২ রানে ব্যাট করেছিলেন। সেটাই ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। অবসর নেওয়ার পর পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সংযু্ক্ত আরব আমিরশাহির কোচ হন তিনি। লাহৌর ক্যালেন্ডার্সের বোলিং পরামর্শদাতাও তিনি।