পরামর্শ: কোচ গ্যারি স্টিডের সঙ্গে ব্যাটিং টেকনিক নিয়ে আলোচনায় মগ্ন নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক উইলিয়ামসন। রয়টার্স
সৌন্দর্যের নিরিখে মার্টিন ক্রো-র ব্যাটিংয়ের ধারেকাছে নিউজ়িল্যান্ডের কেউ আসবেন না। কিন্তু ক্রো স্বয়ং বেঁচে থাকলে নির্দ্বিধায় মেনে নিতেন, সে দেশের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান কেন উইলিয়ামসন। এমনটাই মনে করেন নিউজ়িল্যান্ডের প্রাক্তন উইকেটরক্ষক ইয়ান স্মিথ।
বার্ট সাটক্লিফ থেকে বিভান কংডন অথবা গ্লেন টার্নার, ক্রো-দের মনে রেখেও স্মিথ দাবি করছেন, উইলিয়ামসনের মতো নিউজ়িল্যান্ডের অন্য কেউই কখনও রিভার্স সুইংটা এতটা ভাল খেলতে পারতেন না।
বিশ্বকাপে টানা দু’বারের ফাইনালিস্ট নিউজ়িল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার স্মিথ বলেছেন, ‘‘সবাই কেনকে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে মেনে নিয়েছে। আমাদের দেশেও ক্রিকেটার হিসেবে ওর জায়গা অনেক উপরে। সম্ভবত কেন-ই আমাদের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান। তা ছাড়া ওর ব্যাটিং দক্ষতার সঙ্গে নেতৃত্বের ব্যাপারটা দেখলে তো কথাই নেই।’’
ওয়াসিম আক্রম একসময় বলেছিলেন যে, তাঁর রিভার্স সুইং মার্টিন ক্রো-র মতো কেউ খেলতে পারতেন না। কিন্তু স্মিথ মনে করেন, উইলিয়ামসন তাঁকেও ছাপিয়ে গিয়েছেন। ‘‘মার্টিন ক্রো আমার ভীষণ বন্ধু ছিল। ও আমাদের মধ্যে নেই। কিন্তু মার্টিন থাকলেও কেনকে একজন বিশেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মেনে নিত,’’ বলেছেন স্মিথ। ভারতের বিরুদ্ধে নিউজ়িল্যান্ড মাত্র ২৩৯ করলেও স্মিথ জানতেন, উইলিয়ামসনই নিউজ়িল্যান্ডকে দারুণ কিছু করতে উদ্বুদ্ধ করবেন। কিছুতেই তাঁরা ম্যাচটা বিরাট কোহালিদের ছেড়ে দিয়ে আসবেন না। স্মিথের কথায়, ‘‘জানতাম, ২৩৯ করেও নিউজ়িল্যান্ড লড়াই করবে। আসল ব্যাপারটা ছিল প্রথম পাঁচ থেকে দশ ওভারে আমাদের বোলারেরা কেমন বল করছে। রোহিত (শর্মা) আর বিরাটকে ফেরানোর পরেই ওই ম্যাচে আমাদের অর্ধেক কাজ হয়ে গিয়েছিল।’’
স্মিথের কথায়, ২৪ রানের মধ্যে যে ভাবে ম্যাট হেনরি আর ট্রেন্ট বোল্ট ভারতের চার জনকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, তা এক কথায় অবিশ্বাস্য। ‘‘ভারতের মতো দলের বিরুদ্ধে এই পর্যায়ের সাফল্য বিশ্বাস করা কঠিন। হেনরি আর বোল্টকে শুরুতেই যা করার করতে হত। আগে কখনও হেনরিকে কিন্তু এত ভাল বল করতে দেখিনি। আর ট্রেন্টের ওই বোলিং আমার কাছে খুবই প্রত্যাশিত।’’
স্মিথকে প্রশ্ন করা হয়, সেমিফাইনালে হেনরির বোলিংয়ের সঙ্গে কি রিচার্ড হ্যাডলির তুলনা করা যায়? তাঁর সাবধানী জবাব, ‘‘না না, এটা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। হ্যাডলির ধারাবাহিকতার ধারেকাছে আসতে ওর অনেক সময় লেগে যাবে। সে সব না ভেবে আমাদের বরং এক-একটা দিন ধরে কে কেমন খেলল, সেটা বিচার করাই ভাল।’’ সঙ্গে প্রাক্তন নিউজ়িল্যান্ডের প্রাক্তন উইকেটকিপার যোগ করেছেন, ‘‘এখনকার নিউজ়িল্যান্ড দলটার সব চেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ম্যাচ না ছাড়ার মানসিকতা। তা ছাড়া ওরা কোনও রকম বিতর্ক পছন্দ করে না। অকারণে দল ঝামেলায় পড়তে পারে এমন কিছুকে ডেকেও আনে না। উইলিয়ামসনদের একটাই লক্ষ্য। ভাল খেলা এবং আরও ভাল ক্রিকেট খেলা।’’ স্মিথের আরও মন্তব্য, ‘‘সবাই স্বীকার করবে যে, হালফিলের ক্রিকেটে এত ভাল ক্রিকেটার কোনও দলে একসঙ্গে নেই। আর কেন ওদের মধ্যে নিঃসন্দেহে সেরা। যা নিয়ে কোনও কথাই হতে পারে না।’’
স্মিথ মনে করিয়ে দিয়েছেন, হ্যাডলি এই মুহূর্তে ক্যানসারের সঙ্গে কঠিনতম লড়াই লড়ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘লর্ডসে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে আমরা বিশ্বকাপটা জিতলে হ্যাডলিই সব চেয়ে বেশি খুশি হবে। ওঁর জন্য নিউজ়িল্যান্ড সেরা ক্রিকেটই উপহার দেবে।’’